somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

চাচা কাহিনী

২০ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আনন্দবাজার পত্রিকা।

আমার চাচা হয়তো নিজেকে বিশ্ব প্রেমিক মনে করতেন।
হয়তো তার ইছা ছিলো বাংলাদেশের সব জেলায় তার একটা করে প্রেমিকা থাকুক। চাচা দেখতে মোটামটি ছিলেন। কিন্তু তার কিছু উচ্চারন ছিলো ভয়াবহ। যেমন সাংবাদিক কে বলতেন সামবাদিক। এক্সট্রা কে বলতেন এসটা। মনসুর কে বলতেন মনচুর। যার উচ্চারনের এই অবস্থা তার সাথে কোনো মেয়ে প্রেম করবে? এর উপর চাচা বেশ কৃপণ ছিলেন। কিন্তু আমি চাচার বেশ কয়েকজন প্রেমিকা দেখেছি। তারা সবাই সুন্দর।

চাচার পুরান ঢাকায় এক প্রেমিকা ছিলেন।
তাকে আমি দেখেছি। বেশ সুন্দর মেয়েটা। মেয়েটার নাম ছিলো রুবিনা। ওদের নিজেদের দোতলা বাড়ি ছিলো। রুবিনা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারতো না। ঢাকাইয়াদের সুরে কথা বলতো। এত সুন্দর একটা মেয়ে অথচ কথা বলতো- 'আব্বে হালায় কচ কি', 'ক্যালা জিগাইতা‌ছেন'?, 'বালাই আছচ মনে অইবার লইছে'। রুবিনাদের বাসায় একবার আমি আর আব্বা গিয়েছিলাম। পুরান ঢাকার আগামসি লেনে বাসা ছিলো।

একবার আমি পিরোজপুর যাবো।
তখন চাচা বললেন, আমি একটা নাম ঠিকানা দিচ্ছি তার সাথে দেখা করবে। পিরোজপুর গেলাম। চাচার ঠিকানায় গেলাম। চাচার প্রেমিকাকে দেখে আমি অবাক! মেয়েটা খুব সুন্দর। আমার চাচা সুন্দর মেয়ে ছাড়া প্রেম করতেন না। মেয়েটার নাম চন্দনা। একজন লোক কৃপণ, উচ্চারন ভালো না। সেই লোক সুন্দর মেয়েদের সাথে কিভাবে প্রেমে জড়ায়? আমার মনে আছে চাচা একবার এক রেস্টুরেন্টে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো। সেখানে তার প্রেমিকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো।

চন্দনাদের বাসায় এসে বিরাট বিপদে পড়লাম।
তাঁরা আমাকে তিন দিনের আগে যেতে দিবে না। অথচ আমার পিরোজপুরের কাজ শেষ। এখন আমি ঢাকা ফিরবো। তিন দিন তাঁরা আমাকে আদরে আদরে অতিষ্ট করে ফেলল। তাদের আদর ভালোবাসা মানে খাবার। সকালে তাঁরা আমাকে জোর করে দুই মগ খেজুরের রস খাইয়েছে। তাও খালি পেটে। খেজুরের রস নাকি খালি পেটে খেতে হয়। অথচ খেজুরের রস আমার পছন্দ না। বলেছে, বিকেলে এই রস জাল দিয়ে ঘন করে খেতে দিবে। তখন নাকি স্বাদ আরো বাড়বে।

খেজুরের রসের পর ভাপা পিঠা।
সেই ভাপা পিঠা রান্না ঘরে বসে গরম গরম খেতে হয়েছে। বিশাল সাইজের পিঠা। খাচ্ছি তো খাচ্ছি। শেষ আর হয় না। একটা খেলে দুপুরে আর কিছু খাওয়ার প্রয়োজন নেই। ভাপা পিঠা শেষ করার পর চালের আটার রুটি সাথে হাঁসের মাংস ভূনা। এত এত খেয়ে আমি ক্লান্ত, বিধস্ত। তারপর আমাকে তেল মালিশ করা হলো এক ঘন্টা। এবং নিয়ে যাওয়া হলো নদীতে। স্নান করলাম। আমি বলেছি, পুকুরে গোছল করে ফেলি। তাঁরা আমার কথা শুনলেন না।

দুপুরে খেতে বসে আমার মাথা নষ্ট।
টেবিল ভরতি খাবার। এত খাবার দেখে আমার গা ঘুলিয়ে উঠলো। আমি যতই না করি, তাঁরা ততই মিনতি করে। পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে। বাড়ির সকলে আমার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে। তাঁরা আমার প্লেটে খাবার দিয়ে পাহাড় বানিয়ে ফেলেছেন। যাইহোক, দুপুরে বিছানায় গেলাম। তারপর চন্দনা এসে হাজির। তার হাতে দুটা প্লেট। একটায় বিরাট সাইজের রসগোল্লা আরেকটায় চমচম। আমার ইচ্ছা করলো চন্দনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই।

তিনদিন পর মুক্তি পেলাম। ঢাকা ফিরলাম।
চাচা বললেন, শুধু মাত্র খাবার নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারনে আমি চন্দনাকে বিয়ে করিনি। অথচ মেয়েটা কি মিষ্টি দেখতে। এবং সহজ সরল। চাচা হাসতে হাসতে বললেন, ওরা খাওয়াতে খাওয়াতে মানুষ মেরে ফেলতে পারবে। এই হলো চাচা কাহিনী। আমার চাচা বর্তমানে যাকে বিয়ে করেছেন। অবশ্যই প্রেম করে। তার নাম রেহেনা। চাচী দেখতে সুন্দর। তাদের দুই ছেলে। আমার চাচা মনে হয় সুখে নেই। কারন সে ভোরবেলা বাসা থেকে বের হয় এবং রাত ১২ টার আগে বাসায় ফিরে না।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক রহমান আসবে, বাংলাদেশ হাসবে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৮


আমি যখন স্কুলে পড়তাম, দুপুরের শিফটে ক্লাস ছিল। একদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দেখি ছোটো মামা সংসদ টিভিতে অধিবেশন দেখছেন। কৌতূহল হলো, মামা এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছেন। আমিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটি ডায়াটের গল্প, যেভাবে ওজন কমিয়েছিলাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৮


১৬ ডিসেম্বরের খাবার ছিল। উপরের চায়ের ছবিতে ফেসবুকের দুই গ্রুপে দুটো পুরস্কার পেয়েছি প্রতিযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ।

মোবাইলে পোস্ট, ভুল ত্রুটি থাকিতে পারে, মার্জনীয় দৃষ্টিতে রাখবেন।

জব করি বাংলাদেশ ব্যাংকে। সারাদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×