
এই ছবিটার খুব সুন্দর একটা ঘটনা আছে।
সেদিন শুক্রবার ছিলো। অফিস বন্ধ। সকাল থেকেই ঝুম ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিলো। সুরভি খিচুড়ি রান্না করেছে, সেই সাথে গরুর মাংস আর ইলিশ মাছ ভাঁজা। আমি ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছি। সুরভি বলল, খুব বৃষ্টি হচ্ছে। চলো ছাদে যাই। বৃষ্টিতে ভিজি। আমি বললাম, ভিজবো না। মুভি দেখছি। সুরভি মন খারাপ করে চলে গেলো। সুরভির মন খারাপ করে চলে যাওয়ার দৃশ্যটা দেখে আমার ভীষণ খারাপ লাগলো। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে বলে সে, কত কিছু রান্না করলো। রান্নার ফাঁকে আমাকে না চাইতেই দুবার দু কাপ চা দিয়ে গেছে।
সুরভির জন্য আমার খারাপ লাগছে।
বেচারি তো খুব বেশি কিছু আবদার করে নাই। অতি ক্ষুদ্র একটা ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এই আবদার রক্ষা করা যেতেই পারে। অথচ আমি বেচারির আবদার রক্ষা করলাম না। এটা অবশ্যই আমি অন্যায় করেছি। আমি ল্যাপটপ বন্ধ করে দিলাম। ক্যামেরা হাতে নিলাম। ছাদে গিয়ে দেখি সুরভি মন খারাপ করে গালে হাত রেখে সিড়িতে বসে আছে। সাথে সাথে আমি এই দৃশ্যটা ক্যামেরা বন্ধী করে ফেললাম। একদিন আমাদের কন্যাকে এই ছবিটা দেখিয়ে গল্পটা বলব। বাবা মায়ের ভালোবাসার গল্প শুনতে ছেলেমেয়েরা খুব পছন্দ করে।
যাইহোক, সুরভির চোখে পানি! বেচারি কাঁদছিলো!
আমি বললাম, স্যরি। আমি সুরভির হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেলাম। দুজন ইচ্ছা মতো বাচ্চাদের মতোণ বৃষ্টিতে ভিজলাম। এক ফাঁকে সুরভির কিছু ছবি তুলে দিলাম। আমার তোলা ছবি সুরভি পছন্দ করে। এবং সে প্রায়ই বলে তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ছবি গুলো আমিই তুলে দিয়েছি। বেশির ভাগ ছবি গুলো হারিয়ে গেছে। আর যে ছবি গুলো রয়ে গেছে, সে ছবি গুলো দেখলেই সেদিনের ঘটনা গুলো মনে পড়ে যায়। আজকে এই ছবিটা দেখে সেদিনের ঘটনাটা স্পষ্ট মনে পড়ে গেলো।
সুরভির সাথে দশটা বছর পার করে ফেললাম।
এত লম্বা সময় কি করে পার হয়ে গেলো বুঝতেই পারিনি! এই দশ বছরে একটুও ক্লান্তি হইনি, বিরক্ত হইনি। বরং তাকে ছেড়ে দূরে কোথাও গেলে আমার ভালো লাগে না। আমাদের কন্যার জন্ম হলো। এরপর সুরভির প্রতি টান যেন অনেক গুণ বেড়ে গেলো। একটা ছেলের জীবনে বিয়ের সময় একটা পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় পরিবর্তন হয় সংসারে সন্তান আসার পর।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


