somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ধরা যাক দুই একটা ইদুর এবার!

১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি মাঝে মাঝে আমার শ্বশুর বাড়ি যাই।
যেতে হয়। আমার শ্বাশুড়ি বেঁচে নেই। শ্বশুরের সাথে নানান বিষয়ে গল্প হয়। গল্প আমার শ্বশুর একাই করেন। আমি চুপ করে শুধু শুনে যাই। আমি খুব ভালো শ্রোতা। শ্বশুর মশাই নানান বিষয়ে গল্প বলে যান। সবই তার অতীত দিনের গল্প। আমি মুগ্ধ হয়ে গল্প শুনতে আমার খুব ভালো লাগে। শ্বশুর মশাই এমনভাবে গল্প বলেন, আরো শুনতে ইচ্ছে করে তার গল্প। এমনকি তার কাছে একই গল্প আমি বেশ কয়েকবার করে শুনেছি। ভালো লাগে আমার। যাই হোক, তার গল্প শুনে শুনে একদিন আমার মনে হলো- আরে, আমারও তো অতীত দিনের নানান রকম মজার মজার গল্প আছে। সেই গল্প গুলো তো আমি সামুতে লিখতে পারি।

বহু বছর আগের কথা।
যাবো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি পরীক্ষা দিতে। তখন অনেক বড় হয়ে গেছি। বাবা মাকে সাথে নিবো না। কয়েকজন বন্ধু মিলেই যাবো। বাপ মা সাথে গেলে তো আর দুষ্টমি ফাজলামি করা যাবে না। আমরা সব বন্ধুরা মিলে যাবো মজা করতে করতে। আমার অন্য বন্ধুরা বাসের টিকিট আগেই কেটে ফেলেছে। আমি বাসের টিকিট আগে কেটে রাখি নাই। সাথে আমার দুই বন্ধুও আছে। আমার ইচ্ছা বাসে উঠার আগে টিকিট কাটলেই হবে। এত আগে কেটে লাভ কি! টিকিট তো সব সময়ই পাওয়া যাবে। এটা তো ঈদের মৌসুম না। যে টিকিট পাওয়া যাবে না। টেনশনের কিছু নাই। বেশ ফুরফুরা মেজাজে আছি। আগে কখনও রাজশাহী যাই নাই। পরীক্ষাটা দিয়ে সারা রাজশাহী ঘুরে বেড়াবো তিন বন্ধু মিলে। খুব মজা হবে।

চুয়েটেও পরীক্ষা দিবো। খুলনাতেও পরীক্ষা দিবো।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা দিবো। আহ মজাই মজা। খুব ঘুরে বেড়ানো হবে। আসলে আমাদের সময় বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পরীক্ষা দেওয়া একটা ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছিলো। যদি চান্স পেয়ে যাই! চান্স পাওয়ার জন্য যে পড়তে হবে সেদিকে আমাদের কোনো নজর নেই। তাই শেষমেষ আমাদের মতো নির্বোধদের ভর্তি হতো হতো- কবি নজরুল, জগন্নাথ অথবা হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে কপাল লাগে। সেই কপাল বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীদের হয় না। তারা সারা জীবন ধরে শুধু আফসোস করে যায়। যাই হোক, সন্ধ্যায় রাজশাহীর উদ্দ্যেশে বাসা থেকে বের হলাম। কল্যানপুর বাস স্ট্যান্ড গেলাম। হায় হায়--- বাসের টিকিট নাই। কোনো বাসের টিকিট নাই। সব টিকিট নাকি এক সপ্তাহ আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। আমার তো মাথাই নষ্ট। পোড়া কপাল আমার!

মন খারাপ করে বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি।
আমার সাথে আমার দুই বন্ধু। যারা আমার কারনে বাসের টিকিট আগে থেকে কেটে রাখে নি। ভাগ্য ভালো তখন একলোক ফেরেশতার আমাদের কাছে এসে বলল, রাজশাহী যাবেন? আমরা বললাম, জ্বী জ্বী। আসুন, আমার সাথে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। খুশীতে লোকটাকে জড়িয়ে ধরলাম আমরা তিনজন। বাসের টিকিটের দাম ডবল নিলো। তাতেও আমাদের দুঃখ নেই। যেতে তো পারছি এটাই বেশি। লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম বাসটা কেমন? ভালো তো। লোকটা হেসে বলল, দারুন বাস, হানিফ, শ্যামলী বা গ্রীনলাইনের চেয়ে ভালো বাস। বাসে বসলে মনে হবে প্লেনে বসে আছেন। একঘুমে রাত পার। এত টাকা কি শুধু শুধু নিলাম! রাত বারোটা বেজে গেলো বাস আর আসে না! জিজ্ঞেস করলেই বলে আসবে আসবে। এখুনি আসবে।

রাত একটায় বাস এলো।
বাস দেখে মেজাজটা প্রচন্ড খারাপ হলো। লক্কর ঝক্কর মার্কা বাস। সিটে বসেও আরাম নাই। ডান দিকে কাত হয়ে আছে। আমি হেলপারকে বললাম, এটা কেমন বাস। এত টাকা ভাড়া দিয়ে এই বাস! হেলপার কিছু বলল না। গাবতলী পার হওয়ার পর আমি বাসের সুপারভাইজারকে বললাম, ভাই এত টাকা নিলেন, বললেন, হানিফ, শ্যামলীর চেয়ে ভালো বাস। আর নিচ্ছেন এই লক্কর ঝক্কর মার্কা বাসে। সুপারভাইজার আমার উপর ক্ষেপে গেলো। বলল, আর একটা কথা বললে বাস থেকে নামিয়ে দিবো। চুপ করে বসে থাক। বাসের সব যাত্রী তো চুপ করে আছে। একটু পর দেখি বাস থামিয়ে লোক নিচ্ছে। অথচ কোনো সিট খালি নাই। আমি বললাম, সিট তো খালি নাই। হেলপার বলল, আপনার কোলে করে যাবে। সুপারভাইজার রেগে মেগে আমাকে বলল, চুপ। আর একটা কথা না।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৫৯
১১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×