
হ্যালো ব্লগারস!
কয়েকদিন ধরে আমার ল্যাপটপ টা সমস্যা করছে। স্লো হয়ে যায়। হ্যাং করে। ওপেন হতে সময় লাগে। সার্টডাউন হতে সময় লাগে। এভাবে ল্যাপটপ চালানো যায়! সকালে সুরভি খাসির মাথা রান্না করেছে মুগডাল দিয়ে। আর রুটি বানিয়েছে। সাথে আলু ভাজি। আমি বললাম, নাস্তা খাবো না। ল্যাপটপ ঠিক করতে যাচ্ছি এলিফেন্ট রোড। সুরভি বলল, না খেয়ে যেও না। আমি বললাম, তাহলে ঝটপট এক কাপ চা দাও। ছোট কন্যা ফারাজা খেলছে। সে অদৃশ্য পাউডার শরীরে মাখছে। আমাকেও সে অদৃশ্য পাউডার মেখে দিলো। চা খেয়ে বের হলাম। রোদ নেই, কিন্তু ভ্যাপসা গরম। বিরক্তিকর আবহাওয়া।
যে আমার ল্যাপটপ ঠিক করেছে তার নাম আলামিন।
বয়স ২৫ এর বেশি হবে না। আলামিন প্রথমে বলল, সব মিলিয়ে দুই হাজার টাকা লাগবে। আমি বললাম, ঠিক আছে। দেড় ঘন্টা পর আলামিন বলল, ল্যাপটপে অনেক সমস্যা। এই সমস্যা, সেই সমস্যা। ইত্যাদি। সব মিলিয়ে আলামিন আমার কাছ থেকে নিলো সাত হাজার দুই শ' টাকা। যাইহোক, ল্যাপটপ মোটামোটি ঠিক হয়েছে। তবে এই ল্যাপটপের উপর থেকে আমার মন উঠে গেছে। নতুন একটা ল্যাপটপ কেনা না পর্যন্ত শান্তি পাবো না। ল্যাপটপ খুব দরকার। ল্যাপটপ না থাকলে আমি অচল। আর আড়াই বছর পর ছোট কন্যাকেও একটা ল্যাপট দিবো। এখন তো ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে অনলাইনে ক্লাশ করা।
দুপুরবেলা লাগলো ক্ষুধা।
আলামিন ঠিক করে বলছে না আর কত সময় লাগবে। আমি একটা রেস্টুরেন্টে খেলাম। প্রচুর ভিড়। লোকজন পাগলের মতো খাচ্ছে। পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর বসার জায়গা পেলাম। সুন্দর হাসিমুখে একটা ছেলে আমার টেবিলের সামনে এলো। বললাম, ভাত দাও। ছেলেটা বলল, স্যার খিচুড়ি খান। ভালো লাগবে। আমি বললাম, ঠিক আছে দাও। খিচুড়িটা আসলেই খেতে ভালো হয়েছে। সাথে খাসির মাংস। বড় বড় দুই পিছ। না চাইতেই ছেলেটা একটা কোক দিলো। খাওয়া শেষ করে আবার গেলাম আলামিনের কাছে। বিকেল পাঁচ টায় তার কাজ শেষ হলো। আমার ধারনা আলামিন ইচ্ছা করে দেরী করেছে। সব মিলিয়ে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা না।
বাসায় ফিরে গোছল করলাম।
সুরভি বলল, আগামীকাল ইলিশ পোলাউ রান্না করবো। বড় একটা ইলিশ মাছ নিয়ে আসো। পোলাউ এর চাল ঘরে আছে। সন্ধ্যায় গেলাম বাজারে। গত সপ্তাহে যে ইলিশ মাছের দাম ছিলো নয়'শ টাকা এখন সেটার দাম চাচ্ছে ১৪ শ' টাকা! শেষমেষ বাধ্য হয়ে এক কেজি ওজনের একটা ইলিশ নিলাম ১৫ শ' টাকা দিয়ে। আমি কিন্তু ইলিশ পোলাউ খাই না। ডিম ১২০ টাকা ডজন। ১৫০ পিছ ডিম নিলাম। আমাদের বাসায় ডিমটা খুব বেশি লাগে। মাসে ২৫০ টা ডিম লাগে। হিমসাগর আম নিলাম ৫ কেজি। ১০০ টাকা করে কেজি। গত বছর হিমসাগর কিনেছি ৬০ টাকা করে কেজি।
আমি সাধরনত কফি খাই না।
আমার পছন্দ চা। গতকাল বাসায় মেহমান এসেছিলো। তাদের জন্য কফি বানানো হয়েছিলো। ভাবী আমাকে এক মগ কফি দিলো। সেই কফি খেলাম রাত দশটায়। এরপর সারারাত আর ঘুম হলো না। অনেক চেষ্টা করলাম ঘুমাতে কিছুতেই আর ঘুম হলো না। ফজরের আযান দিয়ে দিলো। বাসার সবাই গভীর ঘুমে। আমি রাস্তায় হাঁটতে বের হলাম। হাঁটতে হাঁটতে কমলাপুর রেলস্টেশনে চলে এলাম। দেখি একলোক মাত্র দোকান খুলেছে। আমি বললাম, চা খাবো। লোকটা বলল, জুইত কইরা বহেন। আমি জুইত কইরা বসলাম। ভোরবেলা ঢাকা শহরটকে খুব নিরীহ লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২২ রাত ১:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


