somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

জীবনের গল্প- ৮৯

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

১। আমাদের গ্রামের এক চাচার গল্প।
উনি ঢাকায় থাকেন। ব্যবসা করেন। ঢাকায় তার সাথে প্রায়ই দেখা হয়। উনি মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসেন। বড় বড় কথা বলেন। তার কথা তিনটা- জমি কিনলাম, ফ্লাট কিনলাম, অমুক মন্ত্রীর সাথে বসে চা খেলাম। চাচা মানুষকে হাসিমুখে ঠকায়। বিনা দ্বিধায় আমি বলতে পারি, উনি ব্যবসা নাম দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করেন। নকল পন্য বিক্রি করেন। দুই বছর পরপর ব্যাংক থেকে লোন নেন। লোন পরিশোধ করেন না। যুগ যুগ ধরে তিনি এরকম করেই জীবনযাপন করছেন। ব্যাংক জালিয়াতি মামলায় এবার তিনি ধরা খেয়ে গেলেন। তার ছয় মাসের জেল হলো। দুই মাস জেল খাটলেন। তারপর জামিনে বের হলেন। আমাদের বাসায় এলেন। তার কারাগার জীবনের বর্ননা দিলেন। যেন তিনি বিশ্ব জয় করে এসেছেন। বর্তমানে আমার এই গ্রামের চাচা ব্যবসার পাশাপাশি দালালি পেশায় যোগ দিয়েছেন। দালালি ব্যবসায় মনে হয় রমরমা অবস্থা। সম্প্রতি তিনি একটা অফিস নিয়েছেন।

২। অল্প বয়সী এক ছেলে ঢাকা এসেছে।
তার থাকা খাওয়ার জায়গা নেই। ছেলেটার নাম হাসান। সে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে। হাসান একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতে শুরু করলো। মেয়ের বয়স ১৩ বছর। হাসানের বয়স বিশ বছর। তারা পালিয়ে বিয়ে করে ফেলল। এখন হাসান তার শ্বশুরের ভাড়া বাসায় থাকে। তার স্ত্রী গর্ভবতী। হাসান তার স্ত্রীকে ফার্মেসী থেকে ওষুধ এনে খাইয়ে দিয়েছে। স্ত্রীর ব্লিডিং শুরু হয়। সেই সাথে বমি। জমে মানুষ টানাটানি অবস্থা। এবরশন হয়ে গেছে। হাসানের শ্বশুর দরিদ্র মানুষ। সংসারে অভাব। হাসান তার শ্বশুরকে বলেছে ৬ লাখ টাকা দিতে হবে। আমি পোল্যান্ড যাবো। নইলে আপনার মেয়েকে তালাক দেওয়া ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নাই। শ্বশুরমশাই হাসানকে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, শুয়োরের বাচ্চা তুই আমার বাসা থেকে বের হ। এখন হাসান মসজিদে থাকে। সে তার স্ত্রীকে প্রতিদিন ফোন করে বলে, মসজিদে অনেক কষ্ট। কম্বল, বালিশ, চাঁদর কিচ্ছু নেই। শীতে অনেক কষ্ট হয় আমার। তোমার বাবাকে বুঝাও।

৩। ঘটনাটা আমাদের এলাকার।
বৃদ্ধা মহিলা একা ছাদে থাকেন। অথচ বাড়িটা তার নিজের। ছয় তলা বাড়ি। তার সব ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত। সবাই চাকরি করছে। ভালো ইনকাম তাদের। বৃদ্ধা মহিলার ছোট ছেলে বউ বাচ্চা নিয়ে থাকে আমেরিকা। বড় ছেলে চিটাগাং জেলা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক। এক মেয়ে সরকারী স্কুলের শিক্ষিকা। একসময় এই বৃদ্ধা তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। এখন ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে। ভালো চাকরি করছে, বিয়ে করেছে। কিন্তু বৃদ্ধা মায়ের দিকে কারো খেয়াল নেই। ছাদের ঘরটা অনেক ছোট। মহিলা আজ ২০ দিন ধরে ছাদে একা থাকেন। এখন শীত কাল। ছাদে রান্নার ব্যবস্থা নেই। অথচ তার কোনো ছেলেমেয়ে তাকে ছাদ থেকে ঘরে নিয়ে যেতে আসেনি। বয়স হয়ে গেলে, মানুষ অনেক অসহায় হয়ে যায়।

এই বৃদ্ধাকে আমি খালা ডাকি।
খালার দুই চোখে ছানি পড়েছে। চোখে ভালো দেখেন না। সুরভির কাছ থেকে জানতে পারি খালা এখন ছাদে থাকেন। একদিন ছাদে গেলাম খালার সাথে দেখা করতে। খালা সব ঘটনা খুলে বললেন। তার মেয়ের সাথে ঝগড়া করে তিনি ছাদে উঠে এসেছেন। আমি খালাকে বললাম, আমার ঘরে এসে থাকতে। আমার একটা ঘর খালি পড়ে আছে। খালা রাজী হলেন না। রান্না করে খালাকে খাবার দিলাম। খালা খাবার নিতে রাজী হলেন না। বললেন, আমার দাঁত নেই। কিছুই খেতে পারি না। খালার জন্য মায়া হয়। এই বুড়ো মানুষটা শীতের মধ্যে একা ছাদে আছেন। অথচ তার পাঁচজন ছেলেমেয়ে। বুড়ো বয়সে মানুষ কি খুব বেশি অসহায় হয়ে যান?

৪। দশ বছর ধরে রোজী ইটালী থাকে।
স্বামী সংসার নিয়ে বেশ ভালো আছে। রোজী প্রতি বছর তিনবার ঢাকা আসে। তাদের আর্থিক কোন সমস্যা নাই। রোজী বাবা মায়ের একনাত্র সন্তান। গত বছর রোজীর বাবা মারা যায়। ঢাকায় রোজীর দুটা বাড়ি। ঘটনা চক্রে রোজীর স্বামী আজমল এক নারীর সাথে প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে। আজলম হুটহাট ইটালী থেকে ঢাকা আসে। গোপনে সে সেই নারীর সাথে দেখা করে। তাদের মধ্যে অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। একদিন রোজী সব কিছু জেনে যায়। এরপর রোজী স্বামীর সাথে চিল্লাচিল্লি করে। স্বামী রোজীকে ইচ্ছা মতো মারে। রোজি স্বামীকে ইটালী রেখে বাচ্চা নিয়ে ঢাকা চলে আসে। সে আজমলকে জানিয়ে দিয়েছে, ডির্ভোস দিবে। আজমল বলেছে, ডির্ভোস দাও, সমস্যা নাই। আমার ভালোবাসার মানুষ আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৫২
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।"

লিখেছেন এমএলজি, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:৩০

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা জানাযা করে দ্রুত লাশ দাফন কর।" বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এ কাজটি করা হয়নি বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।

বিষয়টি সত্য কিনা তা তদন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৪

ব্যক্তি বেগম খালেদা জিয়া কেমন ছিলেন?

ইয়াতিমদের সাথে ইফতার অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া, ছবি https://www.risingbd.com/ থেকে সংগৃহিত।

তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রীও তিনি। তাকেই তার বৈধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বছরশেষের ভাবনা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮


এসএসসি পাস করে তখন একাদশ শ্রেণিতে উঠেছি। সেই সময়ে, এখন গাজায় যেমন ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে, তখন বসনিয়া নামে ইউরোপের ছোট একটা দেশে এরকম এক গণহত্যা চলছিল। গাজার গণহত্যার সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

উৎসর্গ : জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৮



খিচুড়ি

হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেল “হাঁসজারু” কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে—“বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।”
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা—
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×