somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজকুমারী পদ্মরেখা

২৩ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ ইন্সট্রাগ্রাম।

জমিদার প্রতাপ চন্দ্র দাস।
চব্বিশ পরগণার নদীয়া জেলায় তার জমিদারি। প্রতাপ একজন ভালো জমিদার। জমিদারদের যেসব খারাপ অভ্যাস থাকে প্রতাপের সেসব কিছুই নেই। তিনি প্রজাদের উপর কোনদিন অত্যাচার জুলুম করেন নি। যে কোন প্রজা যে কোনো সময় তার অন্দর মহলে প্রবেশ করতে পারে। কোনো বাঁধা নিষেধ নেই। জাতপাত প্রতাপ মানেন না। প্রতাপ ঘোড়ায় চড়ে প্রজাদের বাড়ি বাড়ি যেতেন। তাদের খোজ খবর রাখতেন। প্রতাপের বেশির ভাগ প্রজাই মুসলিম। মুসলিম প্রজাদের জমিদার হিন্দু। প্রতাপ তার প্রজাদের বললেন, আমাকে তোমরা ধর্ম দিয়ে বিচার করো না। আমি মানুষ। এটাই আমারা আসল পরিচয়। এক প্রজা সাহস করে বলেই ফেলল- তাহলে আপনি হজ্ব করুণ। হজ্বে যান। আমরা অনেক খুশি হবো। প্রতাপ বললেন, আমার প্রজারা খুশি থাকলেই আমি খুশি।

জমিদার প্রতাপ তার প্রজাদের খুশির জন্য হজ্ব করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
একদিন জমিদার প্রতাপ তার দল নিয়ে জাহাজে চেপে বসলেন। টানা তিন মাস নদী পথে থাকতে হলো তাকে। এক বছর পর প্রতাপ তার রাজ্যে ফিরলেন। ইংরেজ সরকার প্রতাপের কর্মকান্ডে ভীষন অবাক। সেই সময়ে এই ঘটনা একটা ইংরেজি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো। শিক্ষিত মহলে বেশ আলোচিত হয়েছিলো একজন হিন্দুর হজ্ব করা নিয়ে। এদিকে প্রতাপের প্রজারা ভীষন খুশি। তাদের জমিদার সুন্দর ভাবে হজ্ব করে ফিরে এসেছেন। তাদের জন্য রেশমি কাপড় এনেছেন, জমজম পানি এনেছেন। আর এনেছেন খেজুর। এর আগে চব্বিশ পরগনায় কেউ খেজুর খায়নি। অতি মিষ্ট স্বাদ। প্রজারা আরব দেশের ফল খেয়ে খুশি। প্রজারা জানেন আরব দেশ নবীর দেশ। নবীর দেশে গিয়েছে তাদের জমিদার। এবার তাদের ভাগ্য ফিরবে।

দলে দলে প্রজারা আসছে রাজ দরবারে।
তাঁরা আরব দেশের গল্প শুনতে চায়। প্রতাপ রাজ দরবারে বসে প্রজাদের আরব দেশের গল্প শুনাচ্ছে। মরুভূমির দেশের গল্প শুনে প্রজারা মুগ্ধ। প্রতাপ আরব দেশ থেকে এক মেয়েকে নিয়ে এসেছে। মেয়েটা মুসলমান। তাকে সে রক্ষিতা হিসেবে নিজের কাছে রেখেছে। রক্ষিতার নতুন নাম দেওয়া হচ্ছে পদ্মাবতী। প্রজাদের ধারনা পদ্মাবতী কোনো সাধানর মেয়ে নয়। এই মেয়ে বেহেশতের হুর। এমন রুপ পৃথিবীর কারো হতে পারে না। স্বয়ং আল্লাহকে প্রতাপকে এই হুর উপহার দিয়েছেন। এবার নদীয়া জেলায় আর কোনো অঘটন ঘটবে না। দেখা গেলো- নদীয়া জেলায় মানুষের ভাগ্য বদলে যেতে শুরু করলো। ফসল ফলতে শুরু করলো আগের চেয়ে দ্বিগুন। নদীতে জাল ফেললেই বড় বড় মাছ ধরা পড়ে। ঝড় তুফান হয় না। এক বছর পর দেখা গেলো দক্ষিন চব্বিশ পরগনায় কেউ দরিদ্র রইলো না।

পদ্মাবতী মরুভূমির দেশ থেকে এই দেশে এসে মুগ্ধ।
এই দেশে নদী আছে। চারদিক কি গাঢ় সবুজ! রোদ আছে কিন্তু রোদে তেজ নেই। মিষ্টি বাতাস। বাতাসে ধুলো উড়ে না। এই দেশে সারা বছর নানান রকম ফল ফলে। সেই ফলের স্বাদের তুলনা হয় না। মানুষ গুলো সহজ সরল। সবার মুখে হাসি। এই দেশের নারীরা ঘরের মধ্যে বন্ধী থাকে না। তাঁরা মাঠে ঘাটে কাজ করে। এরকম দেশ যে পৃথিবীতে আছে পদ্মাবতী জানতো না। অথচ পদ্মাবতীর জন্ম এক বেদুইন পরিবারে। তার বাবা মা তাকে লুকিয়ে রাখত। ভাগ্যিস প্রতাপ নামে একজনের সাথে তার দেখা হয়েছিলো। প্রতাপ তাকে ছিনিয়ে আনে নি। সে তার বাবা মার কাছ থেকে চেয়ে এনেছে। পদ্মাবতীও বুঝতে পেরেছিলো প্রতাপ দুষ্টলোক নয়। প্রতাপ তাকে স্ত্রীর সম্মান দিয়েছে। এখন সে জমিদারের স্ত্রী। মরুভূমিতে তাকে তাঁবু গেড়ে লুকিয়ে থাকতে হয় না। সবচেয়ে বড় কথা সে এখন স্বাধীন।

ইংরেজদের মধ্যে বেশ কিছু দুষ্টলোক ছিলো।
তাঁরা নদীয়া জেলার এত পরিবর্তন থেকে অবাক! তাঁরা একদিন দক্ষিন চব্বিশ পরগনায় আক্রমণ করলো। রাজকোষ লুট করলো। প্রজাদের ঘর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলো। গবাদি পশু গুলো আগুনে পুড়ে মরলো। ফসলের মাঠ নষ্ট করে দিলো। পুকুরে বিষ ছেড়ে দিলো। তাঁরা প্রতাপকে খুন করলো। এবং পদ্মাবতীকে অপহরন করলো। পদ্মাবতীকে নীল কুঠিতে নিয়ে যাওয়া হলো। টানা সাত দিন তাকে ধর্ষন করা হলো। এবং পদ্মাবতী মারা গেলো। এক কথায় বলা যায়- নদীয়া জেলাটাকে ইংরেজরা ধ্বংস করে দিলো। প্রজাদের দিয়ে জোর করে ইংরেজরা নীল চাষ করিয়ে নিচ্ছে। নিজের জমিতে ইংরেজদের ইচ্ছায় চাষ করতে হচ্ছে। অথচ প্রজারা সারা বছর খেয়ে না খেয়ে আছে। প্রথম পর্ব এখানেই লেখা শেষ। দ্বিতীয় পর্বে আর বিস্তারিত লেখা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×