
১। ঢাকা শহরের মেয়েরা আজকাল চুল বেনি করে না। বহুদিন ধরে চুল বেনি করা মেয়ে দেখি না। বেনি করা চুলে মেয়েদের দারুন লাগে! হোক এক বা দুই বেনি।
২। লেইস ফিতা। একসময় কাঁধে করে মেয়েদের চুড়ি, পিতা, কাজল, নেইল পলিস, লিপস্টিক, আলতা ইত্যাদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করতো। অনেক গুলো মেয়ে একসাথে জড়ো হয়ে কিনতো। এখন তাদের দেখা যায় না।
৩। ঢাকা শহরে আগে সাপের খেলা দেখাতো। বাড়ির সামনে গিয়ে বলতো, সাপের খেলা দেখাই। বিনিময়ে কিছু টাকা অথবা চাল পেতো। এদের এখন আর দেখা যায় না। ঠিক এভাবে বানরের খেলাও দেখাতো। এরা এখন কোথায় কে জানে!
৪। দাঁতের পোকা ফেলাই। কিছু মহিলা অদ্ভুত মন্ত্র পড়তো। তাতে নাকি দাঁতের পোকা নাই হয়ে যেতো। এদের কেউ কেউ বাতের ব্যথা দূর করতো। কত কিছু যে হারিয়ে যায়। আর কত কিছু যে নতুন নতুন আসে তার ইয়ত্তা নেই।
৫। একদম বুড়ো বুড়ি বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে আসতো। তাদের একমুঠ করে চাল দেওয়া হতো। এখন কেউ বাড়িতে একমুঠ চাল নিতে আসে না। আমার মনে আছে- ছোটবেলা ভিক্ষুক এলে আমি দৌড়ে একমুঠ চাল দিয়ে দিতাম।
৬। সকালবেলা একলোক বাকরখানি আর মিষ্টি বিক্রি করতো। এখন এদের দেখতে পাওয়া যায় না। যে শুধু বাকরখানি কিনতো, টাকার সমস্যার কারনে মিষ্টি কিনতে পারতো না, বিক্রেতা তার বাকরখানিতে মিষ্টির সুরা লাগিয়ে দিতো।
৭। একসময় ঢাকা শহরে সব বাড়িতেই দুই একটা গাছ থাকতো। এখন কোনো বাড়িতে গাছ নেই। আমাদের এলাকায় প্রতিটা বাড়িতে গাছ ছিলো। সেই সব গাছের ফল আমি নিজে চুরী করে কত খেয়েছি।
৮। ঢাকার অনেক বাড়িতে একসময় কুয়া ছিলো। কুয়ার পানি ছিলো স্বচ্ছ ও শীতল। এখন গ্রামেও কুয়া নেই। কুয়া নিয়ে গ্রাম বাংলায় অনেক গল্প আছে। অবশ্য একসময় ঢাকার পানির উৎস ছিলো কুয়া।
৯। আগে কিছু মহিলা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাড়ি ব্লাউজ বিক্রি করতো। এখন এদের দেখা যায় না। আমার মাকে দেখতাম তাদের কাছ থেকে ৫/৬ টা করে শাড়ি কিনতো।
১০। আগে দেখতাম মসজিদে হুজুররা বাচ্চাদের আরবী পড়াচ্ছেন। টাকা নিতেন না। বাচ্চারা মাথা ঝাকাতে ঝাকাতে চিৎকার করে পড়তো। এখন হুজুররা মসজিদে ফ্রি আরবী পড়ান না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরবী পড়ান।
১১। আগে অনেকে কাইতন হাতে বা কোমড়ে বাধতো। কেউ কেউ কাইতনের সাথে তাবিজ পড়তো। শিশুদের কোমড়ে কাইতন থাকতো। কাইতনের ব্যবহার এখন উঠেই গেছে।
১২। শিশুদের জ্বর হলে, বিছানায় ৬/৭ বছরের ছেলেরা প্রস্বাব করলে পিতা মাতা হুজুরের কাছে নিয়ে যেতো। অথবা বাচ্চা ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে হুজুর ফু দিয়ে দিতেন পানির মধ্যে। সেই পানি খেলে বিছানায় মুতা বন্ধ।
১৩। একসময় ঢাকা শহরে যাতায়াতের জন্য কিছু বাস ছিলো। মুড়ির টিন নামে। এসব বাস এখন দেখা যায় না। তবে এসব বাস এখনও কলকাতা আর পাকিস্তানে দেখা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



