somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের শাহেদ জামাল- (ঊনষাট)

২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ মোনালিসার বেবি ভার্শন।

শাহেদ জামালের কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
এখন সে রমনা পার্কে যায় না। যে মানুষের প্রধান কাজই ছিলো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রমনা পার্কে গিয়ে বসে থাকা। সেই শাহেদ জামাল গত পাঁচ মাস রমনা পার্কে যাচ্ছে না। রমনা পার্কের প্রতিটা গাছ শাহেদ জামালকে চিনতো। প্রতিটা ভিক্ষুক শাহেদ জামালকে চিনতো। এমনকি প্রতিটা কর্তব্যতর আনসার শাহেদ জামালের সাথে গল্প করতো। আসলে মানুষের জীবন দীর্ঘদিন একই রকম থাকে না। বদলে যায় জীবনযাপন ও জীবনযাপনের ধরন। এটা সব মানুষের ক্ষেত্রেই প্রজের্য্য। একসময় বছরের পর বছর শাহেদ জামালের রাতে ঘুম হতো না। এখন তার খুব ঘুম পায়। সকালে তো তার বিছানা থেকে উঠতেই ইচ্ছা করে না।

নীলার বিয়ে হয়ে গেছে। এখন সে আমেরিকা থাকে।
অথচ নীলা কথা দিয়েছিলো- মরে গেলেও সে অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। এখন নীলা দুই বাচ্চার মা। সংসার নিয়ে নাকি সে খুব ব্যস্ত। নীলা তো শাহেদকে অনেক ভালোবাসতো। হালদা নদীতে দুজন কত নৌকায় করে ঘুরেছে। হাতে হাত রেখেছে। ঠোঁটে ঠোঁট। কত আবেগ, কত ভালোবাসা! রাত জেগে কথা বলা। কত না সৃতি! কীর্তনখোলা- ৩ লঞ্চে দুজন সারারাত একসাথে ছিলো। একবার মাঝরাতে কূলাউড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে করে ঢাকা এসেছিলো। একবার তো দুজন মিলে হঠাত সিদ্ধান্ত নিলো দূরে কোথাও যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। তাঁরা একটা বাসে উঠে পড়লো। সেই বাস গিয়ে থামলো চিটাগাং শহরে। নীলার কি এসব মনে আছে?

মিরপুর থেকে শাহেদ জামাল বাসে করে কমলাপুর যাচ্ছিলো।
সময় তখন রাত ৯টা। খুব বৃষ্টি হচ্ছে। বাসে ধীরে চলছে। রাস্তায় পানি জমে গেছে। জ্যামও আছে বেশ। শাহেদ জামালের পাশে একলোক মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। সেই মোবাইলে শাহেদ জামালের চোখ পড়লো। অর্ধ নগ্ন মেয়েদের ছবি। শাহেদ জামাল চোখ সরিয়ে নিলো। অন্যের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে ভালো কাজ নয়। একটু পর নিজের অজান্তেই আবার পাশের সিটে থাকা লোকটার মোবাইলে চোখ গেলো। লোকটা এখন, মহাখালি এলাকার আবাসিক হোটেলের খোজ খবর জেনে নিচ্ছে। একটু পর লোকটা নেমে গেলো বাস থেকে। সে এখন যাবে মহাখালি আবাসিক হোটেলে। বাস থেকে নেমে যাবার আগে লোকটা কন্টাকটরের কাছ থেকে জেনে নিলো মহাখালির বাস কোথায় পাবে।

শাহেদ জামাল বাসে একটা ভিজিটিং কার্ড পেলো।
এক তান্ত্রিকের কার্ড। এই তান্ত্রিক ভারত থেকে তান্ত্রিকতা শিখেছে। রাস্তায় জ্যাম, রাস্তায় পানি জমে বেশ কিছু গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে। কমলাপুর বাস কখন যাবে কে জানে! অবশ্য শাহেদ জামালের তাড়াহুড়া নেই। কেউ তার জন্য অপেক্ষা করে নেই। সে থাকে আরামবাগের একে মেসে। যাইহোক, শাহেদ জামাল ভিজিটিং কার্ডে মন দিলো। তান্ত্রিকের নাম বইদ্র। সে বহু রকমের সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। কোনো মহিলার বাচ্চা না হলে- তার এক ফু'য়ে বাচ্চা হয়ে যাবে। ছেলে নেশা করে, নেশা বন্ধ করে দেবে, জমি নিয়ে সমস্যার সমাধানও সে করে দেবে, মেয়ের বিয়ে হয় না, সে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেবে। খুবই কামিলদার তান্ত্রিক।

কার্ডের অপর পিঠে বেশ কিছু জরুরী কথা লেখা আছে।
এই তান্ত্রিক বর্তমানে বান্দরবন আছে। তবে তার কছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বান্দরবন যাওয়ার প্রয়োজন নেই। উনি মোবাইলের মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। উনার আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে উনি আগে টাকা নেন না। ৭২ ঘন্টা পর (কাজ হওয়ার পর) বিকাশের মাধ্যমে টাকা নেবেন। আমার ইচ্ছা করছে আমি বইদ্র তান্ত্রিককে ফোন দেই। বলি- নীলাকে এনে দেন। আচ্ছা, এই তান্ত্রিক যদি সত্যি সত্যি নীলাকে এনে দেয়! শুধু কি নীলাকে আনবে? না সাথে নীলার দুই বাচ্চাকেও আনবে? থাক নীলাকে আনার দরকার নেই। সে বাচ্চাকাচ্চা আর স্বামী নিয়ে সুখে থাকুক। ভালো থাকুক।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:৫২
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসেন জুলাই/ আগস্টের মিনি পোস্ট মোর্টেম করি।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৪





গল্প শুনেন বলি-

আমরা পড়ালেখা গুছগাছ কইরে চাকরীতে ঢুকছি।হঠাৎ বন্ধু গো ইমেইলের গ্রুপে মেসেজ (নাম ধরেন রফিক), রফিক যে পাড়ায় (রেড লাইট এরিয়া) যাইতো সেখানের একজন সার্ভিস প্রোভাইডাররে বিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×