somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

দু'টি ছোট গল্প বলতে চাই

১৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। গ্রামের নাম রসুলপুর।
একেবারে সুন্দরবনের কাছে। অন্যসব গ্রামের মতোই একটি সহজ সরল সুন্দর গ্রাম। এই রসুলপুর গ্রামই আমাকে শিখিয়েছে কি করে পৃথিবীকে ভালোবাসতে হয়। মানুষকে ভালোবাসতে হয়। এই গ্রামের লোকজন দিন-রাত ঝগড়া করে, দলাদলি করে, হাঙ্গামা করে, কুটকচালি করে, একটা ভাঙ্গা স্কুল ঘর আছে- সেই স্কুলের প্রতি কারো নজর নেই। সন্ধ্যায় গ্রামের সমস্ত মাতালেরা এখানে বসে বাংলা মদ খায়। বাঈজী নাচায়।

এই গ্রামে এক কৃষকের সাথে আমি জমিতে চাষ করেছি। বর্ষাকালে বিলে মাছ ধরেছি। সাইক্লোন বিন্ডিং (যে বিল্ডং এ ঝড় তুফানের সময় গ্রামের মানুষ আশ্রয় নেয়) এর চারপাশে নানান রকম গাছ লাগিয়েছি। রসুলপুর গ্রামের প্রতিটা গাছ, পুকুর, খাল-বিল, গরু আমার বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। তাদের সাথে আমি কথা বললাম। টানা ছয় মাস ছিলাম রসুলপুর। বেশ আনন্দময় সময় কেটেছে। গ্রামের মানুষ আমাকে আপন করে নিয়েছিল। অথচ কত বছর হয়ে গেল রসুলপুর যাই না!

আধুনিক যন্ত্রপাতি আমাকে মজা দেয় কিন্তু আনন্দ দিতে পারে না। ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এগুলো ঠিক আমাকে নির্মল আনন্দ দিতে পারে না। গাছপালা, সবুজ ধানক্ষেত, নদী এসব আমাকে এক আকাশ নির্মল আনন্দ দেয়। ভোরবেলা একজন কৃষক জমিতে নেমে পড়েন। সারাদিন চাষবাস করেন। এমন কি সে দুপুরে খেতেও আসেন না। তার ছেলে, মেয়ে অথবা স্ত্রী তার জন্য বোলে করে গামছা দিয়ে পেচিয়ে খাবার নিয়ে যায়। খুবই সাধারন খাবার। ভাত, আলু ভর্তা আর লাল শাক ভাজি। সাথে দু'টা কাঁচা মরিচ। কিশোর ছেলেরা নদীতে লাফালাফি করে গোছল করে। নারীরা মাটির চুলায় রান্না করে। গ্রাম আমাকে টানে। খুব শ্রীঘর গ্রামে যাবো।


২। যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যাই, সুন্দর একটা গাড়ি দেখলেই আমি থেমে যাই। মুগ্ধ হয়ে গাড়িটার দিকে তাকিয়ে থাকি। চারপাশ থেকে গাড়িটা দেখি। আশে পাশে কেউ না থাকলে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখি গাড়িটা। বুকের মধ্যে যেন কেমন করে? মনে মনে ভাবি এরকম একটা গাড়ি কি আমি কোনো দিনও কিনতে পারবো? মনে হয় না এ জীবনে সম্ভব হবে। গাড়ি কিনতে না পারার কষ্ট বুকের মধ্যে হাহাকার করে ওঠে। নিজের একটা গাড়ি থাকলে দারুন হতো! হুটহাট করে নানান জায়গায় চলে যাওয়া যেত।

রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করার সময় চোখে পড়ে কিছু কিছু গাড়ি এত সুন্দর যে দেখে মাথা নষ্ট হয়ে যায়। শুধু নির্বোধের মতোণ ভাবি আমার যদি এরকম একটা গাড়ি থাকতো! এই শহরে দিনের পর দিন ক্লান্ত বিধ্বস্ত হয়ে হাঁটি, সারা শরীর থাকে ঘামে ভেজা। অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারি না। তখন আমার সামনে দিয়ে আমার'ই বয়সী একটা ছেলে গাড়িতে করে যাচ্ছে- তখন আমার খুব কষ্ট হয়, রাগ হয়। ইচ্ছা করে ছেলেটাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বলি, আমি কষ্ট করে হেটে যাচ্ছি আর তুমি নবাবজাদার মতো আরামে যাচ্ছো। কেন? এখন তুমি হেটে যাও। আমি গাড়িতে এসি ছেড়ে, রবীন্দ্র সংগীত শুনতে শুনতে আরামে বাড়ি ফিরবো।

আমার ভাবতে ভালো লাগে, একদিন আমার একটা গাড়ি হবে। সম্পূর্ন নিজের গাড়ি। ড্রাইভার গাড়ি চালাবে। সুরভি আর আমি পেছনে বসে থাকবো। ড্রাইভার বলবে, স্যার কোথায় যাবেন? আমি বলব, মাওয়া চলে যাও। নদীর পাড়ে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবো। নদীর পাড়ের বাতাস গায়ে মাখবো। হু হু করে গাড়ি চলতে থাকবে। হঠাত ড্রাইভারকে বলব, একটা চায়ের দোকানে গাড়িটা থামাও। চা খাবো। চা শেষ করে আবার গাড়িতে উঠবো। সুরভি আমার কাঁধে মাথা রাখবে। আমি ড্রাইভারকে বলল, একটা গান ছাড়ো। ড্রাইভার গান ছেড়ে দিবে।

ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান--.
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান--.
আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ॥
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×