somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের ঢাকা শহর

২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ আমার তোলা।

বড় অদ্ভুত এই ঢাকা শহর।
ঢাকা শহরে চলার পথে প্রায়ই দেখা যায়, অল্প বয়সী কিছু ছেলেমেয়ে পলিথিনে জুতোর আঠা ভরে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। এদের কাঁধে একটা ব্যাগ থাকে। তাঁরা রাস্তায় রাস্তায় কাগজ টোকায়। দিনে দুপুরে সকলের সামনে জুতোর আঠার ঘ্রান নিতেই থাকে। তাদের সবাই দেখে, কিন্তু কেউ কিচ্ছু বলে না। সবাই এক নজর তাকিয়ে যে যার মতো চলে যায়। জুতোর এই আঠার নেশার নাম হয়তো ড্যান্ডি। এটা নিশ্চয়ই ক্ষতিকর। এই অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে গুলো কেন ড্যান্ডি নিচ্ছে? তাদের তো এখন স্কুলে লেখাপড়ার কথা। তাদের কেন সরকার থেকে ড্যান্ডি খেতে বারন করা হচ্ছে না। এই ছেলেমেয়ের প্রতি কি সরকারের কোনো দায়দায়িত্ব নেই? কোনো সংগঠন, ফাউন্ডেশন বা এনজিও কি পারে না তাদের দায়িত্ব নিতে? এই ড্যান্ডিখোর গুলোকে এখন ভালো পথে আনা না গেলে একদিন তাঁরা এই শহরেই নেশার জন্য চুরী, ছিনতাই আর ডাকাতি করবে।

ঢাকা শহরের ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যায় না।
প্রতিটা ফুটপাতে নানান রকম দোকান। যারা ফুটপাতে দোকানদারি করছে, তাঁরা নিয়মিত পুলিশকে টাকা দিচ্ছে। পুলিশ যদি তাদের কাছ থেকে টাকা না নিতো তাহলে হয়তো তাঁরা দাবী নিয়ে ফুটপাতে বসতে পারতো না। পুলিশকে কি সরকার বেতন দেয় না। কেন ফুটপাত থেকে চাঁদা নিতে হবে পুলিশের? চাঁদা নেওয়ার জন্যই তাঁরা পুলিশের চাকরিতে এসেছে। ব্যস্ত এলাকা গুলোতে শান্তি মতো হাঁটা যায় না। গত দুই বছরে পুরো ঢাকা শহরে ফুটপাতে হকারের সংখ্যা খুব বেশি বেড়ে গেছে। অনেক এলাকায় ফুটপাতে জায়গা নেই বলে রাস্তায় নেমে এসেছে হকাররা। এসবে কারনে রাস্তায় থাকে সারাদিন জ্যাম। দুই মেয়র কি করছে? শেখ হাসিনা তাদের কঠিন ধমক দিচ্ছেন না কেন? দিন দিন কেন এই শহরে পতিতাদের সংখ্যা বাড়ছে? আগে যে রাস্তায় তিনজন পতিতা দাঁড়িয়ে থাকতো, এখন সেখানে ২৫ জন পতিতা দাঁড়িয়ে থাকে। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে তাই এই অবস্থা?

বাংলাদেশ হলো চোরের দেশ।
মসজিদের ভিতরেও চুরী হয়। আবার বড় বড় সরকারী অফিসেও চুরী হয়। আমাদের দেশে যে যত বড় চোর তার তত বড় সম্মান। বাংলাদেশ হলোও দুষ্টলোকদের দেশ। একজন বন্ধুও আড়ালে বন্ধুর শত্রু। একই অফিসে সহকর্মী, সহকর্মীর শত্রু। এই দেশে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। শুধু বিশ্বাসের ভান করে মাত্র। আমাদের এলাকার কথা বলি। আমাদের বাসার সামনে গলিতে চারটা ম্যানহোল। কে বা কারা চারটা ম্যানহোলের ঢাকনা চুরী করে নিয়ে গেছে। হয়তো ভোরে যারা কাগজ টোকাতে আসে, তাঁরা চুরী করে নিয়ে গেছে। দিনের বেলা না হয় ঢাকনা বিহীন ম্যানহোল মানুষের চোখে পড়বে, রাতের বেলা কি হবে? রাস্তার লাইট গুলোও তো ঠিক করে জ্বলে না। পরপর তিনবার আমাদের এলাকার ম্যানহোলের ঢাকনা চুরী হয়েছে। এবার একদম মেশিন এনে ঢাকনা ঢালাই করে লাগানো হয়েছে। ঢাকা শহরে ভালো কোনো মানুষ নেই। যাদের ভালো মনে করছেন, সেটা তাদের মুখোশ। মুখোশের আড়ালে সব শালা হারামী।

ঢাকা শহরে খাবারের দোকানের অভাব নেই।
অলিগলিতে পর্যন্ত ফাস্টফুডের দোকানের অভাব নেই। এই খাবারের দোকান গুলো তিন চার গুণ বেশি দাম নিচ্ছে। অথচ দেখার কেউ নেই। বলার কেউ নেই। লোকজন কিচ্ছু বলে না। সবাই যেন মেনে নিয়েছে। লোকজন ভাবে সরকার যেহেতু কিচ্ছু বলছে, তার মানে দাম ঠিকই আছে। দাম বেশি নিলে সরকার তাদের ধরতো। ব্যবস্থা নিতো। যে বার্গারের দাম ত্রিশ টাকা হওয়া উচিত সেই বার্গারের দাম নিচ্ছে ১৫০ টাকা। যে স্যান্ডউইচ এর দাম হওয়ার কথা বিশ টাকা সেই স্যান্ডউইচ এর দাম নিচ্ছে ১২০ টাকা। যে জন্মদিনের কেকের দাম হওয়া দরকার ৫ শ' টাকা। সেই কেকের দাম নিচ্ছে দুই হাজার টাকা। এই শহরে যে সুযোগ পাচ্ছে সে-ই ব্যবসা নাম দিয়ে গলা কাটছে। গলা কাটা বন্ধ করার জন্য কেউ নাই। অভিবাবকহীন শহর। পিতা মাতা না থাকলে সন্তানের যে অবস্থা হয়, এই শহরের এখন সেই অবস্থা। এখন আমরা কাকে দোষ দিবো? দুই মেয়রকে? শেখ হাসিনা কে? না জনগনক কে?

এই শহরের মানুষ আত্মকেন্দ্রিক।
নিজে ভালো থাকতে পারলেই হলো। পাশের ফ্লাটে কেউ না খেয়ে থাকলেও ফিরে তাকায় না। আমাদের পাশের বাসার এক ঘটনা বলি। ভদ্রলোক বড় চাকরী করেন। ম্যালা টাকা সেলারি পান। উনি একটা গেমস কিনেছেন ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে। থ্রিডি টাইপ গেম। তার বোন অসুস্থ। ক্যান্সার হয়েছে। কেমো দিতে হবে। কেমো দিতে অনেক খরচ। বোনের স্বামী মারা গেছে। দুই বাচ্চা ছোট ছোট। ভাই তার বোনকে সাহায্য করছে না। আপন বোন। বলছে, টাকা নাই। থাকলে অবশ্যই দিতাম। আমার মায়ের পেটের বোন। আরেকটা ঘটনা বলি, আমাদের এলাকায় এক বাড়িওলা আছেন। সরকারী চাকরী করেন। ছুটির দিনে সরকারী গাড়িতে করে বউ বাচ্চা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। বিয়ের দাওয়াতে যান। এই বাড়িওলা সুরকারী চাকরীজীবি দরিদ্র মানুষ পছন্দ করেন না। তার ধারনা দুনিয়ার সমস্ত দরিদ্র মানুষ চোর। তার বাড়িতে কোনো ভিক্ষুক গেলে, সেই ভিক্ষুককে অকথ্য ভাষায় গালি দেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×