এবছর আমাদের ভাগ্যটা ভালো।
বেশ ভালো। সব কিছুতেই বাম্পার ফলন হয়েছে বলা যেতে পারে। বাজারে দেশি পেয়াজ ৪৫ টাকা কেজি। কাচা মরিচ ৩০ টাকা কেজি। মিনিকেট চালের দামও কমেছে। আগে ছিল ৬৭ টাকা কেজি, এখন ৬৩ টাকা। গরুর মাংস ৬০০ টাকা করেই বিক্রি হচ্ছে। মোটামোটি মাঝারি সাইজের একটা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, পাঁচ শ' টাকায়। সয়াবিন তেলের কেজি বেড়েছে। তবে টিসিবি থেকে কিনলে কম পাওয়া যায়। বেগুন ৪০ টাকা কেজি। আলু ২৫ টাকা কেজি। ঢেঁড়স ৪০ টাকা। লাউ ৪০ টাকা।
বাজারে কোনো সব্জির অভাব নেই।
চিংড়ি পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ টাকায় এক কেজি। হিমসাগর আম বড়টা পাওয়া যাচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। মাশাল্লাহ এবছর আমের ফলনও খুব ভালো হয়েছে। লিচুও প্রচুর হয়েছে। তিন শ' টাকা দিয়ে এক শ' লিচু পাওয়া যাচ্ছে। দেশে কোনো কিছুর'ই অভাব নেই। ফার্মের মুরগী ১৪০ টাকা। জাম, তাল, আমরুজ প্রচুর হয়েছে। বিক্রিও বেশ হচ্ছে। কলাও বেশ সস্তা। এক ডজন সবরি কলা ৮০। একটা কলা খেলে পেট ভরে যায়। আধা, রসুনের দামও কমেছে। ১৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি আধা, এক কেজি রসুন পাওয়া যাচ্ছে।
আম আমার খুব প্রিয় ফল।
এ বছর এখন পর্যন্ত এক শ' কেজির উপরে হিমসাগর আম কিনে ফেলেছি। ইচ্ছা আছে আরও এক শ' কেজি কিনব। এদিকে আমি ফার্ম আর কক মুরগী খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। সেদিন দুই হালি দেশি মুরগী কিনেছি। দাম পড়েছে তিন হাজার টাকা। এখন আর চাষের মাছ কিনি না। চাষ করা মাছ খেয়ে আরাম পাই না। দেশি মাছ পেলে কিনে ফেলি। দাম নিয়ে ভাবি না। মানুষ যদি সঠিক খাবার দাবার খায়, তাহলে তার অসুখ বিসুখ কম হয়। এবং সে দির্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে।
সিগারেটের দাম বেড়েছে।
বাজেট মানেই দাম বাড়ছে- এই একটি ধারণা অনেক দিন ধরেই দেশে প্রচলিত। বাজেট ঘোষণার পর কিংবা অনেক সময় আগেই কিছু কিছু জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয় একশ্রেণীর বদ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের কাছে বাজেটের আগ্রহের জায়গাটা এখানেই। প্রতি বছর বাজেটের সূত্র ধরে দ্রব্যমূল্যের স্ফীতি ঘটে। মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। এমপি আর আমলাদের বেতন বৃদ্ধি, নতুন গাড়ি, সুন্দর বাড়ি। এই তথাকথিত বাজেটের বাইরে এসে বাংলাদেশকে গড়তে ভূমিকা রাখতে হবে। গড়ে তুলতে হবে নারী-পুরুষের বৈষম্যমুক্ত সকলের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। বেকারদের কথা ভাবতে হবে। তাড়া এদেশেরই সন্তান।
চারপাশে একশ্রেণীর মানুষের ধান্ধাবাজি আর লোভের আস্ফালন দেখে মনের গভীরে প্রশ্ন জাগে, মানুষ কি তার বিবেকবুদ্ধি, মনুষ্যত্ববোধ লোভের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। মানুষের প্রতি মানুষের যে একটা মমত্ববোধ ছিল, সেই বোধটুকু যেন আর নেই। সবার মনের মধ্যে একটাই আকাঙ্ক্ষা, সবকিছু নিজের করে নেওয়া। সেখানে দয়ামায়া, ভালোবাসা কিছুরই স্পর্শ থাকবে না। এই লোভী মানুষের দল প্রত্যেক কালেই ছিল। এখনও আছে। ভবিষ্যতের আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ ডিজিটাল পৃথিবীতেও থাকবে। তারা চাইবে যেভাবে হোক সাধারণ মানুষকে শাসন-শোষণ করে নিজেদের স্বার্থকে ভরিয়ে তুলতে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:১৮