somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ভূতের বাড়ি

২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ কখনই ভুতে বিশ্বাসী হয় না।
তাই ভুতের অস্তিত্ব অনুসন্ধানেও তারা আগ্রহী নয়, এই যেমন আমি। ভুতে আমার একদম বিশ্বাস নেই, মানে ভুতকে আমি গ্রাহ্যই করি না, মানে যেখানে শুনবো মানুষ ভুতে ভয় পেয়েছে, সে পথেই আমি আর যাবো না। মানে ভুতকে অগ্রাহ্য করা আর কি।

আমাদের বাড়ির খুব কাছেই দুটো বাড়ি আছে।
একটা পূর্বদিকে আর একটা উত্তর দিকে। এই বাড়ি দুটো ভুতুড়ে বাড়ি বলে ব্যপক পরিচিত। আমাদের বাড়িটা মেন রোডের ওপরেই বলা চলে। এটা ঢাকার মাঝামাঝি এলাকা। মতিঝিল থেকে খুব কাছে। আমাদের বাড়ি থেকে যদি গিলগাও বাজার এলাকায় যেতে হয়, ইউটার্ন পথ ধরে খানিকটা হাঁটতে হয়, কিন্তু যদি আমি ভেতরের পথ ধরে যাই রাস্তা প্রায় অর্ধেকের কম হয়। এই কম রাস্তা ছেড়ে আমি বেশির ভাগ সময় বড় রাস্তা ধরে বেশি হেঁটে বাজারের দিকে যাই। ভেতরের যে রাস্তাটা আছে সেখান দিয়ে যেতে গেলে একটা চিকন গলি মতো পড়ে, গলিটা মোটামুটি চল্লিশ ফুট লম্বা আর তিন ফুট চওড়া, এর ডান দিকে টানা উঁচু পাঁচিল, একটা কারখানা ছিল। এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে বহুদিন যাবত পড়ে আছে। আর বাঁ দিকেও পুরোটা পাঁচিল একটা প্রায় দেড় শ' বছরের পুরোনো বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল। ভেতরে খানিকটা বাগান মতো ছিল, এখন আগাছার জঙ্গলে ভরা।

সমস্যা হচ্ছে এই পুরান বাড়িটাকে নিয়ে।
এই গলিটার মধ্যে অনেকেই ভয় পেয়েছে। দিনের বেলায় তবু মাঝেমধ্যে লোক চলে কিন্তু রাতে! কেউ এ পথ মাড়ায় না। জায়গাটা একটু নির্জন বলে দিনের বেলায় দু'চার জন নেশাখোর এদিকটায় আনাগোনা করে, এরা দরিদ্র গোছের লোক। নেশাখোরদের আমার তেমন ভয় নেই। কারণ ওরা আমাকে চেনে, ওদের যদি কখনও ওখানে দেখি আমি ওই গলি ধরে তাড়াতাড়ি চলে যাই। ওরা আমার পথ ছেড়ে সরে দাঁড়ায়।

শোনা যায়, ভরদুপুরেও একা এই গলি দিয়ে যেতে গিয়ে কয়েকজন বিপদে পড়েছে।
গলির মাঝ বরাবর জায়গায় কে যেন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। গলির দিকটা হল পুরান বাড়িটার পিছন দিক, সামনের অংশে এখন বাড়ির এক সরিক পরিবার নিয়ে থাকে, যাতে বাড়িটা হাতছাড়া না হয়ে যায়। বহুদিন পুরোটাই খালি পড়ে ছিল। যারা বর্তমানে আছে তারা বলে আমরা পিছনের অংশে বিশেষ যাই না, আর আমাদের যখন কোন ক্ষতি হচ্ছে না তখন থাকতে অসুবিধা কোথায়। ওরাও স্বীকার করে কিছু গোলমাল আছে। একের পর এক রিয়েল এস্টেট কোম্পানী ঠিক করেছে, বাড়িটা ভেঙ্গে নতুন করে তৈরী করবার জন্য, কিন্তু প্রত্যেকেই কাজ শুরু করার কদিন বাদেই পালিয়ে গেছে।

একবার একটা লেবার হঠাৎ মরেই গেল।
কোনো ভাবে ভয় পেয়েছিল হয়তো। শহরের বুকে আজও ঐ ভাবেই বাড়িটা পড়ে আছে। শুনেছিলাম ৪৭ সালে এই বাড়িটার নিচের তলার একটি ঘরে একসঙ্গে চারজন নারী পুরুষ খুন হয়। তারপর থেকেই এই সমস্যা শুরু হয়।

এবার বলছি উত্তর দিকের বাড়িটার কথা।
এই বাড়িটা একেবারে গলির শেষ মাথায়। সবসময় গাড়িঘোড়ার ছুটোছুটি চলছে। এটা আগে একটা পুরোনো দোতলা বাড়ি ছিল, বেশ বড় বাড়ি। কিন্তু বাস করতো মাত্র দুজন প্রাণী। খুব বৃদ্ধ মা ও বয়স্ক এক মেয়ে। কোন ভাড়াটিয়া এলেও এক মাসের বেশী থাকে নি। চার পাঁচ বছর আগে বৃদ্ধা বাড়িটা বিক্রি করে মেয়েকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। এরপর বাড়িটা প্রায় সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে আধুনিক চারতলা বিল্ডিং ওঠে।

এই বাড়িটা একটা নার্সিংহোম হওয়ার কথা ছিল।
সেই মতো জিনিসপত্রও আনা হচ্ছিল। যখন কিছু মালপত্র এসেছে তার সঙ্গে সিকিউরিটির লোকও থাকতে শুরু করল। কিন্তু রাতে এমনই উৎপাতের স্বীকার হলো যে, শেষে আর নার্সিংহোম খোলাই হলো না। বেশ কিছুকাল বাড়িটা খালিই পড়ে রইল। এবার নিচ তলাটা ভেঙে কয়েকটা দোকনঘর করে ভাড়া দিল, কিন্তু দোকন গুলোও আর চললো না। তাছাড়া রাতে যারা দোকানে ঘুমাতো তারা এমন সব কান্ডকারখানা দেখেছে যে তারা কেউ রাতে দোকানে ঘুমাতে চাইতো না। শেষে দোকাগুলোও উঠে গেল। এতো সুন্দর একটা বাড়ি আজও সম্পূর্ণ খালি পড়ে আছে।

আমি মোটেও ভুতে বিশ্বাস করি না।
তাই ওই ভুতুড়ে বাড়ি দুটোর সামনে দিয়ে খুব একটা যাইও না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:০৬
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×