somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নির্বোধ তিতুমীর

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তিতুমীর। যার প্রকৃত নাম- সৈয়দ মীর নিসার আলী।
একবার ছোটবেলায় তিতুমীর অসুস্থ হয়। তাকে ওষুধ দেওয়া হয়। খুবই তিতা ওষুধ। সে তিতা ওষুধ হাসি মুখে খেয়ে নেয়। টানা একমাস সে এই তিতা ওষুধ খায়। বাড়ির সবাই ভীষন অবাক! তাই প্রথমে তার নাম হয় তেতো, এরপর তিতু এবং সবশেষে তিতুর সঙ্গে মীর লাগিয়ে হয়- তিতুমীর। তিতুমীর সবাইকে বললেন, ‘চিনে রাখ ওই শয়তান ইংরেজকে। ওঁরাই তো বাংলার আসল নবাব সিরাজদ্দৌলাকে সরিয়ে ছিল। আর চিনে রাখ এই ধনী জমিদার গুলোকে। এঁরা ইংরেজের দালাল। ওঁরা তোমাদের জমি কেড়ে নেয়। তোমাদের উপর অকথ্য অত্যাচার করে'।

তিতুমীরের পরিবারের লোকেরা নিজেদের হযরত আলীর বংশধর বলে দাবি করতেন।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে ধর্ম প্রচার করতে ভারতবর্ষে আসেন। ১৮২২ সালে তিতুমীর মক্কায় হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে যান। সেখানে তিনি পাচ বছর থাকেন। এই পাচ বছর তিনি কি করে জিহাদ করতে হয় সেটা শিখেন। তারপর দেশে এসে ঝাপিয়ে পড়েন। এক কথায় তিনি হিংস্র হয়ে পড়েন। তিতুমীর প্রজাদের একজোট করেছিলেন ধর্ম এবং জেহাদের ডাক দিয়ে। তিতুমীর তার গ্রামের দরিদ্র কৃষকদের সাথে নিয়ে জমিদার এবং ব্রিটিশ নীলকদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তিতুমীরের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে এক সময় ৫,০০০ এ গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু তিতুমীরের কোনো অস্ত্র ছিলো না, গোলাবারুদ ছিলো না। কামান ছিলো না।

তিতুমীরের প্রাথমিক শিক্ষা হয় তার গ্রামের বিদ্যালয়ে।
অর্থ্যাত মাদ্রাসায়। ফরিদপুর, বারাসাত আর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিরাট এলাকার উপর তিতুমীরের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত হল। পুলিশ এলো। জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনী এলো। কিন্তু তিতুর কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরে গেল সবাই। ১৮২৭ সালে তিতুমীর চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় পুরোদস্তুর ইসলাম প্রচার শুরু করেন। সর্বস্তরের জনগণকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। এবং একইসাথে ব্রিটিশবিরোধী প্রচারও করতে থাকেন। ইংরেজরা এবং জমিদারেরা তিতুমীরের উপর খুবই বিরক্ত। সে কৃষকদের খাজনা দিতে মানা করে দিয়েছে। এবং কৃষক সহ সব শ্রেনীর মানুষকে জমিদার ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে উসকে দিয়েছে।

তিতুমীর ১৭৮২ সালের ২৭ জানুয়ারি জন্ম গ্রহন করেন।
তখন থাইল্যান্ড ‘চক্রী বংশ শাসন করছিলো। আর ভারতে টিপু সুলতানের রাজত্ব চলছিলো। টিপু সুলতান ছিলেন ব্রিটিশদের ত্রাস। ব্যক্তিগত পর্যায়ে টিপু ধার্মিক মুসলিম ছিলেন। এদিকে বাঙ্গালা অক্ষরে সর্ব্ব প্রথম এক পুস্তক মুদ্রিত হয়। প্রকাশ করেন অসাধারণ বুদ্ধিশক্তিসম্পন্ন হালহেড সাহেব। তৎকালে রাজধানীতে ছাপার যন্ত্র ছিল না; অতএব উক্ত গ্রন্থ হুগলীতে মুদ্রিত হয়। অন্যদিকে, ১৭৭৮ সালের পর ব্রিটিশরা দক্ষিণ উপনিবেশগুলোতে মনোনিবেশ করে। ভারতবাসীর চেয়ে ইংরেজরা জ্ঞানে বিজ্ঞানে এগিয়ে ছিলো। এজন্য ইংরেজরা ভারতবাসীকে দীর্ঘদিন কোনঠাসা করে রেখেছিলো।

১৮ বছর বয়সে তিতুমীর কোরআনে হাফেজ হন।
আমাদের বাংলাদেশে কোরানে হাফেজ অনেক। এরা মূলত মানবেতর জীবনযাপন করে। যাইহোক, তিতুমীর বাঙ্গালা আমিরাত নামক স্বল্পস্থায়ী রাষ্ট্রের বাদশাহ ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ শাসন ও তাদের অনুগত অত্যাচারী হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং তার বিখ্যাত বাঁশের কেল্লার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। ব্রিটিশ সেনাদের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় এই বাঁশের কেল্লাতেই তার মৃত্যু হয়। ১৮৩১ সালে তিতুমীর নারিকেলবাড়িয়ায় গড়ে তোলেন বাঁশের কেল্লা। মূলত তিতুমীরের ইচ্ছা ছিলো জিহাদ করা। একটা জঙ্গী সংগঠন তৈরি করা। কিন্তু তিতুমীর সফল হয়নি। ইংরেজরা তাকে যথাসময়ে থামিয়ে দিয়েছে।

ঢাকা মহাখালিতে তিতুমীরের নাম একটা কলেজ আছে।
কলেজে লেখাপড়ার মান ভালো না। ক্লাশ না করলেও শিক্ষকেরা কিছু বলেন না। আছে জল্লাদ ছাত্রলীগ আছে। তারা বেপরোয়া। ১৯৭১ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ কলেজ কে তার নাম অনুসারে সরকারী তিতুমীর কলেজ নামকরণ করা হয়। তার নামে বুয়েট এ একটি ছাত্র হলের নামকরণ করা হয় তিতুমীর হল। বিবিসির জরিপে তিনি ১১ তম শ্রেষ্ঠ বাঙালি। ধার্মিকদের পছন্দ তিতুমীরকে। তিতুমীরকে আমি বীর বলব না। বলবো বোকা। সৌদি থেকে জিহাদ শিখে বড় বেশি ভুল করে ফেলেছেন। হজ্ব করে ফিরে এলেই চলতো। ইংরেজদের সাথে বাশ, তীর, বল্লম দিয়ে যুদ্ধ করতে গেলো। গুলি বারুদ কামানের সামনে বাশ, তীর, বল্লম টিকে থাকতে পারের?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮
১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।"

লিখেছেন এমএলজি, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৩০

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।" বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ কাজটি করা হয়নি বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।

বিষয়টি সত্য কিনা তা তদন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৪

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

ইয়াতিমদের সাথে ইফতার অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া, ছবি https://www.risingbd.com/ থেকে সংগৃহিত।

তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রীও তিনি। তাকেই তার বৈধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বছরশেষের ভাবনা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮


এসএসসি পাস করে তখন একাদশ শ্রেণিতে উঠেছি। সেই সময়ে, এখন গাজায় যেমন ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে, তখন বসনিয়া নামে ইউরোপের ছোট একটা দেশে এরকম এক গণহত্যা চলছিল। গাজার গণহত্যার সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উৎসর্গ : জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৮



খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল “হাঁসজারু” কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে—“বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।”
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা—
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×