somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আপনি কেন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন নি!

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিকেলে বিভিন্ন এলাকায় হাঁটতে যাই।
যে এলাকাতেই যাই একটা করে মাদ্রাসা চোখে পড়ে। প্রতিটা মাদ্রাসাতেই ছাত্রদের অভাব নাই। আমাদের বাসার কাছেও একটা মাদ্রাসা আছে ফালুর। মাদ্রাসায় কোনো ধনী লোকদের ছেলেমেয়েরা পড়ে না। মাদ্রাসায় খরচ কম। তাছাড়া এটা আল্লাহর রাস্তা। বেহেশত পাওয়ার সম্ভবনা আছে। মূর্খ ও দরিদ্র বাবা মা সন্তানদের হাফেজ, ইমাম বা মোয়াজ্জেম তৈরি করাই মূল লক্ষ্য। মাদ্রাসাতে লেখাপড়া কি ডাক্তার, ইঞ্জিয়ার, পাইলট, বিজ্ঞানী, হওয়া যাউ কিনা আমি জানি না। মাদ্রাসা থেকে একজন ছেলে লেখাপড়া শেষ করে কোথায় চাকরি পাবে তাও আমি জানি না। আপনার কি মনে হয় না(?) মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার‌ মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়েদের দেশের উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তারা গড়ে ওঠে এবং জীবন ও জীবিকা চালায় মূলত অন্যের দান-খয়রাত এর উপর নির্ভর করে। জিডিপি বৃদ্ধির দায়ভার তারা নেয় না। যাই হোক, সেদিন বাসাবো গেলাম। বিশাল এক মসজিদের পাশেই একটা মাদ্রাসা। বিকেলে মাদ্রাসার ছেলেরা বাইরে বের হয়েছে। একটা ছেলের সাথে কথা বললাম- গ্রামের বাড়ি কই? চাঁদপুর।
বাবা কি করেন? সিএনজি চালায়।
চাদপুরে তো মাদ্রাসা আছে, তাহলে ঢাকাতে কেন? এই মাদ্রাসাটা ভালো।





মাদ্রাসা দুই ধরনের আছে, আলিয়া ও কাওমি।
আলিয়া মাদ্রাসা সরকারি কারিকুলামে চলে। কওম শব্দের অর্থ জাতি। কওমী মানে জাতীয় শিক্ষা। কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা বাদে সবাই HSc শেষে উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্র বেছে নেয়। উচ্চ শিক্ষা পদ্ধতি আর সব দেশের মতোই। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়।
আলিয়া মাদ্রাসার শাব্দিক অর্থ উচ্চ বিদ্যালয়, মানে হাই স্কুল। আর দাখিল এই আলিয়া শিক্ষাব্যবস্থারই একটা স্তর, স্কুলের হিসেবে এস.এস.সি যাকে বলা হয়। ১৭৮০ সালে বাংলার ফোর্ট উইলিয়ামের গর্ভনর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক কলকাতায় আলিয়া মাদ্রাসা প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে আলিয়া মাদ্রাসা কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়।



একটা সহজ সরল সত্য কথা বলি-
আমার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চরম বিশৃঙ্খল, বৈষম্যমূলক, বাণিজ্যিক এবং অমানবিক। বৈষম্যমূলক কারণ রাষ্ট্র সবার জন্য সমান সুযোগ দিচ্ছে না। যার অর্থ নেই তারা পড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, মাদ্রাসায় যার আরেকটু সামর্থ্য আছে তারা পড়ে কিন্ডারগার্টেনে, আরও ধনীরা পড়ে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। কে কেমন শিক্ষা পাবে সেটা এখানে অর্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পড়ুক না কেন, কোচিং এবং প্রাইভেট টিউশন সবারই করা লাগে। ভাল স্কুলে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করার জন্য পর্যন্ত কোচিং করা লাগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং তো আছেই। একবার টিভিতে দেখি এক মোল্লা খুব রেগেমেগে বলছে যে, সব কিছুতে বিজ্ঞানের বাজনা বাজালে চলবে না, আল্লার কথা স্মরনে রাখতে হবে। মাদ্রাসার শিক্ষা ইহকাল পরকাল দুই জাহানের জন্য। ইত্যাদি ইত্যাদি। গাধাটা কিন্তু একটা স্যাটেলাইট চ্যানেলের স্টুডিওতে বসে, ক্যামেরার সামনে পোজ মেরে তার প্রলাপ বকে যাচ্ছিল। আর আমি যদ্দূর জানি, টিভিতে এসব প্রোগ্রাম করে তারা কিছু দক্ষিনাও আয় করে।



বাংলাদেশের প্রধানত মসজিদকে কেন্দ্র করেই কওমি মাদ্রাসাগুলো গড়ে উঠেছে। এই মাদ্রাসার ছাত্ররা প্রধানত আবাসিক। লিল্লাহ বোডিং-এর আওতায় তাদের থাকা, খাওয়া এবং পড়াশুনার খরচ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষই বহন করে। মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন বলেন, 'আমাদের টার্গেট কোরান-হাদিসে শিক্ষিত আলেম গড়ে তোলা'। আমার কথা হলো-আলেম দিয়ে দেশ সমাজের কি উপকার হবে? পৃথিবীতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কলা, সাহিত্য, … ইত্যাদি কোন দিকেই আরবী-ভাষী কোন দেশের কোন অবস্থান নেই। আরবির চেয়ে বরং তুর্কি ভাষা অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। শুধু ধর্মীয় শিক্ষা যদি কেউ নিতে চায় তাহলে, তার জন্য আরবী ভাষার কোর্স করাই যথেষ্ট। মাদ্রাসা শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েরা ইংরেজি ও গনিতে দুর্বল হয় এবং মুক্ত চিন্তার দিক দিয়ে একেবারে পিছিয়ে থাকে।যে জাতি মুক্ত চিন্তা করতে পারেনা, পারলে সে জাতির কোন উন্নতি হয় না। যেমনঃ টেলিভিশন দেখা হারাম, গান-বাজনা করা হারাম, সিনেমা দেখা হারাম, ইত্যাদি হছে মুক্ত চিন্তা না করতে পারা মানুষের বক্তব্য।

নুরু সাহেব হয়তও বলবেন, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার কারনে সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, ঘুষ, দূর্নীতি ইত্যাদি অকল্যানকর কাজকর্ম কমতে থাকবে। দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। ব্যাংক খাতে আরো সফলতা আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৪৮
৩৬টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×