somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের শাহেদ জামাল (উনিশ)

২৮ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সময় রাত তিনটা পনের মিনিট।
অনেক রাত। বলা যায় কিছুক্ষন পরেই ভোর হতে শুরু করবে। শাহেদ জামাল মাত্রই একটা কোরিয়ান ভূতের মুভি দেখে শেষ করলো। মুভির নাম 'The wailing'। মুভিটা ভালো লাগেনি। যাদুটোনা, ঝাড়ফুক, আত্মা, শয়তান নিয়ে ফালতু মুভি একটা। এই আধুনিক যুগে এসে এরকম ফালতু মুভি দেখার কোনো মানে হয় না। তার আড়াই ঘন্টা সময় নষ্ট হলো। এই আড়াই ঘন্টা একটা বই পড়লেও ভালো হতো। নিজের উপরই প্রচন্ড রাগ লাগছে শাহেদ জামালের। ভালো একটা মুভি দেখলে মনটা আনন্দে ভরে যায়। আবার ফালতু মুভি দেখলে মেজাজ বিগড়ে যায়। বাকি রাতটুকুতে হয়তও আর ঘুম আসবে না। অসুবিধা নাই, তার একটা ছোট্র ব্যলকনি আছে। মাথা ভরতি নানান রকম চিন্তা আছে। সময় চলে যাবে। শাহেদ ব্যলকনিতে বসলো। এখন সে একটা সিগারেট খাবে।

ব্যলকনি ছোট হলেও অনেকখানি দূর পর্যন্ত দেখা যায়।
দুই বিল্ডিং এর ফাক দিয়ে, মসজিদের পাশের গলিটা দেখা যায়। গলিটা দীর্ঘদিন ভাঙ্গা ছিলো। রাস্তার লাইট গুলোও জ্বলতো না। এখন রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। নতুন লাইটও লাগিয়েছে। সারারাত রাস্তাটা এখন আলোতে ঝলমল করে। দেখতে ভালো লাগে। কয়েকদিন আগে রাস্তাটার বাম পাশের দেয়ালে কে বা কারা যেন বিজ্ঞাপন দিয়েছে। সেখানে লেখা 'আপনার পরিবারের কেউ কি মাদকাসক্ত'? নিচে দুটা মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। শাহেদ জামালের ইচ্ছা একদিন সে এই নাম্বারে ফোন দিবে অথবা সরাসরি ওদের সাথে অফিসে গিয়ে দেখা করে আসবে, চা খেয়ে আসবে। ব্যলকনিতে বসলেই বিজ্ঞাপনটা চোখে পড়ে। এই গলিটা দিনের চেয়ে রাতের বেলা বেশী সুন্দর লাগে। এর কারন কি? এর কারনটা শাহেদ জামালকে খুঁজে বের করতে হবে।

শাহেদ জামাল সিগারেটে লম্বা একটা টান দিলো।
সে রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে আছে। চারপাশ অন্ধকার। রাস্তটার লাইট জ্বলে, ঝলমল করছে বলেই নিজের অজান্তেই সেখানে চোখ চলে যায়। হঠাত শাহেদ জামাল দেখলো- চারজন লোক যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। তাদের কাঁধে একটা খাট। যে খাটে করে মৃত মানুষ কবর দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। দৃশ্যটা দেখে শাহেদ প্রচন্ড ভয় পেলো। একটু আগে সে হরর মুভি দেখেও এতটা ভয় পায়নি। চারজন লোক এখন দাঁড়িয়ে আছে। হয়তও বিশ্রাম নিচ্ছে। অথচ তাদের কাঁধে লাশ। তারা খাটিয়াটা নামায়নি। শাহেদ কি করবে বুঝতে পারছে না। চারজন লোক শাহেদের দিকে তাকালো। কিন্তু শাহেদকে দেখার প্রশ্নই আসে না। শাহেদ অন্ধকারে বসা। ব্যলকনির বাতি জ্বালায় নি। আলো থেকে অন্ধকারে দেখা যায় না। কিন্তু তাদের মুখের ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে তারা শাহেদকে দেখতে পারছে।

শাহেদ জামাল প্রচন্ড ভয় পেয়েছে।
সে দৌড়ে ঘরে চলে এলো। বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো। তার বুক কাঁপছে। দ্রুত নিঃশ্বাস নিচ্ছে। শাহেদ জামাল নিজেকে বলল, ভয় পাচ্ছো কেন? ভয় পাওয়ার কি হয়েছে? তুমি না গর্ব করো- তুমি আধুনিক মানুষ, কুসংস্কার মুক্ত? তাহলে এখন ভয় পাচ্ছো কেন? একজন মানুষ মারা গেছেন, তাকে কবর দিতে নিয়ে যাচ্ছে। রাত বলে লোকজনের সংখ্যা কম। সামনেই মসজিদ। কিছুক্ষন পর ফযরের নামাজ হবে। নামাজ শেষে জানাজা হবে। তারপর লাশ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে অস্বাভাবিকের কি আছে? ভয়ের কি আছে? শাহেদ জামাল নিজেকেই নিজে বলল, তারা এখানে থামলো কেন? আমার দিকেই বা তাকালো কেন? তারা এখানে থেমেছে এমনিই থেমেছে। এটা কাকতালীয়। আর তারা তোমার দিকে তাকায় নি। তুমিই এমনটা ভেবে নিয়েছো।

নিজের যুক্তিতে ভয় চলে গেলো।
এখন শাহেদ জামালের একটুও ভয় করছে না। বরং কিছুক্ষন আগে যে প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলো- তার জন্য এখন লজ্জা লাগছে। লজ্জা কাটানোর জন্য শাহেদ ছাদে গেলো। ভোর হওয়া দেখবে। ভোরের আকাশ দেখা দারুন একটা ব্যাপার। তার খুব ইচ্ছা নীলার সাথে একসাথে ভোর হওয়া দেখবে- পাহাড়ে, সমুদ্রে, জঙ্গলে। ভোরের আলোতে নীলাকে দেখতে কেমন লাগবে কে জানে! মসজিদে ফযরের আযান হচ্ছে। নিশ্চয়ই নামাজের পর মৃত ব্যাক্তিটির জানাজা হবে। শাহেদ কি পারে না জানাজায় অংশ নিতে? কবর দিতেও যেতে পারে। কবরস্থান তো দূরে নয়। খুব কাছেই। আচ্ছা, কে মারা গেলো এটাও তো জানা দরকার। কিভাবে মারা গেলো? যে মারা গেছেন সে কি নারী না পুরুষ। বয়স কত? করোনায় মরেনি তো?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×