somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মেজাজ খারাপ হলে আপনি কি করেন?

২৮ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লন্ডন শহর। সুন্দর ঝলমলে একটি দিন।
চারিদিকে ঝকঝকে রোদ। রোদে তাপ নেই। বাতাস আছে। সুন্দর সাজানো গোছানো রাস্তাঘাট আর ফুটপাত। লোকজন ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। অনেকখানি জায়াগা জুড়ে বিশাল এক বিল্ডং এর ছায়া পড়েছে। সেখানে অনেক গুলো কবুতর। এক বাচ্চা কবুতর গুলোকে খাবার ছিটিয়ে দিচ্ছে। কবুতর খাচ্ছে। সময় আনুমানিক এগারটা হবে। বালা নামের একলোক চা খাচ্ছে। লাল চা। তাঁরা বয়স ৬০ তো হবেই। মুখে দাঁড়ি আছে। তার পরনে লুঙ্গি। গায়ে ফতুয়া। হঠাত চারদিক থেকে সাদা শার্ট প্যান্ট পরা কমপক্ষে ত্রিশজন লোক বালাকে আক্রমণ করলো। তাদের প্রত্যকের হাতে দা, ছুরি ও চাপাতি। বালা তাদের দেখলো কিন্তু ভয় পেলো না। সে আপন মনে চা খেতে থাকলো। চা শেষ করে হয়তো সিগারেট ধরাবে।

ত্রিশজন লোক কাছে আসার আগেই বালার চা খাওয়া শেষ।
মুহুর্তের মধ্যে বালা ত্রিশজন কে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দিলো। খুবই করুণ ভাবে মেরেছে। মার খেয়ে এক একজন আকাশে উড়ে গেছে। কেউ কেউ ছিটকে পড়েছে গাড়ির উপর। কেউ ছিটকে পড়েছে তিন তলার ব্যালকনিতে। অথচ তাঁরা কেউ বালাকে একটা আঘাত করতে পারেনি। আমি মুগ্ধ হয়ে প্রতিটা দৃশ্য দেখছি। ব্যাক গাউন্ড মিউজিকটা দারুন। ৬০ বছর বয়সী বালার কর্মকান্ড দেখে আমি শিহরিত। মনে মনে বলছি সাবাশ বাপের ব্যাটা। এই বালাই মুভির নায়ক। ভারতের তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির খুবই জনপ্রিয় নায়ক। রাজনীতিও করেন। বাংলাদেশে অনেকে তাকে ভালোবেসে 'কাকু' বলে ডাকে। সে এখনও অল্প বয়সী নায়িকাদের বিপরীতে অভিনয় করেন। বাংলাদেশে কার সাথে বালার তুলনা করবো বুঝতে পারছি না। নায়ক জসিম?

মূলত আমার মেজাজ খারাপ থাকলে আমি বালার মুভি দেখি।
মারামারি, কাটাকাটি, মার খেয়ে আকাশে উড়ে যাওয়া, সস্তা কমেডি, ছোট পোশাক পড়ে নায়িকার ছাবলামি, নায়ক নায়িকার অদ্ভুত নাচ, অদ্ভুত কাহিনী, ভয়ঙ্কর ভিলেনের ডায়লগ ইত্যাদি সব কিছু আমার বিক্ষিপ্ত মেজাজ ধীরে ধীরে শান্ত করে দেয়। গতকাল এই মুভিটা দেখেছি। পুরো মুভি দেখতে পারিনি। ২৮ মিনিট দেখার পর ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছিলো। কিছুতেই জেগে থাকতে পারছিলাম না। অথচ পুরো মুভিটা দেখার ইচ্ছা ছিলো। মেরাজ খারাপ কেন হলো, সেই কথাটা বলা দরকার। কন্যাকে নিয়ে গিয়েছি পুতুল কিনে দেবো। অনেকদিন আগেই সে এই পুতুলটা পছন্দ করেছিলো। পুতুল কিনলাম। এখন বলছে ভ্যাট দিতে হবে। অথচ ভ্যাটের কোনো কাগজ দেবে না। আমি বললাম, ভ্যাট আমি অবশ্যই দিবো। সকলের ভ্যাট দেওয়া উচিৎ। কিন্তু আমাকে ভ্যাটের কাগজ দিতে হবে।

মুভির কাহিনী আর একটু বলে নিই।
নায়ক আসল গুন্ডার কলার চেপে ধরেছে। বলল, আজ তোকে মেরেই ফেলব হারামজাদা। কতবার তোকে বলেছি, ভালো হয়ে যা। আমার কথা শুনিস নি। এই বলে নায়ক গুন্ডার পেটে ছুরি ঢুকাবে। তখন কাঁদতে কাঁদতে গুন্ডার স্ত্রী এসে বালার পা ধরে। বলে আমার স্বামীকে মাফ করে দাও। ওকে মারলে আমি বিধবা হয়ে যাবো। আমি তোমাকে 'ভাই' ডাকলাম। ছেড়ে দাও আমার স্বামীকে। বালার তার বোনের কথা মনে পড়লো। বড় আদরের ছোট বোন। সেই বোন ছোটবেলায় হারিয়ে গেছে। এই ফাঁকে গুন্ডার স্ত্রী বালার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। বালা তো অবাক! তখন পেছন থেকে গুন্ডা এসে আবার বালার পিঠে ছুড়ি ঢুকিয়ে দেয়। গুন্ডা আর গুন্ডার স্ত্রী হাসতে হাসতে চলে যায় গাড়িতে করে। তখন বালা একটা বেঞ্চের উপর পায়ের উপর পা উঠিয়ে বসে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। রাস্তার লোকজন মায়া ভরে বালার দিকে তাকিয়ে থাকে। করুণ মিউজিক বাজছে।

এক মহিলার লন্ডনে রেস্টুরেন্ট আছে।
সেই রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে পুরো লন্ডনবাসী মুগ্ধ! লোকজন খেতে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো সিট খালি নাই। অপেক্ষা করে। রেস্টুরেন্টে ভিলের আসে। ভিলেন এই রেস্টুরেন্ট কিনে নিতে চায়। সে মহিলাকে বলে আমি তোমাকে ৫০ লাখ টাকা দিচ্ছি। রেস্টুরেন্ট ছেড়ে চলে যাও। এই রেস্টুরেন্ট এখন থেকে আমি চালাবো। মহিলা বলে আমি আমার রেস্টুরেন্ট বিক্রি করবো না। ভিলেন বলে ঠিক আছে দুই কোটি টাকা রাখো। মহিলা বলে নো, নেভার। ভিলেন রেগে গিয়ে মহিলাকে লাথথি দেয়। লাথথি খেয়ে মহিলা ছিটকে পড়ে। এই মহিলা মূলত মুভির নায়ক বালার মা। সে লন্ডনে রেস্টুরেন্ট চালায়। বালা যখন জানতে পারলো ভিলেন এসে তার মাকে মেরেছে। সে ভিলেনের আস্তানায় যায়। এবং সকলে মেরে বারোটা বাজিয়ে দেয়। মজার বিষয় হলো- বালা কাউকে হাত দিয়ে মারেনি। শুধু পা দিয়ে মেরেছে। মারামারি করার সময় বালা তার দুই হাত পকেটে ঢুকিয়ে রেখেছিলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৭
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×