ছবিঃ আমার তোলা।
আপনারা কি লইট্টা শুটকি খান?
পরী লইট্টা শুটকি খুব পছন্দ করে। আমি পছন্দ করি না তবে মাঝে মাঝে খাই। আজ খেয়েছি। সুরভির লইট্টা শুটকি রান্নাটা ভালোই হয়েছে। সাথে কিছু বেগুন আর আলুও দিয়েছে। এই জন্য কি স্বাদ বেড়েছে? ধবধবে সাদা গরম ভাতের সাথে খেতে ভালোই লেগেছে। সাথে ডাল ছিলো। ডালে আজ টোমেটো আর ধনেপাতা দিয়েছে। কালিজিরা ভর্তা করেছে। গরম ভাতের সাথে কালিজিরা ভর্তাও বেশ লাগে। আমি আগে কালিজিরা ভর্তা খেতাম না। ইদানিং খাই। দেশী মূরগী ছিলো। ফার্ম টার্মের চেয়ে দেশী মূরগীই বেস্ট। চারটা দেশী মূরগী কিনেছিলাম বারো শ' টাকা দিয়ে। খুবই ছোট সাইজ।
গতকাল সুরভিকে বলেছিলাম-
রমজান মাস তো চলে এসেছে। আগামীকাল পেয়াজু, বেগুনি, ডিম চপ, ছোলা হাবিজাবি বানাও। বানিয়ে টায়েল দাও। ভুলে গেলে নাকি দেখো। সুরভি আজ ইফতার আইটেম বানিয়েছে। আমি একাই চারটা ডিম চপ খেয়ে ফেলেছি। সুরভির হাতের ডিম চপটা দারুন হয়। পেয়াজু খেলাম। পেগুনি খেলাম। ছোলা খেলাম। সবই মজা লাগলো। বললাম, সবই যখন করলে তাহলে লেবুর শরবত তা বাদ যাবে কেন? সুরভি বলল, ঘরে লেবু নেই। বললাম, সমস্যা নেই। সন্ধ্যায় বাইরে গেলে নিয়ে আসবো। বাজারে লেবু পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু লেবু গুলো ভালো না। রস হয় না। আবার দাম বেশী।
সন্ধ্যায় বাইরে গেলাম।
চায়ের দোকানে রোজকার মতো ঘন্টা খানেক আড্ডা দিলাম। আড্ডা শেষে এক কেজি আঙ্গুর কিনলাম। ২৬০ টাকা নিয়েছে। আঙ্গুর গুলো খুবই ভালো হয়েছে। দারুন মিষ্টি। একটা তরমুজ কিনলাম। সাত কেজি ওজন। ত্রিশ টাকা করে কেজি। ২১০ টাকা দাম হয়েছে। বিক্রেতা দশ টাকা কম রেখেছে। দুই কেজি পাকা পেঁপে নিলাম এক শ' টাকা দিয়ে। পেঁপে আমি খাই না। সুরভির জন্য নিয়েছি। টক দই নিলাম এক কেজি। টক দইও আমি খাই না। খেজুর নিলাম এক কেজি 'আজওয়া'। এবং আধা কেজি মরিয়ম। অনেক দাম নিলো। খেজুরের এত দাম কেন? যাই হোক, সামনে লকডাউন। তাই আমি নানান রকম খাবার কিনে কিনে ফ্রিজ ভরে ফেলেছি। রমজান মাসের পুরো বাজার করে ফেলেছি। তবে ফলটল আরো কিনতে হবে। ফ্রিজে যতটুকু ফল আছে তা দিয়ে পুরো রমজান মাস পার হবে না।
রাত ন'টা বেজে গেছে।
অলরেডি সুরভি দুইবার ফোন দিয়ে ফেলেছে। ঢাকা হোটেলের কাছেই আসতে দেখলাম- কে বা কারা খুব মারামারি করছে। অনেক গুলো চেংড়া পোলাপান মিলে একজনকে খুব মারছে। নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেছে। মুহুর্তের মধ্যে চারিদিকে মানুষের জটলা তৈরি হয়ে গেছে। কেউ মারামারি থামানোর চেষ্টা করছে না। সবাই তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখছে। ঘটনা কি জানার জন্য আমি কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম। ঘটনা কেউই জানে না। আমার মধ্যে জিদ চাপলো- ঘটনা না জেনে আমি বাসায় যাবো না। যত রাতই হোক। চেংড়া- চেংড়া পোলাপানের মধ্যে এত হিংস্র ভাব কেন?
আমার কাছে প্রতিটা দিনই সমান।
আমার কোনো ছুটির দিন নাই। যারা চাকরি করে তাদের ডে অফ আছে। এবং সেই দিনটা তাদের জন্য খুব মূল্যবান। প্রতিটা দিনই আমার সমান যাচ্ছে। গত বছর লকডাউনে আমি যেরকম ছিলাম। এক বছর পর আজও আমি সেই রকম আছি। একই ভাবে দিন কাটছে। অবস্থার কোনো পরিবর্তন নেই। হ্যা একটা আপরিবর্তন হয়েছে। গত বছর আমার কন্যা ফাইহা ছিলো না। এখন ফাইহা আমার পাশে। ফাইহা খুব হাসে। আমি তাকে নানান রকম গল্প শুনাই। ফাইহাকে গল্প শুনাতে আমার খুব ভালো লাগে। ফাইহার জন্য প্রতিদিনের রুটিন কিছুটা বদলে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫২