somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

চাকরি কাহন

২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশে প্রাইভেট চাকরী খোঁজার জন্য বেস্ট সাইট বিডিজবস সরকারী চাকরী খোঁজার জন্য ভালো কোন সাইট নেই। তবে এই ফেইসবুক গ্রুপটা বেস্ট সরকারী চাকরি। চাকরির খবর, নোটিশ, পরীক্ষার তারিখ, ফলাফল সব আপডেট এই ফেইসবুক গ্রুপে পাওয়া যায়। একজন খাঁটি বাঙালি মানেই মধ্যবিত্ত চাকুরে। ভাল চাকরি চাওয়া বাঙালি আসলে এক ধরনের ক্ষুদ্র মানসিকতার বাহক একটি গোষ্ঠী যারা দিন দিন কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। একজন টিপ সই করা ব্যাক্তি ঝাড়ুদার এর কাজ করতে পারে, আবার চা বিস্কুট এর দোকান ও করতে পারে। তবে বুদ্ধি থাকলে দুটো থেকেই উন্নতি সম্ভব নিজেকে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে। ব্যবসা করতে অনেক বুদ্ধি লাগে। আমার এত বুদ্ধি নাই। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আমি ভাই অলস মানুষ। চিন্তামুক্ত থাকতে পছন্দ করি। এজন্য চাকরি আমার পছন্দ। অন্তত, মাস শেষে ব্যাংক এ্যাকাউন্টে একটা নির্দিষ্ট টাকা আসবে এই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যায়।

সরকারী চাকরিতে সমস্যা আছে।
কোন রাজনৈতিক তকমা আপনার কপালে লেগে গেলে বাজে পােস্টিং, ওএসডি এগুলাে নিত্যই ঘটবে। আসলে সরকারি চাকরির বিধানেই আছে একজন সরকারি কর্মচারি ক্ষমতাসীন সরকারের কোন পলিসি বা সিদ্ধান্তে বিরােধিতা করবে না। বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বপালন করার সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সুবিধাবাদী নেতাদের সামলাতে গিয়ে সরকারী চাকরিজীবি অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। রাজনীতি, কাদা ছোঁড়াছুড়ি, দম্ভের লড়াই, ক্ষমতা প্রদর্শন, মিথ্যাচার, মিথ্যা স্তোক, গ্রুপিং সবই কর্পোরেট কালচারের অঙ্গ। অনেক সময় চাকরি পাওয়ার চেয়ে, চাকরি পেয়ে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর।
হায় রে চাকরি! সে কি জানে তার কি লীলা! সারা মাস খাটনির বদলে কটা টাকা মাত্র। ঘুষ দিয়ে চাকরি হয়। ঘুষের লেনদেন চলে মূলত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর চাকুরী গুলোর ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রেও সবাই যে টাকা দিয়েই চাকুরী পায় তা নয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ভাইভার পরে সুপারিশ করতে যেয়েও মধ্যস্বত্বভোগীরা একটা বড় অংকের টাকা নিয়ে থাকে।

বাংলাদেশের চাকরি করে সবচেয়ে বেশি বেতন পান ব্যাংকের এমডি ও সিইও’রা। যাই হোক, বেসরকারি চাকরি হুট করে চলে যেতে পারে। হঠাৎ করেই চাকরি চলে গেলে অবশ্যই চিন্তার কারণ। বিশেষ করে যাদের সংসার আছে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়। তবু হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন অনেক সময় ব্যর্থতাই হয়তো আপনাকে পৌঁছে দেবে সাফল্যের চূড়ায়। চাকরি চলে গেলে হতাশা কাটানোর পাশাপাশি নিজেকে নতুন করে প্রস্তুত করতে কিছু কাজ আপনাকে করতে হবে।
সরকারি চাকরি করলে বেশ ভাল বেতন পাওয়া যায়। দিন দিন সরকারি চাকরির বেতন স্কেল বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি চাকরির বয়স সীমা শেষ হলে পেশসন পাওয়া যায়, যার ফলে বুড়ো বয়সে সেই টাকা ‍দিয়ে অনেক কাজ করা যায়। সরকারি কোয়াটার পাওয়া যায়। বিভিন্ন উৎসব বোনাস পাওয়া যায়। সমাজের চোখে আলাদা একটা সম্মান পাওয়া যায়। নিভরযোগ্য একটি কমক্ষেত্র। সকাল থেকে বিকাল পযন্ত কাজ, যার ফলে বাকি সময় অন্যে কাজে ব্যয় করা যায়।

সরকারি চাকরির সিকিউরিটি আছে, হুটহাট চলে যাবে না।
অন্যদিকে বেসরকারি চাকরি যেকোন সময় এমনকি বিনা কারণেই চলে যেতে পারে। সামাজিক মূল্যায়ন চিন্তা করলে, বেসরকারি চাকুরেদের যতই সামনা সামনি মূল্যায়ন করা হোক, পিছনে গেলেই বলবে 'ও- ওতো বেসরকারি কি একটায় চাকরি করছে', অন্যদিকে সরকারি চাকুরেদের যোগ্যতা কেউ দেখে না, সবসময় মূল্যায়ন করা হয়, যা আজকাল বিয়ের বাজারে গেলেই বুঝা যায়। অনেকে টাকার মাধ্যমে সরকারি চাকরি পেতে চেষ্টা করে। কিন্তুু বাস্তবিক পক্ষে আমাদের উচিৎ অযথা সময় নষ্ট না করে নিজের মেধা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে সরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করা এবং লেগে থাকা। কথা সত্য- সরকারী চাকরি নিশ্চিত নির্ভরতার চাকরি। চরম পর্যায়ের বিপর্যয়ে নিজেকে না জড়ালে সরকারি চাকরি যাবে না। প্রাইভেট সেক্টরে চাকরির জন্য- প্রথমত যোগ্যতা আর দ্বিতীয়ত ক্ষমতাবান মামা চাচা এ দুটোর একটি লাগে জব পেতে।

মেয়েদের জন্য সবথেকে সম্মানজনক চাকুরি হচ্ছে শিক্ষকতা।
ভালো চাকুরি পাওয়া নির্ভর করে আপনার স্কীলের উপর। ৩০,০০০ টাকা বেতনের চাকরি পাওয়া বাংলাদেশে সহজ না, যদি না আপনি যোগ্য হন। আর যদি আপনি যোগ্য হন তাহলে ৬০,০০০ টাকার চাকরি পাওয়াও সহজ। বিশ্বর বিভিন্ন দেশ এখন ফ্রীল্যান্স কাজ করিয়ে নিতে বেশি আগ্রহী তাই ফ্রীলান্সারদের মূল্য আগের থেকে বেশি ও কাজও অনেক বেশি। ভালো চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন কিন্তু ভালো ফ্রীলান্সার হবার সুযোগ অনেক। এই সকল কারণে এখন অনেকে চাকরির চিন্তা বাদ দিয়ে ফ্রীল্যানসিং করছে। বাংলা ভাষায় চাকুরী মানেই অন্যের অধীনে কাজ করা- কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। উদ্যোগী ব্যাক্তি জীবনকে নিজের মত করে কাজে লাগাতে পারে, যেখানে প্রায় আকাশ হলো তার সীমা।

বাংলাদেশে মোট চার পদে পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়।
১। কনস্টেবল, ২। সাব-ইন্সপেক্টর, ৩। সার্জেন্ট (ট্রাফিক), ৪। সহকারী পুলিশ সুপার। বাংলাদেশে পুলিশের চাকরি অনেকটাই আরামদায়ক। অন্য যেকোনো দেশের থেকে এদেশে পুলিশে চাকরি করে শান্তি পাওয়া যায়। সততার সাথে, লোক না ঠকিয়ে, আইন না ভেঙে করা যে কোনও চাকুরিই সবচাইতে গর্বের চাকুরি। একজন সৎ, কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান ঝাড়ুদারকে আমি সেনা প্রধান বা পুলিশ প্রধানের চাইতে এক বিন্দু কম সম্মান দিতে রাজি নই। বর্তমানে ফার্মেসি এবং আইটি নিয়ে পড়াশোনা করলে তুলনামূলকভাবে সহজে চাকরি পাওয়া যেতে পারে। বর্তমান সময়ে চাকরির পাশাপাশি বিকল্প কিছু করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বাংলাদেশে গণিতে ফার্স্ট ক্ল্যাস পাওয়া মেয়েটিও ব্যাংকে চাকরি করে, বাংলায় সেকেন্ড ক্ল্যাস পাওয়া মেয়েটিও ব্যাংকে চাকরি করে, আবার এমবিএ করা ছেলেটিও একই চাকরি করে বা তার চেয়ে খারাপ চাকরি করে।

গুগলে চাকরি পাওয়া অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো।
পৃথিবীর সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ারের একটি হচ্ছে গুগলে কাজ করার সুযোগ। প্রতিবছর সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ২৫ লাখ আবেদন আসে গুগলে, সেখান থেকে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার পর চাকরি পান মাত্র ৪ হাজার আবেদনকারী! Resume যতো বেশি ভারী হবে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ততোই বেড়ে যাবে। গুগলে প্রতিদিন ৩০০০ আবেদন আসে, তাদের সবাইকে ইন্টারভিউতে ডাকা সম্ভব নয়। তাই ছাত্রজীবনে খেলাধুলা, আবৃত্তি, বিতর্ক, ইন্টার্নশিপ, লেখালেখি, অভিনয়, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ইত্যাদিতে যতো বেশি সম্পৃক্ত থাকবেন চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ততোই বেড়ে যাবে। চাকরির বাজার অনেক প্রতিযোগীতাপূর্ণ, এখানে কারো 'সহজে' চাকরি হয় না।

জীবন মানেই কি পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসা। তারপর বিয়ে। বিয়ের পর সন্তান উৎপাদন? আপনি মারা গেলে তো সেই সাড়ে তিন হাত মাটি, সবার জন্য্ একই, সেই মাটিটুকু গ্রামের, না বনানীর ভিআইপি জোনে, আপনার তাতে কি? আপনার ব্যাংকে ৩০ কোটি জমা থাকলেই বা কি? মৃত্যুর সময় তো সবই পড়ে থাকবে এই পৃথিবীতে। আপনি তো একটা আনা-কড়িও সাথে নিতে পারবেন না। তার চেয়ে কিছু মানুষকে একটু আনন্দ দিয়ে যান, একটা বাচ্চাকে সৎ শিক্ষা দিয়ে যান, ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরনা দিয়ে যান। পৃথিবীর জন্য কিছু করুন। মানুষের জন্য কিছু করুন। তাহলে মৃত্যুর পরও আপনি বেঁচে থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৮
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×