somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

পাকিস্থানকে আমরা কতদিন ঘৃণা করবো?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়।
তার পর থেকেই ৭১ পর্যন্ত পাকিস্তান আমাদের অনেক অত্যাচার করেছে। পৃথিবীর মধ্যে এত এত দেশ। কিন্তু একমাত্র পাকিস্তান আমাদের সীমাহীন অত্যাচার করেছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে বহু বছর হয়ে গেছে। কিন্তু আজও পাকিস্তান আমাদের কাছে ক্ষমা চায়নি। যদিও আন্তজার্তিক চাপে ১৯৭৪ সালে আমাদের স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উচিত ছিল জাতিসংঘে তার ভাষনে আমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া। ক্ষমা চাইলে তারা বিশ্ব দরবারে মানুষের সহানুভূতি পেত। আমরাও তাদের সহযোগিতা করতে পারতাম। আমরা কতদিন পাকিস্তানকে ঘৃণা করবো? পাকিস্তানের সমস্ত নাগরিককেও ঘৃণা করবো? যাদের জন্ম ৭১ এর পরে তাদেরও ঘৃণা করবো? যারা পাকিস্তানের নতুন প্রজন্ম ৫২ বা ৭১ দেখেনি তাদেরও ঘৃণা করবো?

পাকিস্তানের করাচি শহরে ফুটপাতে যে ছেলেটি ফুল বিক্রি করে তাকেও ঘৃণা করবো? অথবা পাকিস্তানের সমস্ত কৃষকদের ঘৃণা করবো? খেটে খাওয়া মানুষদের ঘৃণা করবো? ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ঘৃণা করবো? সিনেমার নায়ক নায়িকা বা গায়ক গায়িকাদের ঘৃণা করবো? যে কিশোর স্কুলে শেষে মাঠে গিয়ে বিকেলে ফুটবল খেলে বন্ধুদের সাথে তাদের ঘৃণা করবো? যে বাবা সারাদিন কারখানায় কাজ করে দিনশেষে পরিবারের জন্য বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরে সেই বাবাকে ঘৃণা করবো? ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমৃত্যু বা কেয়ামত পর্যন্ত ঘৃণা করে যাবো? ঘৃণা করে আমাদের লাভটা কি হবে? যে সমস্ত হারামীরা আমাদের হত্যা করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, ধর্ষন করেছে, লুট করেছে, ধনসম্পদ কেড়ে নিয়েছে- তারা তো কেউ বেঁচে নেই। তাদের প্রতি ঘৃণা দেখানোর একমাত্র উপায় কি নতুন প্রজন্মকে ঘৃণা দেখানো? ঘৃণা অব্যহাত রাখা?


ছবিঃ ঢাকা'য় বিহারী ক্যাম্প।

পাকিস্তান আমাদের চেয়ে অনেক বড় দেশ। জনসংখ্যাও আমাদের থেকে অনেক বেশি। দরিদ্র একটি দেশ। ওদের দেশে চোর আছে, ডাকাত আছে, দূর্নীতিবাজ আছে। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশের একটি হাইকমিশন রয়েছে, অপরদিকে ঢাকায় পাকিস্তানের একটি হাইকমিশন রয়েছে। আপাতত ভিসা আদান প্রদান বন্ধ আছে। পাকিস্তানের সাথে ৩৪ বার ক্রিকেট খেলা হয়েছে আআমদের। এর মধ্যে আমরা তিনবার জয়ী হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম সম্পর্ক তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে। ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলন সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান সফরে যান। সেই সময় দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ মুজিব ও জুলফিকার ভুট্টোর মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ২৭ জুন জুলফিকার আলী ভূট্টো তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন।

পাকিস্তানীরা কি আমাদের ঘৃণা করে?
আমার শিক্ষক প্রফেসর আলতাফ বলেছিলেন, পাকিস্তানী সুধী সমাজে বাঙ্গালীদের গাদ্দার হিসেবে দেখা হয়। ৮০'র দশকে যেসব শ্রমজীবি মানুষ যারা পাকিস্তান গেছেন, তাঁদের প্রায় বেশির ভাগই আর ফিরতে চান না। বাংলাদেশের যে দরিদ্র গ্রাম থেকে তাঁরা গেছেন এ তুলনায় করাচির ঝকঝকে শহরে জীবন সংগ্রাম চালানো অধিকতর সহজ। বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের অনেক মিল আছে। খাবার, পোশাক, বিয়ের অনুষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বিয়েতে যৌতুক দেওয়া-নেওয়া ইত্যাদি। সেই ৭১ সালের আগে ও পরে অনেক বাঙ্গালী নানান কারনে পাকিস্তানেই রয়ে গিয়েছিল। তাদের সংখ্যা এখন প্রায় ত্রিশ লাখ হবে। এদের বেশির ভাগই থাকে করাচির বস্তিতে। বাংলাদেশী হোক আর পাকিস্তানীই হোক, সবারই অবস্থা কমবেশি একই রকম। পাকিস্তান কি আমাদের চেয়ে উন্নত?


ছবিঃ পাকিস্তানে থাকা বাঙ্গালী।

বাংলাদেশে কমপক্ষে পাঁচ লাখ বিহারী আছে।
বিহারী নামে পরিচিত এইসব উর্দুভাষী লোকজনের বেশিরভাগই কসাইখানায়, সেলুনে, খাবারের দোকানে, কিংবা দিনজুরের কাজ করে। কেউ রিকশা বা অটোরিকশা চালান। ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুরসহ চট্গ্রামের ফিরোজশাহ কলোনী, শেরশাহ কলোনী, অক্সিজেন- বায়েজীদ এলাকা, আঁতুড়ার ডিপোসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় তাদের বাস। বেশিরভাগ বিহারিই এখন পাকিস্তানে যেতে নারাজ। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম এদেশে থেকেই ভালো কিছু করতে চায়।

পাকিস্তান যে অন্যায় করেছে, তা আমরা বাঙ্গালীরা কোনো দিনও ভুলতে পারবো না। আমাদের পক্ষে ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:১৬
২৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×