
আজ ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ দিন। আজ ২৮ তারিখ।
বইমেলা শেষ। আগামীকাল নতুন মাস শুরু হবে। মার্চ মাস। মার্চ মাসে তিনটা বিশেষ দিন আছে। ৮ তারিখ শবে বরাত। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। আর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। আর আমার জন্য আরেকটা স্পেশাল বিশেষ দিন হলো- ৭ মার্চ। সুরভির জন্মদিন। যাইহোক, আজ বাজার করলাম। আগামী একমাস নিশ্চিন্ত। ফ্রিজ ভরা থাকলে আমি নিশ্চিন্ত। একমাসের বাজার সব সেরে ফেলেছি। আর টুকটাক যা লাগবে সেগুলো বাসার কছেই দোকান থেকে নেওয়া যাবে। রমজান মাসের আবহাওয়া বাজারে এখনই পাওয়া যাচ্ছে। সেটা নিয়ে আমি চিন্তা করা ছেড়ে দিয়েছি। কারন, খেতে তো হবে। বাঁচতে তো হবে। তাই দাম নিয়ে হায় হায় করার কিছু নেই। যেমন- নাজিরশাইল চাল ৮০ টাকা কেজি। এখন কোনো কারণে যদি নাজিরশাইল ১৫০ টাকা কেজি হয়, তবুও কিনতে হবে, খেতে হবে। তাই আমি আর দাম নিয়ে হায় হায় করবো না।
আজ ছোট দশটা দেশী মূরগী কিনেছি।
স্যরি মূরগী না মোরগ। প্রতি পিছ পাঁচ শ' টাকা করে। বাজার থেকেই সুন্দর করে কেটে এনেছি। ফার্মের মূরগী, সোনালী মূরগী খেয়ে মজা নেই। দেশী মূরগীর ঝোল খেতেও অনেক মজা। এক কেজি ঘি কিনেছি ১৪ শ' টাকা দিয়ে। পোলাউ, রোস্ট আর কাবারে ঘি না দিলে খেতে স্বাদ লাগে না। ছোট কন্যার জন্য ফল কিনেছি। আপেলের দাম বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগেও আপেল কিনেছি ২২০ টাকা কেজি। এখন ৩০০ টাকা কেজি। দোকানদার বলল- রমজান এলে দাম আরো বাড়বে। আমি মনে মনে বললাম, বাড়ুক। দেখি কত বাড়ে। পাঁচ শ' টাকা কেজি হলেও আপেল কিনব খাবো। তিন কেজি গরুর মাংস কিনেছি। এক কেজি কলিজা কিনেছি। দুই কেজি বট। আড়াই কেজি ওজনের একটা রুই মাছ কিনলাম। ছোট রুইমাছ খেয়ে আরাম পাই না। রুই মাছ কাটাতে নিলো ৫০ টাকা। তবে মাছটা কেটেছে সুন্দর করে। এই রুই মাছ ভেজে টোমেটো দিয়ে ভূনা করলে খেতে দারুন হবে।
পরিবারের জন্য দুইহাত ভরতি করে বাজার করতে ভালো লাগে।
বর্তমানে ফলের মধ্যে বড়ই সবচেয়ে সস্তা। বড় বড় বড়ই। ৫০/৬০ টাকা কেজি। খেতে খুব মিষ্টি। গত একমাসে আমি প্রায় ১২ কেজি বড়ই কিনেছি। আজও কিনেছি ৩ কেজি। গতকাল আমি আর সুরভি অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলাম। অতীত দিনের গল্প করেছি। আমাদের সামনে ছিলো বড়ই। দুজন মিলে প্রায় এক কেজি বড়ই খেয়ে ফেলেছি। ফারাজা বড়ই পছন্দ করে। সে-ও খায়। সবজির দাম অনেকে বেড়েছে। সামান্য কাঁচা মরিচের দামও অনেক। ছোটবেলা মা দু'টাকা দিতো। কাঁচা মরচি আনতে। সেই কাঁচা মরিচ ৪/৫ দিন খাওয়া যেতো। আর এখন চল্লিশ টাকার কাঁচা মরচি কিনলেও দুদিন হয় না। আজ ১৬০ টাকা দিয়ে এক কেজি কাঁচা মরচি কিনে ফেলেছি। কমপক্ষে পনের দিন তো যাবেই। আরো অনেক কিছু কিনতাম। কিন্তু ফ্রিজে আর জায়গা নেই।
আজ সকালে নাস্তা করেছি ধানমন্ডি স্টার রেস্টুরেন্টে।
আমার এক বন্ধু বলে এটা এলিট শ্রেনীর রেস্টুরেন্ট। সব মিলিয়ের আমরা ১৩ জন। সবাই একই স্কুলে, একই ক্লাশে পড়েছি। এর মধ্যে একজন বিদেশ থেকে এসেছে। সে আজকের সকালের নাস্তার আয়োজন করেছে। যে যা খুশি খাও। যত পারো খাও। আমি শুধু গরুর মাংস নিয়েছি, নেহারি নিয়েছি। আর পরোটা। আমি সাধারণত দুটা পরোটা খাই। কিন্তু আজ খেয়েছি তিনটা। সব শেষে এক কাপ চা। চা টা ভালো ছিলো। ১৩ জন খেলাম অথচ বিল পাঁচ হাজার টাকাও হয়নি। বন্ধুদের মধ্যে যাদের স্ত্রী আছে, তাদের জন্য পার্সেলের ব্যবস্থা ছিলো। আমি এরকম প্রোগ্রামে যাই না। কিন্তু বিদেশ থেকে আসা বন্ধু খুব আন্তরিকতার সাথে অনুরোধ করেছে। কেউ আমাকে খুব অনুরোধ করলে আমি মানা করতে পারি না। অনেককে দেলখলাম অকারনে হা হা, হি হি করে হাসছে। ছবি তুলছে। এসব আমি পারি না। আসলে এসব আমার পছন্দ না।
যাইহোক, আজ লেখা এখানেই শেষ করছি।
অনেকদিন বৃষ্টি হয় না। তাই সুরভিকে বলতে পারি না- আজ কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে দেখেছো! খিচুড়ি রান্না করো। বৈশাখ মাস না এলে তো আর বৃষ্টি হবে না। বৈশাখ মাস আসতে দেরী আছে। তাই বলে কি খিচুড়ি খাবো না! সুরভির রান্না শেষের দিকে। যাই গরম গরম খিচুড়ি খেয়ে আসি। গরম গরম না খেলে সুখ নাই। সাথে ইলিশ মাছ ভাঁজা। আর দেরী মূরগীর ঝাল ফ্রাই। গত পরশু এক মাছ বিক্রেতা মসজিদের সামনে বসে ছিলো। সে সব মাছ বিক্রি করে ফেলেছে। দুটা রয়ে গেছে। দুটা দুই কেজি হবে। আমার মাছ নেওয়ার ইচ্ছা ছিলো না। তাই বললাম, দুটা দুই হাজার টাকা দাও। দিয়ে দিলো। আমিও নিয়ে নিলাম। মাছ দুটা কিনে জিতেছি। ভীষণ তেল হয়েছে। একটাতে আবার ডিম হয়েছে। সুরভিও বলেছে, মাছ দুটা ভালো হয়েছে। সেদিন বাসার সবাই মাওয়া গিয়েছিলো। আমি যাইনি। তাঁরা আমার জন্য দুই পিছ ইলিশ মাছ ভাঁজা এনেছিলো। খেয়ে আরাম পাইনি। তাই আজ ইলিশ খাবো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




