ছবিঃ গুগল।
আজ একটা বই পড়েছি।
অতি সস্তা বই। বইয়ের কাহিনী সস্তা। বইয়ের বাধাই সস্তা মানের। বইটিতে মাত্র ৬৮ পৃষ্ঠা। পড়তে দেড় ঘন্টার কম সময় লেগেছে। আহাম্মক ছাড়া এই বই কেউ পড়বে না। বইটা কিনেছি দশ টাকা দিয়ে। বায়তুল মোকারম হাউজ বিল্ডিং এর সামনের ফুটপাতে পুরান বই বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা অনেক গুলো পুরোন বই একটা পলিথিনের উপর রেখে বিক্রি করছে। বাইছা নেন দশ টাকা। দশ টাকা। মাত্র দশ টাকা। যেখানে একটা বেনসন সিগারেট পনের টাকা।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে।
সময় দুপুর বারটা। আমি হাউজ বিল্ডিং এঁর নীচে দাঁড়িয়ে আছি। এক কাপ চা শেষ করে একটা সিগারেট ধরিয়েছি। একটা বইয়ের দিকে আমার চোখ পড়লো। বইয়ের নাম 'পাপিয়া তোমাকে ভালোবাসি'। প্রচ্ছদে এক মেয়েকে দেখা যাচ্ছে। সম্ভবত এই মেয়ের নাম'ই পাপিয়া। পাপিয়ার হাতের নখ গুলো বড় বড়। নখে লাল নেইল পলিশ দেওয়া। আঙ্গুলে একটা আংটি। আংটিতে ছোট একটা পাথর। পাথর থেকে ছিটকে আলো বের হচ্ছে। পাপিয়ার ঠোটে গাঁড় লিপ্সটিক। ভরাট বক্ষ।
সিগারেট খাওয়া শেষ করে বইটা হাতে নিলাম।
দশ টাকা দিয়ে কিনে ফেললাম। অত্যন্ত নিম্মমানের বাধাই। পৃষ্ঠা গুলো নিউজ প্রিন্ট কাগজের চেয়েও খারাপ। বই থেকে পচা স্যাত স্যাতে গন্ধ আসছে। আমি যাবো উত্তরা। কাজ আছে। ফুটওভার ব্রীজ দিয়ে রাস্তা পার হয়েই একটা বাসে উঠে পড়লাম। ভাগ্য ভালো। সিট পেলাম জানালার পাশে। আরাম করে বসে পড়লাম। আমি নিশ্চিত উত্তরা যেতে যেতে পুরো বইটা পড়া আমার শেষ হয়ে যাবে। আমি বই পড়ায় মন দিলাম। উত্তরা যাওয়ার আগেই বইটা শেষ করতে চাই আমি।
এয়ারপোর্ট আশার আগেই বইটি পড়ে শেষ করে ফেললাম।
ফালতু বই। সময়ের অপরচয় করা হলো। এরচেয়ে ভালো ছিলো বাসের জানালা দিয়ে রাস্তার চারপাশ ভালো করে দেখা। অথবা মোবাইলে গেমস খেলা। উত্তরা মাসকট প্লাজা নেমেই বইটা ছুড়ে ফেলে দিলাম। এবং নিজেকে নিজেই দুটা কুৎসিত গালি দিলাম। মনে মনে ভাবলাম- এই বইয়ের লেখককে হাতের কাছে পেলে দুটা থাপ্পড় দিবো। শুধু লেখককে থাপ্পড় দিলে মন ভরবে না। প্রকাশকের কান দুটাও টেনে দিতে হবে। এবং কসম খেলাম জীবনে এরকম বই আর পড়বো না। নো নেভার।
'পাপিয়া তোমাকে ভালোবাসি' বইয়ের কাহিনী এই রকমঃ
আবু কালাম দর্জির কাজ শিখেছে। তার বয়স সতের বছর। আবু কালাম ক্লাশ টু পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। আবু কালাম মন্ডাপাড়া বাজারে এক টেইলার্সে কাজ করে। সে মেয়েদের ব্লাউজ আর সেলোয়ার কামিজ বানায়। একদিন পাপিয়া নামের এক মেয়ে তার দোকানে সেলোয়ার বানাতে আসে। পাপিয়াকে দেখে আবু কালামের মাথা নষ্ট হয়ে যায়। প্রথম দেখাতেই সে পাপিয়াকে ভালোবেসে ফেলে। যাই হোক, আবু কালাম নিজে পাপিয়ার মাপ নেয়। তখন পাপিয়া হাসতে হাসতে বলে আপনাদের দোকানে মাপ নেওয়ার জন্য কোনো মেয়ে নেই কেন? --- এইভাবে বইয়ের কাহিনী এগিয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩১