ছবিঃ আমার তোলা।
আমি কোনো কিছু লুকাই না।
সব কিছু স্পষ্ট বলে দিতে ভালোবাসি। এটা শিখেছি আমি হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে। হুমায়ূন আহমেদ তার সুখের কথা, কষ্টের কথা, পাওয়া না পাওয়া, মান-অপমানের কথা সব গলগল করে স্পষ্ট বলেছেন তার লেখায়। সব মানুষেরই Ethics (এথিকস) আছে। আমারও আছে। আমি নীতিহীন মানুষ নই। ব্লগে নুরু সাহেব থেকে শুরু করে অনেকেই মনে করেন, আমি সকালে এক কথা বলি, বিকেলে আরেক কথা বলি। এটা ব্লগারদের সম্পূর্ন ভুল ধারনা। অবশ্য এজন্য আমিই দায়ী। কারন, আমি আমার সমস্ত কথা বুঝিয়ে বলতে ব্যর্থ হই। দেখুন, আমার চিন্তা ভাবনায় আমি অনড়। কয়েকদিন আগে আমি একটা পোষ্ট দিয়েছি- 'আমার ধর্ম চিন্তা' শিরোনামে। সেখানে আমি আমার কথা গুলো স্পষ্ট বলেছি। কোনো আড়াল রাখিনি। এবং সেই সব কথাতে আমি অনড় আছি। থাকবও। ভবিষ্যতে যদি চিন্তা ভাবনা বদলায় তাহলে সেই পোষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবো।
আমার নীতি সকাল বিকাল বদলায় না।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা বিশ বছর আগেও পছন্দ করতাম। এখনও করি। বক ধার্মিকদের বিশ বছর আগেও পছন্দ করতাম না, এখনও করি না। দুষ্টলোকদের আগেও পছন্দ করতাম না, এখনও করি না। রাজাকার, ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজদের আগেও ঘৃণা করেছি, এখনও করি। রবীন্দ্র সংগীত আগেও ভালোবাসতাম, এখনও ভালোবাসি। তাহলে কোথায় আমি সকালে এক কথা, বিকেলে আরেক কথা বলি? আমার বিশ্বাস, আমার ভালো লাগা মন্দ লাগা- কোনো কিছু তো বদলায় নাই। সকালে যেটাকে কালো বলেছি, বিকালে সেটাকে কালো'ই বলি। কাজেই দুই নৌকায় পা দেওয়া লোক আমি না। অথচ আপনারা আমাকে জোর করে ধরে দুই নৌকায় পা তুলে দিচ্ছেন। আমি পাপ করলে, সেই পাপের শাস্তি আমিই পাবো। যদিও মন্দ কাজ আমি করি না। আমি একজন সৎ মানুষ। সৎ জীবন যাপন করছি। কোনো কিছুতেই মিথ্যার আশ্রয় নেই না।
ধর্ম নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই।
আমি কোরআন, হাদীস পড়ি নিয়মিত পড়ি। এমনকি প্রতিদিন সকালবেলা ইউটিউবে কোনো না কোনো সূরা বাংলা অনুবাদ শুনি। ভালো লাগে। দশ বছর আগেও শুনতাম, এখনও শুনি। কই সকাল থেকে বিকাল হয়- আমি তো একই রকম থাকি। তবু কেন আপনারা জোর করে আমাকে বলছেন, সকালে এক কথা বলি, বিকালে আরেক কথা বলি? আমি স্পষ্ট বলেছি, যদি দোযক বা জান্নাত থেকে থাকে। আমি স্বেচ্ছায় দোযকে যাবো। দোযকে একটা ট্যুর দেওয়ার ইচ্ছা আছে। দোযকের অদ্ভুত সব কথা শুনেছি। এই ইচ্ছা আমার বিশ বছর আগেও ছিলো, এখনও আছে। দুই নৌকায় তো পা দেইনি। বা সকালে দোজকে যেতে চেয়েছি, বিকেলে তো দোযকে যেতে অস্বীকার করি নি। বিনা দ্বিধায় আমি বলতে পারি, যেহেতু চুরী, দূর্নীতি, ধর্ষন বা কারো ক্ষতি করি নাই। মিথ্যা বলি নাই। সহজ সরল জীবন যাপন করেছি- সেই হিসাব মতে আমার বেহেশেই যাওয়ার কথা। কিন্তু বেহেশতে যাওয়ার আগে একবার দোযকে যাবো।
ধর্ম নিয়ে আমি পোষ্ট দেই।
আবার ধর্মের বিপক্ষেও আমি পোষ্ট দেই। সমাজে আস্তিক আছে, নাস্তিকও আছে। এই দুই শ্রেণীর কথাই আমি আমার লেখা গুলোতে বলি। বলতে চাই। আমাকে বলতে হবে। লেখায় ভুল থাকলে তা আমাকে ধরিয়ে দিবেন। শুধরে নিতে চেষ্টা করবো। আমি কি এরশাদ? কোনো মানুষই কারো মতো হতে পারে না। হ্যা মানুষের ভুল থাকে, মানুষ ভুল করে। কোনো মানুষই পুরোপুরি শুদ্ধ হতে পারে না। মানুষ তো ফেরেশতা নয়। ভুল গুলো শুধরে নেওয়ার জন্য তাকে সময় দেওয়া উচিত। মানুষ তো ভুল করতে করতেই শিখে। দড়িকে আর কতকাল সাপ মনে করবেন? বা চিলে কান নিয়ে গেছে, আর কতকাল চিলের পেছনে ছুটবেন? অন্য দশ জনের মতো না হয়ে আলাদা হোন। উন্নত হোন, মনের সংকীর্তা দূর করুন। মানবিক হোক। আমি অনুরোধ করবো- সময় পেলে বিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবেন। তাতে মন বড় হবে।
যদি আমাকে আপনারা অপছন্দ করেন-
ঘৃণা করেন, তাহলে আমি ব্লগ ছেড়ে হাসি মুখে চলে যাবো। এখন আপনারা সবাই মিলে ঠিক করুন, আমি সামুতে থাকবো কি থাকবো না। কারন, আমি চাই না আমার জন্য ব্লগারদের মেজাজ খারাপ হোক, কেউ কাউকে কটু কথা বলুক। আমার কাছে ব্লগ হলো আনন্দের জায়গা। সবাই লিখবে, পড়বে, জানবে। আমি কাউকে কোনো দিন লাথথি দেই নি, তার মানে এই না যে আমি লাথথি দিতে জানি না। আমিও কটু কথা বলতে পারি। কিন্তু কেন কটু কথা বলব? পৃথিবীতে অল্প কিছু দিন আমাদের আয়ু। কি দরকার ঝগড়া বিবাদ করার? আসুন চেষ্টা করে দেখি, সবাই মিলে সুন্দর ভাবে মিলেমিশে থাকা যায় কিনা। আমি তো বাপ মার কাছ থেকে এরকম শিক্ষা পেয়ে বড় হইনি। আমি মানুষকে ভালোবাসতে চাই। শ্রদ্ধা করতে চাই। একা থাকার চেয়ে সবার সাথে মিলেমিশে থাকা অনেক ভালো।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১৯