১। সুমি আর রিপনের বিয়ে।
তাঁরা দীর্ঘ ৬ বছর প্রেম করেছে। সুমি, রিপনের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা উন্নত নয়। এখন সুমি চায় তার বিয়েটা খুব ধূমধাম করে হোক। বিয়ে তো সে বারবার করবে না। রিপন বলেছিলো, আসো কাছের কিছু আত্মীয়স্বজন ডেকে ঘরোয়া ভাবে বিয়েটা সেরে ফেলি। সুমি একথা মানতে নারাজ।
পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে সুমি আর রিপন বাধ্য হয়ে সাত লাখ টাকা ঋণ করলো। তাদের বাবা মাও সামান্য কিছু দিলো। ঝাকজমকপূর্ন গায়ে হলুদ হলো। বড় কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে বেশ ধূমধাম করেই তাদের বিয়ে হলো। সুমি পার্লার থেকে বউ সেজে এলো। বউ সাজতে তার খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। তবু সুমির মন খারাপ, সে ৬০ হাজার টাকার সাজটা দিতে পারেনি বলে। যাই হোক, বিয়ের ঝামেলা শেষ। তাদের বিয়ে হয়েছে দুই বছর হয়ে গেছে। সংসারে নতুন শিশু এসেছে। অথচ আজও তাঁরা তাদের ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। যদিও প্রতিমাসে কিছু কিছু করে দিচ্ছে। আমার ধারনা যাদের টাকা নেই এবং ঋণ নিয়ে খুব ধূমধাম করে বিয়ে করে তাঁরা নির্বোধ। সমাজে এই নির্বোধের সংখ্যাটাই বেশি।
২। জাফর সাহেবের ঢাকা শহরে দেড় কাঠা জায়গা আছে।
সেই জায়গাতে টিন দিয়ে ঘর বানিয়ে তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন। তার শখ তিনি একটা পাঁচ তোলা বাড়ী বানাবেন। কিন্তু সংসার টানতে টানতে টাকা আর জমাতে পারেন নি। বাড়ি করা হয়নি। এদিকে তিনি বুড়ো হয়ে গেছেন। তার তিন সন্তান। খুব চিন্তা ভাবনা করে জাফর সাহেব একলোকের সাথে আলাপ আলোচনা করলেন। ঐ লোক বললো, আপনার বাড়ি আমাকে দিয়ে দিন। আমি ছয় তোলা করে দিবো। তিন তলা আপনার বাকি তিনতলা আমার। এবং আপনাকে নগদ দশ লাখ টাকা দিবো। জাফর সাহেব খুশি মনে রাজী হয়ে গেলেন। বাড়ির কাজ শুরু হয়ে গেলো।
জাফর সাহেব একটা ফ্লাট ভাড়া নিলেন। তার হাতে এখন দশ লাখ টাকা। পরিবার নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঘুরে এলেন। বাজারে গেলে যা মন চায় কিনেন। ছেলেমেয়েদের শপিং করে দেন। বাড়ি হয়ে গেলে তিনটা ফ্লাট তিনি পাবেন। একটা নিজে থাকবেন, দুটা ভাড়া দিবেন। ভাড়া দিয়ে মাসে ৪০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। আরামে চলা যাবে। দুঃখের বিষয় হলো আজ তিন বছর হয়ে গেছে তার বাড়ি কমপ্লিট হয়নি। এদিকে তার দশ লাখ টাকা শেষ। এখন তিনি ফ্লাটের ভাড়াটা পর্যন্ত দিতে পারেন না। যিনি বাড়ি করছেন, তিনি নানান রকম ছয় নয় কথা বলছেন। আর ছয় মাস সময় লাগবে, এই বছর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। বাজারে সিলিকন বালু পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাত রোডের দাম বেড়ে গেছে।
৩। রুমানা সকাল দশটায় নিউমার্কেট গিয়েছে।
বাসায় তার স্বামী ও দুই সন্তান রেখে। রুমানা নিউ মার্কেট গিয়েছে কারন, তার স্বামীর বন্ধু সোহেলের ছেলে হয়েছে। সেই ছেলের জন্য জামা কাপড় কিনতে গিয়েছে। কারন সোহেল সাহেব কেনাকাটার বিষয়ে অজ্ঞ। এদিকে দুপুর হয়ে গেছে, তবু রুমানা ফিরেনি। সে তার স্বামীকে ফোন করে বলেছে, তোমরা ডিম ভেজে কোনো রকমে খেয়ে নাও। আমার ফিরতে দেরী হবে। রাতে ফিরে আমি রান্না করবো। সোহেল ভাইয়ের ছেলের জন্য এখনও কেনাকাটা শেষ হয়নি। সোহেল ভাইয়ের কিছুই পছন্দ হচ্ছে না।
আসল কথা হলো সোহেজ সাহেব লুচ্চা।
সে নিজের বউ ছাড়া অন্য যে কোনো নারীর সঙ্গ পছন্দ করেন। রুমানা তা ভালো করেই জানেন। রুমানার অবশ্য সোহেল সাহেবের সঙ্গ ভালো লাগে। তাঁরা প্রায়ই নানান উছিলায় এখানে সেখানে যায়। আমার কথা হলো- রুমানা তার ঘর সংসার ফেলে সোহেলের সাথে কেন যাবে? সোহেল কি এতটাই নির্বোধ যে নিজের সন্তানের জন্য মার্কেট থেকে একাএকা জামা কিনতে পারবে না। আর রুমানাই বা কেমন? স্বামী সন্তান রেখে আরেক ব্যাটার সাথে বাইরে যায়! অথবা রুমানার স্বামী এত মেন্দামারা কেন? সে কেন তার স্ত্রীকে বলে না- এটা ঠিক না। নিজের ঘরসংসার বাদ দিয়ে অন্যলোকের সাথে কেন তুমি বাইরে যাও?
৪। মহিলার নাম নার্গিস।
বয়স প্রায় ৪৫ হবে। তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী আছে। বড় বড় দুই সন্তান আছে। অথচ সে কচি খুকিদের মতো আচরন করে। ফেসবুকে তার ফ্যান ফলোয়ারের অভাব নাই। সে অল্প বয়সী ছেলের সাথে চ্যাটিং করে। রাতে মোবাইলে এডাল্ট কথাবার্তা বলে। কাউকে খুব পছন্দ হয়ে গেলে তার সাথে নানান রকম রঙ ঢং করে। বাইরে দেখা করে। গা ঘষাঘষি করে। নানান রকম উপহার দেয়। অথচ এই মহিলা নার্গিস একটা সরকারী অফিসে চাকরী করেন। গত দশ বছর ধরে তিনি এরকমই করে আসছেন। আমি বুঝি না এই মহিলা নিজের স্বামী সন্তান, সংসার ফেলে কেন অল্প বয়সী ছেলেদের সাথে নস্টিফস্টি করছে! একজন ধরে একজন বাদ দেয়। কারো সাথে তিন মাসের বেশি সম্পর্ক রাখেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪৬