ঢাকা শহরের মানুষজন পাগল হয়ে গেছে।
ঈদের আগের দিন অর্থ্যাত চানরাতে চাঁদ দেখা গেছে ঘোষনার পর বাজার আর শপিংমলে যে ভিড় হয়- আজ সেই অবস্থা। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়। এদিকে পহেলা বৈশাখ, আরেকদিকে ঈদ। মধ্যখানে রমজান। চারপাশে লকডাউন। মানুষজন কেনাকাটায় ভয়াবহ ব্যস্ত। আমি শুধু রাস্তায় বের হয়েছি- মানুষের ব্যস্ততা দেখার জন্য। নিজের ব্যস্ততা নেই বলে, মানুষের ব্যস্ততা দেখতে ভালো লাগে। বিক্রেতাদের মধ্যে পাগল পাগল অবস্থা। ক্রেতারা ছাগলের মতো শুধু কিনেই যাচ্ছে। করোনা নিয়ে কারো মধ্যে কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। ভাবটা এরকম 'মাস্ক পড়ছি না'।
বাজারে এত ভিড় কেন?
লকডাউন এর কারনে? কে বলে এই দেশের মানুষ গরীব। তাহলে এত এত কেনাকাটা করছে কারা? আমি শুধু ভাবি, এত টাকা মানুষের হাতে এলো কি করে? আমাদের এখানে এক মাংসের দোকানে অলরেডি ২০ টা গরু জবাই হয়ে গেছে। রাত দশটার মধ্যে হয়তো আরো ৫/৭ টা জবাই হয়ে যাবে। অথচ মাংসের কেজি ৬০০ টাকা। একজনকে দেখলাম দশ কেজি মালটা কিনে নিলো। আরেকজন দশ কেজি খেজুর কিনে নিলো। এক হাজার টাকা করে খেজুর। আমি শুধু অবাক হয়ে দেখি। আমি ডিম নিলাম তিন ডজন। আরেকজন নিলো দশ ডজন। আজিব! কি হচ্ছে এসব!
অনলাইনওলারাও ভালো ব্যবসা করছে।
তবে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করলে লোকজন বেশির ভাগই ঠকে। তারপরও কেনে। কিনে যাচ্ছে। মেহেদি কিনবে, সেটাও অনলাইন থেকে। বাচ্চার ডায়পার সেটাও অনলাইন থেকে কিনে। ঘি, মধু, কালিজিরা, দুধ হাবিজাবি সব অনলাইন থেকে লোকজন কিনছে। এদিকে বাজারে প্রচন্ড ভিড়। আমি বাজারে গিয়েছিলাম। সামান্য কিছু কেনাকাটা ছিলো। বাজারে পা দেওয়ার জায়গা নাই। একজনকে দেখলাম একটা ইলিশ মাছ কিনলো- ২৫০০ টাকা দিয়ে। আগামীকাল পহেলা বৈশাখ। ইলিশ মাছ তো দরকার। আমি একটা ইলিশ মাছ কিনতে চেয়েছিলাম। সম্ভব হলো না।
নিউমার্কেট, গাউছিয়া আর চাদনী চক ভয়াবহ অবস্থা।
এমন কি ফুটপাতে ভয়ানক ভিড়। মানুষের ভিড় আমার একেবারেই পছন্দ না। লোকজনের কেনাকাটা দেখলে যে কেউ বলবে আমাদের দেশ, গরীব দেশ না। তবে আজ রাস্তায় প্রচুর ভিক্ষুক দেখলাম। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। একটা ব্লাউজের মুজুরী ৭০০ টাকা। একটা প্যান্ট বানাতে নিচ্ছে ৬৫০ টাকা। শেখ হাসিনার আমলে মানুষ ভালো আছে। প্রচুর কেনাকাটা করতে পারছে। এটা আল্লাহর রহমত। অবশ্য মানুষের মধ্যে একটা আফসোস আছে। কেনাকাটা করতে ইন্ডিয়া যেতে পারছে না। সব কিছু মিলিয়ে দেশের সবাই ভালো থাকুক। তাহলেই আমি খুশি।
আমাদের দেশের মানুষ প্রশ্ন কম করে।
দোকানদার যা দাম বলে টুক করে নিয়ে নেয়। কখনও জানতে চায় না- এই জিনিসটার এত দাম কেন? এত দাম তো হওয়ার কথা না। দাম জিজ্ঞেস করতে হয়তো অপমান বোধ করে। তাই যত দামই হোক নিয়ে নিচ্ছে। আশা করি আগামীকাল থেকে কড়া লকডাউন হবে। কোনো ছাড় হয়তো দেওয়া হবে না। এই জন্য সবাই খাবার কিনে ঘরে মজুদ করছে। মিথ্যা বলব না, আমিও কিছুটা মজুদ করেছি। সন্ধ্যায় আরেকবার বের হবো। এরপর তো আর বের হতে পারবো না। লকডাউন কবে শেষ হবে কে জানে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪৫