somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

একটি পরিবারের গল্প

০৯ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ গুগল

একটি পরিবারের গল্প।
বাবা মা, ভাই বোন। ছোট পরিবার। বাবা এজি অফিসের ক্যাশিয়ার। মা গৃহিণী। পরিবারটি ঢাকার ঝিগাতলায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে। পরিবারটির দিন শুরু হয় ফযরের নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে। নামাজের পর তারা কোরআন পড়েন। গত ত্রিশ বছর ধরে তারা একসাথে নামাজ রোজা করছেন। একবেলা না খেয়ে থেকেছেন কিন্তু এক ওয়াক্ত নামাজ কাজ্বা হয়নি। ছেলে মেয়েদের তারা নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন। কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন। তাদের পরিবারের সকলের পুরো কোরআন মুখস্ত। তাদের চার জনের জন্য ঘরে চারটা কোরআন, চারটা জায়নামাজ। অবসর সময়ে পরিবারের সবাই হাদিস পড়েন। অনেক সময় ঈদে পরিবারটি নতুন জামা না কিনে ইসলামিক বইপত্র কিনে।

ছেলে মেয়ে যখন স্কুলে কলেজে পরীক্ষা দিতে যায়-
বাবা-মা বলেন, কোরআন শরিফে একটা চুমু দিয়ে যাও। কোরআন শরীফটা বুকে জড়িয়ে ধরো। ছেলে মেয়ে বাবা মায়ের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। যে কোন কাজে ঘর থেকে বের হলেই পরিবারটি কোরআন বুকে জড়িয়ে ধরে, চুমু খায়। এটা এ পরিবারের একটা অলিখিত নিয়ম। যে কোন বিপদআপদে পরিবারটি কোরআন পড়ে। ছেলে মেয়ে অসুস্থ হলে বাবা মা দুজনই ছেলে মেয়ের মাথার কাছে বসে কোরআন পড়েন। যখন বাবা মা কেউ অসুস্থ হয়- তখন ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের পাশে বসে কোরআন তেলোয়াত করে। এই পরিবারে টিভি নেই। আছে শুধু একটা লাইব্রেরী। লাইব্রেরীতে শুধু ধর্মীয় বই। বইয়ের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। পরিবারের সবার সব গুলো বই একাধিক বার পড়া হয়ে গেছে।

পরিবারটি বিশ্বাস করে-
তাদের সমস্ত বালামসিবত দূর করবে আল কোরআন। কোরআন ছাড়া কোন গতি নেই- ইহকালে ও পরকালে। এসময় পরিবারের ছেলে মেয়ে দু'জন বড় হয়ে যায়। বাবা মা তাদের স্কুল কলেজের শিক্ষা যেমন দিয়েছেন, তেমনি দিয়েছেন ধর্মের শিক্ষা। বাবা মা ভালো করেই জানেন- স্কুল কলেজের শিক্ষা ইহকালের জন্য কিন্তু কোরআনের শিক্ষা ইহকাল-পরকাল দুই জাহানের জন্য। মেয়ে বাইরে গেলে হিজাব পরে বের হয়। নিজের ঘরেও মেয়েটি হিজাব পরে থাকে। এটা তার ছোটবেলার অভ্যাস। বাবা এবং ছেলের মুখে দাঁড়ি। আসলে পরিবারটি ধর্মীয় নিয়ম কানুন যথাযথভাবে মেনে চলে। পাড়াপ্রতিবেশী তাদের সমীহ করে, ভালোবাসে।

এযুগে এখনও এরকম পরিবার আছে।
এটা অবিশ্বাস্য মনে হয়। তাদের ইন্টারনেট আছে অথচ তারা কোন নাচ গান দেখেন না। ফেসবুক, ব্লগ, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স ব্যবহার করে না। ঘরে সবাই একসাথে নামাজ পড়ে। বাবার পেছনে মা, আর ভাই বোন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে। এরা ভালো কোন সুসংবাদ শুনলে সাথে সাথে দু'রাকাত নফল নামাজ পড়ে নেয়। খারাপ সংবাদ শুনলে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়, আল্লাহর কাছে ফানা চায়। কোরআন পড়ে। সামাজিক অনুষ্ঠান গুলোতে পরিবারটি যথেষ্ট ধর্মীয় নিয়ম কানুন মেনে অংশ গ্রহন করে। অপচয় বা বিলাসিতা পরিবারটি কখনও করে নি। এরকম পরিবারের প্রতি সম্মান আর ভালোবাসা আপনাতেই চলে আসে।

এই পরিবারের কন্যার বিয়ে।
সেই বিয়েতে আমি উপস্থিত ছিলাম। খুব সুন্দর ঘরোয়া অনুষ্ঠান। কোন গান বাজনা নেই। হইচই নেই। নারীদের বিকট সাজসজ্জা নেই। ভিডিও করা বা ছবি তোলাতুলি নেই। খাবারের আয়োজনও অতি সামান্য। তবে খেজুরটা বেশ দামী ছিল। যাই হোক, কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই বিয়ে হয়ে গেলো। কাবিনের টাকা নিয়ে কোন দর কষাকষি হল না। কন্যা বিদায়ের সময় যে দৃশ্য দেখলাম- তা আমি অন্য কোন বিয়েতে দেখি নি। ভাই তার বোনকে হাত ধরে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিলো। ভাইয়ের চোখে পানি। বাবা মা তাদের আদরের কন্যার হাতে কাঁদতে কাঁদতে একটা কোরআন শরীফ তুলে দিলো। বলল, এটা বুকে জড়িয়ে ধরে তুমি তোমার শ্বশুর বাড়ি যাও। এই কোরআন যে কোন বিপদআপদ থেকে তোমাকে রক্ষা করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:০০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×