
নূপুর শর্মা ভুল তথ্য দিয়েছেন, তা নয়।
কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর রসূল (সঃ) কে অপমান করা। আয়েশার বয়স ছিল নয় বা দশ বছর, যখন তিনি সংসার শুরু করেন। এই বিয়ে আরব সংস্কৃতির ঐতিহ্য অনুযায়ী ছিল, অন্যথায় লোকেরা এই বিয়েতে আপত্তি করত। জীবনে ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রথমে সৎ এবং সত্যবাদী হতে হবে। ধর্ম নারীদেরকে বেশকিছু সুবিধা দিয়ে বেশ কিছু সুবিধা কেড়ে নিয়েছে। সাধারত ধার্মিকেরা চিন্তা-দর্শনে সংকীর্ণ হন এবং জ্ঞানার্জনে ক্রিটিক্যাল চিন্তায় পিছিয়ে থাকেন। ইহা সত্য।
নূপুর শর্মা একেবারে সহীহ হাদিস থেকেই বলেছিলেন।
কিন্তু ধার্মিকদের বক্তব্য হচ্ছে 'আমাদের নবী চুয়ান্ন বছর বয়সে ছয় বছরের আয়েশাকে বিয়ে করেছিলো ভালো কথা, কিন্তু তোমরা সেটা বলতে পারবে না, কারণ এতে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে'! কেউ কেউ আবার এই হাদিসকে জাল বলছেন। অথচ হাদিস গ্রন্থগুলোর মধ্যে প্রধান ৬টি নির্ভুল হাদিস গ্রন্থকে বলে সিহাহ সিত্তাহ আর এই ৬টি সিহাহ সিত্তাহ'র মধ্যে একেবারে শ্রেষ্ঠতম হাদিস শরীফ হচ্ছে বুখারী শরীফ। নবী আর আয়েশার বিয়ের সময়ের বয়স সংক্রান্ত এই হাদিসটি এই বুখারী শরীফেই পাওয়া যায়।
হযরত আয়েশা (রা.)- এর বিয়ের সময় প্রকৃত বয়স কত ছিল?
সঠিক তথ্য পেতে হলে আপনাকে টাইম মেশিনে চড়ে ১৪৪৫ বছর পিছনে যেতে হবে। আমাদের সবারই মগজ আছে, মগজ কে একটু কাজে লাগান। বাজারে যে সকল তথ্য পাওয়া যায় তাদের লেখকদের অরিজিন্যাল লেখা দুনিয়ায় নাই আর তাদের বেশিরভাগেরই জন্ম আয়শার ইন্তেকালের ২০০ বছর পর। আয়েশার আসল বয়স কত ছিলো? হয়তো ৬ বছরই ছিলো কিন্তু এটা যেহেতু কোরআনের কথা নয় এবং শুনতে বাজে শুনায় তাই মুসলিমরা কষ্ট পায় যখন কেউ এটা নিয়ে বিদ্রুপ করে।
নুপুর শর্মার দোষ একটাই যে,
সে আমেরিকাতে নাই সেটা তার মনে ছিল না। ভারত, বাংলাদেশে ধর্ম নিয়ে কিছু না বলাই ভালো। "ব্যক্তিগত স্বাধীনতা" ছেড়ে দিন। বুঝতে হবে নবী মোহাম্মদ (সাঃ) মুসলিমদের কাছে ঈশ্বর না হলেও ঈশ্বরের পরেই নবীর অবস্থান। মূলত নবীর দ্বারাই ইসলামের পরিচিতি। ইসলামকে নবীই পরিচয় করিয়ে দেন মুসলিমদের কাছে। মুসলমানরা মনে করেন, আল্লাহকে পেতে হলে আগে নবীকে পেতে হবে। বাংলাদেশের আইনে শিশু বিবাহের শাস্তি আছে। মুহাম্মদ বেঁচে থাকলে কি এই আইনের আওতায় পড়তেন না? শ্রী কৃষ্ণও এই আইনের আওতায় পরতেন। উনি আবার কয়েক কাঠি সরেশ। উনি তো স্নানরত নারীদের উপর নজর দেয়া, তাদের কাপড় চুরিও করেছেন। সুতরাং নির্ঘাত ইভটিজিং এর মামলা খেতেন।
অনেক সময় সত্য কথা বলতে হয় না।
কুরআনে ১৬৪ বার অমুসলিম হত্যা, মারামারি, কাটাকাটি করার কথা বলা হয়েছে। ইসলামের ভিত্তি হলো আবেগ আর অন্ধবিশ্বাস। আর আপনি যখন আবেগ আর অন্ধ বিশ্বাস অনুসরন করে চলবেন তখন অশান্তি আপনার পিছু হটবে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন মৃণালিনী দেবীকে বিয়ে করেন তখন মৃণালিনী দেবীর বয়স ছিল নয়। নবী মুহাম্মদ যে আয়েশাকে নয় বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন এটা ইসলাম মোটেও অস্বীকার করে না। প্রায় দেড় হাজার বছর আগের একজন মানুষের সব কিছুই এই সময়ের মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই হতে পারে না। ইসলামী ধর্মগ্রন্থে উল্লিখিত একটি তথ্য নুপুর শর্মার মুখে শুনে মুসলমানদের ও ইসলামিক দেশগুলোর অনুভূতি কীভাবে আহত হলো তা বোধগম্য নয়। মুসলমান সমাজের এই তথ্যগুলো নিয়ে আপত্তি থাকলে তো আগে তাদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থগুলো সংশোধন করা উচিত!
দরকারী বিষয় নিয়ে কেউ রাস্তায় নামে না।
দেশে কোটির উপরে বেকার। বাজারে জিনিসপত্রের সীমাহীন দাম। সরকারী হাসপাতালে দালাল। দেশে দূর্নীতি। বাঙালি হিন্দু, মুসলমান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায় মূলত একই নৃতাত্ত্বিক ধারার জনগোষ্ঠী। বাঙালিরা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সংকরায়িত জাতি, সেটা হিন্দু হোক বা মুসলমান হোক। এখানে কোনো বিশুদ্ধ রক্তধারা নেই। সাধারণ মানুষ হয়তো জ্ঞান রাখেন না। অতি আবেগে তুলকালাম করে ফেলেন। কিন্ত আলেমরা তো বেশ জ্ঞানী। তারা কেনো এগুলোকে সরাসরি বাধা দেন না। জাপানের মতো দেশে আপনি পীর, ফকির, দরবেশ, ওয়াজী হতে পারবেন না। পীর, ফকির ওয়াজকারী, দরবেশ হতে হলে বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও আফগানিস্তানের মতো দেশ প্রয়োজন হবে যেখানে এককোটি লোকের ব্রেইন যোগ করলেও জাপানের একজন নাগরিকের সমান বুদ্ধি খুজে পাওয়া যাবে না। অনেকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও হয়ত তাদের বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি থেকে পাওয়া সংস্কার বয়ে বেড়াচ্ছেন।
লেখাটি আমার নয়। আমার বন্ধুর লেখা। তার অনুমতি নিয়ে লেখাটি সামুতে শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


