somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নারী ও শাড়ি

২২ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শাড়ীর ভাজে বাঙালী নারীর লুকিয়ে থাকে দুঃখ কথা,
ষড়ঝতুর শাড়ীর আঁচলে স্বপ্ন সুখের ছবি আকা।


শাড়ি বাঙালি নারীর ঐতিহ্যবাহী পোষাক।
এই পোষাকের রয়েছে খুবই সৌন্দর্য। যেসব মেয়েরা সব সময় সেলোয়ার কামিজ পড়ে, হঠাত তারা শাড়ি পড়লে তাদের অনেক সুন্দর লাগে। বাঙালি নারীর শাড়ি পরার ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। পৃথিবীর যে ক’টি জাতিগোষ্ঠী তাদের হাজার বছরের যেসব প্রাচীন পোশাকের ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছে, বাঙালি এবং তার শাড়ি সেগুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে সেলাই করা কাপড় পরার রেওয়াজ আদিম কালে ছিল না। এই সেলাইবিহিন অখন্ড বস্ত্র পুরুষের ক্ষেত্রে ‘ধুতি’ এবং মেয়েদের বেলায় ‘শাড়ি’ নামে অভিহিত হয়।

কুচি পদ্ধতিকে প্রায় আজকের রূপে প্রথম চালু করেন জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের মেয়েরা। বাংলাদেশের তৈরি শাড়ি জামদানি, কাতান, রাজশাহী সিল্ক, মণিপুরী শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, বালুচরি শাড়ি, পাবনার শাড়ি, ঢাকাই শাড়ি ইত্যাদি শুধু দেশে নয়, বিদেশেও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিয়ে, বৌভাত, মেহেদি অনুষ্ঠান, গায়ে হলুদসহ বিশেষ বিশেষ দিনের অনুষ্ঠানে শাড়িই অন্যতম পোশাক। কী এক রহস্যে পুরো শরীরে শাড়ি জড়িয়ে থাকে! তবে বাঙ্গালী মেয়েরা শাড়ি পড়লে অস্বস্তিতে থাকে, এই বুঝি তার পেট দেখা যাচ্ছে। শাড়ির ফাঁক-ফোকর দিয়ে ব্লাউজ দেখা যাচ্ছে। পেট আর ব্লাউজ ডাকতে গিয়ে তারা শাড়ি পড়ার সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে। এত বেশি সেপটিপিন ব্যবহার করে যে, শাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।



১৮৪০ সালে বস্ত্রশিল্প যখন ধ্বংসের মুখে তখনও ঢাকায় ৩৬ রকমের কাপড় বোনা হতো। উনিশ শতকের চল্লিশ দশক থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কে বলা হয়ে থাকে ‘ভিক্টোরিয়ান যুগ’। এ যুগে ফ্যাশনের মূল কথাই ছিল কাপড়ে সারা শরীর ঢাকা থাকতে হবে। আমাদের দেশে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত সব পরিবারের মহিলারা শাড়ি পরেন। ভারতবর্ষীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের মাঝে সেইসময়ে শাড়ীর প্রচলন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। সিন্ধু সভ্যতার ভাস্কর্যে পুরোহিতদের শাড়ীকেই ধুতির মতো পরিহিত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং মনে করা হয় ধুতিই শাড়ী প্রচলনের ভিত্তি।

মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যে নতুনকে ধারণ করার অদ্ভুত একটা ইচ্ছাশক্তি কাজ করে। বাঙালি নারীদের শাড়ি পড়ার চল কমে যাচ্ছে এই ভাবনায়। শাড়ী হচ্ছে একমাত্র নারী পোশাক যেটাকে অগণিত বিচিত্র উপায়ে পরিধান করা হয়। ভারতীয় চলচ্চিত্রে আমরা শিল্পীদের নানা কৌশল অবলম্বন করে শাড়ী পরিধান করতে দেখি। আধুনিক কালে শাড়ী পরিধানের ক্ষেত্রে একটু খোলা মেলা পন্থা অবলম্বন করা হয়। বিশেষ করে পেট এবং নাভি একটু দৃশ্যমান করে রাখা, পিঠের অংশ খোলা রাখা, খাটো হাতা এবং পেছনে ফিতাযুক্ত ব্লাউস পরিধান করা ইত্যাদি। শাড়ীকে বিভিন্ন পরিবেশ এবং অনুষ্ঠানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে খাপ খাইয়ে নেয়া যায়। তাছাড়া আমার নিজের দৃষ্টিতে বাঙালি এবং ভারতীয় নারীদের শাড়ীতেই বেশ অসাধারণ লাগে!



ধর্ম গ্রন্থে শাড়ি বলে কোন শব্দ নেই।
বাংলাভাষার প্রাচীন গ্রন্হ চর্যাপদেও শাড়ি শব্দটি নেই। ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্লাউজের ব্যবহার শুরু হয় এবং আধুনিক জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ভারতে ব্লাউজের প্রথা চালু করেন। সেই সাথে শাড়ি পরার আরেকটি অনুষঙ্গ পেটিকোটের প্রচলন শুরু হয় মুসলমানদের আগমনের সাথে।
আমাদের দেশে কিশোরী মেয়েদের শাড়ি পড়া অনেক বড় ব্যাপার। আজও একজন বাঙ্গালী নারী নতুন শাড়ি পড়লে স্বামীকে কদমবুসি করে। বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে বাঙ্গালী মেয়েরা শাড়ি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ে। তবে অনেক মেয়ে শাড়ি পড়ে হাঁটতে পারে না। একসময় গ্রামের মা-খালা, চাচীরা নতুন শাড়ি পড়ার আগে শাড়ির চারমাথা একসাথে করে আগুনে একটু পুড়ে নিতেন। আজও যাকাত হিসেবে শাড়ি দেওয়া হয়।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:৫৬
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×