ব্যক্তিত্ব হলো ব্যাক্তির স্বাতন্ত্র্যতা বা নিজস্বতা।
ব্যাক্তিত্ব আসলে অন্যের মনের ঘরে ছাপ ফেলার সাক্ষর। ভালো ব্যাক্তিত্বের সামনে আসা বা থাকতে পারা জীবনের খুব বড় আশীর্বাদ। কারন তারা খুব ইতিবাচক ব্যাক্তি হন। শ্রী রামকৃষ্ণ না থাকলে স্বামী বিবেকানন্দ স্বামীজি হয়ে উঠতেন না। ভালো ব্যাক্তিত্বের মানুষরা নিজের জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে যা সত্য বলে মনে করেন, তাই করতে পছন্দ করেন। কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল ডিকশনারি অফ ইংলিশ-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, 'আপনি যে ধরনের মানুষ, সেটিই আপনার ব্যক্তিত্ব এবং তাই আপনার আচরণ, অনুভূতি এবং চিন্তায় প্রকাশ পায়।' ব্যক্তিত্ব সময় বা বয়সের সাথে পরিবর্তনশীল।
ভূত বলতে কিছু নাই এই কথাটা বিজ্ঞান বলে।
অনেক কিছু আছে যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান কখনো দিতে পারে নি। পরিস্থিতি যত খারাপ হয় মানুষের মানসিকতা তত শক্তিশালী হয়। একদিন আমি মরে যাবো, এই কথাটা বারবার ভাবা উচিত। তখন নিজের মানসিকতা আপনাআপনি অনেকখানি পালটে গেছে। ক্লাস নাইনে থাকতে প্রবীর ঘোষের ‘অলৌকিক নয় লৌকিক’ বইটি পড়ে এই সব জ্বীন বাবা, নাগা বাবা, সাধু বাবাদের বুজুরকি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছিলাম। যারা এখনও এইসব লোক দেখানো অলৌকিকতায় বিশ্বাস করেন তারা এই বইয়ের খন্ড গুলো পড়ে দেখতে পারেন। অনেক ধারনা বদলে যাবে।
যে বৈশিষ্ট্য আপনাকে পৃথিবীতে একজন 'আপনি' হিসেবে আলাদা পরিচয়ে গড়ে তুলবে, তাই ব্যাক্তিত্ব। এক শ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা সমালোচনা একদম সহ্য করতে পারেন না। এরা সচরাচর অসামাজিক হয়। এ ধরনের মানুষের মধ্যেও ব্যক্তিত্বের গোলযোগ আছে বলে ধরে নিতে হবে। অনেকেই মনে করে সবার সঙ্গে আমার তাল মিলিয়ে চলা উচিত কিন্তু বাস্তবে যার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে যেমনঃ একজন নেশাখোরের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে তাকেও নেশাখোর হতে হবে যা একজন মানুষকে ব্যাক্তিত্বহীন করে তোলে। একটা জাপানিজ উক্তি পড়েছিলাম, 'জাপানিদের মতে আমাদের তিন ধরনের মুখ আছে। এক, যে মুখটা আপনি দুনিয়াকে দেখান। দুই, যে মুখটা আপনি আপনার পরিবার এবং কাছের বন্ধুদের দেখান। তিন, যে মুখটা আপনি কখনোই কাউকে দেখান না।
বই পড়ে মানুষ চেনা যায় না।
অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বললে, মানুষ চেনা সহজ হয়। তবে বই পড়লে অভিজ্ঞতা বাড়ে। বই পড়ে মানুষ লেখকদের অভিজ্ঞতা নিয়ে নেয়। মাঝে মাঝে আমি ভাবি, আমি মানুষটা কেমন? আমি অশালীন ভাষা পছন্দ করি না। অতি সাধারণ মানের হাস্য-রস ভালো লাগে না আমার। মানুষকে অসম্মান করে কথা বলতে পারি না আমি। ক্রোধ অনেক সময়ই সম্বরণ করতে পারি। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি আছে আমার। মূলত আমি একজন শ্রোতা টাইপের লোক- বেশী কথা বলতে পারি না, ঘন্টার পর ঘন্টা শুনতে পারি। কিছুটা প্রযুক্তি নির্ভর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। গান পছন্দ করি। কেউ যদি কোন মুভি মেনশন করে সেটা আগ্রহ নিয়ে দেখি। অ্যাকুরিয়ামে মাছ পুষি। নিজ গৃহে কখনো-সখনো একা থাকতে হলে তা এনজয় করি। বেশীর ভাগ মানুষ আমার সাথে কথা বলে আমাকে বিশ্বাস করে ফেলে এবং একজন সৎ মানুষ হিসেবে ধরে নেয়, এর পেছনে আমার কি গুণ রয়েছে আমার জানা নেই। তবে, এক্ষেত্রে আমার ভিতরে একটি অস্বস্তি ভাব তৈরি হয়- কেননা আমি জানি তাদের ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয় ।
পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ আলাদা।
আলাদা তাদের ব্যক্তিত্বও। নিজেকে জানো' কথাটি সব দার্শনিকেরা এজন্যেই এতো গুরুত্বের সাথে বলেছেন। নিজেকে জানলে অনেক সুফলের মধ্যে একটা যা হয় তা হলো- পৃথিবীতে তিনি কোন চরিত্র সম্পন্ন করতে এসেছেন তা জেনে নিজ অনন্যতাকে প্রকাশ করতে পারেন। কেবল সে অবস্থাতেই তিনি সবার ভালোবাসা অর্জন করতে পারেন। এক্ষেত্রে এক অভিনেতাদর উদাহরণ দেখুন। টেলি সামাদ একজন কৌতুক অভিনেতা হয়ে মানুষের যে ভালোবাসা অর্জন করেছেন, একজন নায়ক হবার চেষ্টা করলে তা পারতেন না। আমাদের নিজেদের জানা টা, নিজেকে অনুকরণ করা টাই সবচেয়ে জরুরি। অন্য কাউকে অনুকরণ টা ভুল সিদ্ধান্ত।
তথ্যসুত্রঃ
১। তুমিও জিতবে -শিবখেরা
২। থিংক এন্ড গ্রো রীচ -নেপোলিয়ান হিল
৩। ডেল কার্নেগী রচনা সমগ্রঃ
৪। কোয়ান্টাম মেথড-শহীদ আল বোখারী মহাজাতক
৫।পজিটিব থিংকিং-নরমেন ভিন্টেজ পিলে
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৪৫