somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

হাট্টিমাটিম ডিম

২০ শে মে, ২০২৩ রাত ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাঝে মাঝে কিচ্ছু খেতে ভালো লাগে না।
মাংস ভালো লাগে না। মাছ ভালো লাগে না। লাল সাক ভাজি ভালো লাগে না। ডাল ভালো লাগে না। অথচ গরুর মাংস আমার খুবই পছন্দ। রুই মাছ, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ আমার অনেক পছন্দ। গতকাল হয়েছে কি- খুব ক্ষুধা লেগেছে অথচ কিচ্ছু খেতে ইচ্ছা করছে না। হঠাত মনে হলো ডিম ভর্তা খাবো। গরম ভাতের সাথে ডিম ভর্তা দারুন লাগে। পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ পোড়া, সাথে সরিষার তেল। এক চিমটি লবন। সুরভি ডিম ভর্তা করে দিলো। আমার বড় তৃপ্তি করে খেলাম। মনে হলো অনেকদিন পর আরাম করে ভাত খেলাম। মনে মনে ঠিক করে রাখলাম- মাঝে মাঝে শুধু ডিম ভর্তা দিয়ে গরম ভাত খাবো।

ডিম একটা অদ্ভুত খাবার।
ডিম সিদ্ধ খাওয়া যায়, ভাঁজা খাওয়া যায়। নুডুলসের সাথে খাওয়া যায়। সকালে পরোটার সাথে ডিম পোচ খাওয়া যায়। ডিম ভূনা করে ভাতের সাথেও খাওয়া যায়। তবে ডাক্তারেরা বলেন, ডিম সিদ্ধ খাওয়া শরীরের জন্য খুব ভালো। ইদানিং দেখি অনেকে চিতই পিঠার উপর ডিম দিয়ে খায়। এখন বাজারে এক ডজন ডিম ১৫০ টাকা। আমার কন্যাকে চেষ্টা করি প্রতিদিন একটা ডিম খাওয়াতে। কন্যা মাঝে মাঝে আগ্রহ নিয়ে ডিম খায়। আবার মাঝে মাঝে একেবারেই ডিম খেতে চায় না। একবার সুরভি আর আমি বান্দরবান গিয়েছি। ভোর ছয়টায় বাস থেকে নেমেছি। বেশ ক্ষুধা পেয়েছি। সকালের আলো পুরোপুরি ফুটেনি। আমরা এক রুগ্ন রেস্টূরেন্টে বসে আছি। অনেকক্ষন পর আমাদের পরোটা আর ডিম ভাঁজা খেতে দিলো। মনে হলো এত মজার ডিম ভাঁজা কখনও খাইনি।

সুরভি আর আমি কীর্তনখোলা লঞ্চে করে বরিশাল যাচ্ছিলাম।
তখন গভীর রাত। শীলকাল ছিলো। লঞ্চে একলোক সিদ্ধ ডিম বিক্রি করছিলো। সুরভি আর আমি দুটো করে ডিম সিদ্ধ খেলাম। শীতকালে সিদ্ধ ডিম খেতে অন্য রকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। মোটামোটি ফেরীঘাট এলাকায় প্রায় সারা বছর সিদ্ধ ডিম পাওয়া যায়। গরম থাকে ডিমটা। সুন্দর করে ছিলে, সুতো দিয়ে মাঝখান দিয়ে কেটে একটু মরিচ মেশানো লবন দিয়ে দেয়। আব্বা মাঝে মাঝে হুটহাট ঢাকার বাইরে থেকে চলে আসতো। আমরা রাতের খাবার শেষ করে বিছানায় চলে যেতাম। আব্বা মাকে বলতো চট করে একটা ডিম ভেজে দাও। আর কিচ্ছু লাগবে না। সাথে একটা শুকনো মরিচ।

আমার কন্যা ফারাজা-
একদিন তাকে নিয়ে রাস্তায় বেড়াতে বের হয়েছি। টানা দুই ঘন্টা নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ালাম। কন্যার ক্ষুধা পেয়েছে। বাসায় যেতে কমপক্ষে এক ঘন্টা লাগবে। মেয়েকে কি খাওয়াই? বাইরের খাবার খাওয়ানো সুরভি একেবারে পছন্দ করে না। রাস্তায় দেখলাম একলোক সিদ্ধ ডিম বিক্রি করছে। কন্যা বলল, বাবা ডিম খাবো। কন্যাকে একটা ত্রিশ টাকা দিয়ে হাঁসের ডিম কিনে দিলাম। মেয়ে আগ্রহ নিয়ে খেলো। কোনো জোরাজুরি করতে হয়নি। এখন কন্যাকে প্রায়ই সিদ্ধ ডিম খাওয়াই। কলেজে পড়ার সময় কয়েকজন বন্ধু মিলে কক্সবাজার গিয়েছিলাম। ভর সন্ধ্যায় আমাদের অনেক ক্ষুধা লেগেছিলো। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিলো। কিন্তু রেস্টূরেন্টে রাতের খাবার হতে সময় লাগবে। তখন আমাদের প্রত্যেককে একটা করে ডিম ভাজি করে দিলো।

বিয়ের পর-পর সুরভি আর আমি অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতাম।
গল্প করতাম। মুভি দেখতাম। চা খেতাম। মাঝে মাঝে ডিম সিদ্ধ করে খেতাম। চুলায় পানিতে দুটা ডিম ছেড়ে দিতাম। সিদ্ধ হতে থাকতো। সুরভি আর আমি গল্প করতাম রান্না ঘরে দাড়িয়েই। অথবা সুরভি ব্যলকনিতে বসে থাকতো। আমি ঝটপট ডিম সিদ্ধ করে মাঝখান দিয়ে সমান করে কেটে দুভাগ করে গোল মরিচ আর লবন ছিটিয়ে দিতাম। এই কাজটা আমি এখনো মাঝে মাঝে করি। সুরভিকে অবাক করে দিয়ে ডিম সিদ্ধ করে নিয়ে আসি। তার খেতে ইচ্ছা না করলেও আমাকে খুশি করার জন্য খেয়ে নেয়। একবার স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে রাস্তায় অংক স্যারের সাথে দেখা। স্যারকে বললাম, স্যার কত পেয়েছি? স্যার বললেন, আন্ডা পেয়েছো। অনেকে ডিমকে আদর করে আন্ডা বলে।

মানব জীবনে ডিমের গুরুত্ব অপরিসীম।
এটা আপনাকে মানতেই হবে। ডিম ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব। এজন্য আমাদের মোরগ ও মূরগীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। একবার ভেবে দেখুন, বাজারে ডিম নেই। তখন আমাদের কি অবস্থা হবে! ডিম ছাড়া একটা দিন কল্পনা করা যায় না। ব্রুস'লির একটা মুভিতে দেখেছি- ব্রুসলি সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা গ্লাসে আট টা ডিম ভেঙ্গে, কাঁচা খেয়ে ফেলে। একটু লবনও সাথে দেয়নি। অবশ্য কাঁচা ডিম অনেকের পক্ষেই খাওয়া সম্ভব না। আমি নিজেও পারবো না। ব্রুসলি কি করে পারে কে জানে! ডিমের কথা লিখতে গিয়ে এখন আমার ডিম খেতে ইচ্ছা করছে। যাই ডিম সিদ্ধ দিয়ে আসি। না সিদ্ধ না। আজ ভাঁজা খাবো। সুরভি আমাকে একটা ডিম ভেজে দাও গরম গরম। তোমার ইচ্ছা হলে তুমিও একটা খেতে পারো। কিন্তু খবরদার আমার কাছ থেকে চাইবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ৮:২১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×