somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

তবু অঞ্জনারা সুখে থাক, সুখে থাক

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ পিওপক।

মাঝে মাঝে মনে হয়-
যদি এই পৃথিবীতে আমার জন্ম না হতো, তাহলে কি হতো? কিছুই হতো না। আমার অক্সিজেন টুকু অন্য কেউ নিতো। আবার আমি মানুষ না হয়ে গাছ হয়েও তো জন্ম নিতে পারতাম। আবার না জন্মালে কারো কোনো ক্ষতি হতো না। তবে না জন্মালে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হতাম। ভোর দেখা হতো না। নদী দেখা হতো না। জোছনা রাত দেখা হতো না। বিশাল সমুদ্র ও পাহাড় দেখা থেকে বঞ্চিত হতাম। অঞ্জনার সাথে পরিচয় হতো না। উপভোগ করতে পারতাম না পৃথিবীর রুপ, রস আর গন্ধ। মহাকাশের মতোন মানবজনমও বড় রহস্যময়। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ গুলো তো সহজ সরল সুন্দর নয়। বিশেষ করে ধার্মিকেরা। গান গাওয়া যাবে না, বাদ্য বাজানো যাবে না, কেক কাটা যাবে না, এগুলো বিধর্মীদের কালচার। ধার্মিকদের কিছুই বলা যায় না। বললেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগে যায়। ধার্মিকরা নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে কিছু করার চাইতে হুজুরের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে চলতে বেশি পছন্দ করে।

ধার্মিকদের প্যাঁচাল বাদ দেই।
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলেই বুঝতে পারি- না জন্মালে সব কিছুই শূন্য। গাছ বা পশু হয়ে জন্ম নিইনি তাতেই আমি খুশি। কিন্তু আমার রাগ হয়, মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে তো কিছু করতে পারলাম না। কোথাও কোনো দাগ রাখতে পারলাম না। আমি মরে যাওয়ার পর যে মানুষ আমাকে ভালোবেসে স্মরণ করবে, সেরকম কিছুই করতে পারলাম না। শুধু ভাত মাছ খেয়ে গেলাম। এই জন্যই আকাশের দিকে তাকালে মনে হয়- এই জীবন অন্য রকম হওয়ার কথা ছিলো। বুকের মধ্যে এতখানি ভালোবাসা আছে যে দশখানা পৃথিবী ভরতি মানুষকে দিলেও ফুরাবে না। অবশ্য আজকাল মানুষ ভালোয়াবসা চায় না। ইচ্ছা করে জীবনটা আবার নতুন করে শুরু করি। অতীতে যে ভুল গুলো করেছি, সে গুলো আর না করি। নিরবে বসে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি। হ্যাঁ আমি জানি- এরকম দীর্ঘশ্বাস রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীও ছাড়েন। এমনকি একজন রিকশাচালক বা একজন সবজি বিক্রেতাও ছাড়ে। এটাই মানুষের নিয়তি। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার নিয়তি।

মুক্তির পথ কেউ দেখায় না।
কেউ বলে না, কাছে আসো আমি পথ দেখাচ্ছি। আমি দিচ্ছি তোমার সব প্রশ্নের উত্তর। বছরের পর বছর কেটে যায়। মানুষ আর কত বছর বাঁচে? আশি বছর? বড়জোর একশো বছর। অথচ মানুষের কত বাহাদুরি। ঠিক এই মুহুর্তে এসে আমার অঞ্জনার কথা মনে পড়ে। আহ অঞ্জনা! অঞ্জনা চেয়েছিলো আমার উপর প্রভুত্ব করতে। সে চেয়েছিলো আমি তার ইচ্ছা মতো চলি। অঞ্জনা দেখতে ছিলো একদম দেবী স্বরসতীর মতোন। অঞ্জনার প্রতি তীব্র আকর্ষন অনুভব করতাম গোপনে। মেয়েটা ক্লাশ করতো না। অথচ বাসা থেকে বলে বের হতো কলেজে যাচ্ছি। কলেজের নাম করে একাএকা সারা শহর ঘুরে বেড়াতে। ঠিক সন্ধ্যের আগে আগে বাসায় ফিরতো। একদিন অঞ্জনা বলল, আমার আর একাএকা ঘুরতে ভাল লাগে। তুই আমার সাথে থাক। দুজন মিলে এই নোংরা শহরে ঘুরে বেড়াই। ক্লাশ ফাঁকি আমরা ঘুরতাম। খুব ঘুরতাম। পুরান ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে ধানমন্ডি লেক, বেড়িবাঁধ কিছুই বাদ রাখিনি।

আমি যদি বললাম, অঞ্জনা একটা চুমু খেতে পারি?
অঞ্জনা বলতো চুমু? খুব খেতে ইচ্ছা করছে? আচ্ছা, দে একটা চুমু। তাতে কি আর এমন ক্ষতি হবে? দে। দে। লজ্জা পাস না। একদিন রিকশায় মোহাম্মদপুর থেকে মিরপুর যাচ্ছিলাম আমরা। হঠাত শুরু হলো বৃষ্টি। সেই সাথে বাতাস। রিকশাচালক বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিয়ে রিকশা টানছে। অঞ্জনা বলল, আমাকে ধরে রাখ। পাগলা রিকশাওলা যেভাবে রিকশা টানছে, আমি রিকশা থেকে পড়ে না যাই! আমি এক হাত পেছনে নিয়ে অঞ্জনার কোমরে হাত রাখলাম। সেই প্রথম আমি কোনো নারীর কোমরে হাত রাখি। কেমন যেন একটা অনুভূতি হচ্ছিলো। নিজেকে মিশরের সম্রাট বলে মনে হচ্ছিলো। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছিলো- দেখুন, আমাকে দেখুন। আমি মিশরের সুম্রাট। আমার ধারনা, আমি যদি বলতাম, অঞ্জনা চল আমরা জিংজং করি। অঞ্জনা বলতো- জিংজং করবি? খুব ইচ্ছা করছে? ঠিক আছে সামনের শুক্রবার আমার বাসায় চলে আয়। সেদিন বাসায় কেউ থাকবে না। অঞ্জনার সাথে আমার সম্পর্ক কখনও ভালোবাসার ছিলো না। কিন্তু আমাদের দুজনের মধ্যে যথেষ্ঠ মিল মহব্বত ছিলো।

অঞ্জনা আত্মহত্যা করেছিলো।
কেন সে আত্মহত্যা করলো সেই কারন জানা যায়নি। বাবা মার একমাত্র মেয়ে ছিলো অঞ্জনা। তার বাবা মস্ত বড় সরকারী চাকরী করতো। অঞ্জনার মা মহিলা সমিতির সেক্রটারি ছিলো। কত বিকেল আর সন্ধ্যা আমি অঞ্জনা একসাথে কাটিয়েছি। এই মেয়েটা বেঁচে থাকলে আমার জীবনটা অন্য রকম হতো। অঞ্জনা আমাকে সাহস দিতো, ভরসা দিতো। আমার প্রতিটা দিন আনন্দময় করে তুলেছিলো। আমি সিগারেট খাওয়া শিখেছি অঞ্জনার কাছ থেকে। এমনকি বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে আমরা দুজন গাজাও টেনেছি। চোখটোখ লাল করে একাকার অবস্থা। তুরাগ নদীতে নৌকায় করে অনেক দূর পর্যন্ত গিয়েছি। টিএসসি থেকে ফুলার রোড হয়ে শহীদ মিনার পর্যন্ত আমরা হেঁটে যেতাম। শহীদ মিনারের সিড়িতে বসে অঞ্জনা বলতো- আইসক্রীম খাওয়া। আসলে অঞ্জনা বলতো না। হুকুম করতো। একদম রাজরানীর মতো হুকুম করতো। যেন আমি তার বাধ্য প্রজা। আমি মনে করতাম এই মেয়ে অঞ্জনা নয় এই মেয়ে প্রিন্সেস ডায়না।

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৩৭
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×