
পরীবাগ ওভার ব্রীজ।
পরীবাগ ওভার ব্রীজের উপর দাড়ালে ভালো লাগে। ব্রীজের নিচে দিয়ে কত রকমের গাড়ি, বাস যাচ্ছে-আসছে। কখন কখনও বাস, গাড়ি গুলো থেমে থাকে লম্বা সময় ধরে। ট্রাফিক কখন ইশারা দেবে কে জানে! পরীবাগ ব্রীজের একদিকে বাংলামটর, অন্যদিকে শাহবাগ। বাংলামটরের কাছেই বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। যার প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ভালো একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন সায়ীদ স্যার। আপনি ইচ্ছা করলে তাদের হল রুম ভাড়া নিতে পারেন যে কোনো অনুষ্ঠানের জন্য। শাহবাগ মোড়ের দুই দিকে দুই হাসপাতাল। বারডেম হাসপাতালে সারাদিন ভিড় থাকে। মাঝে মাঝে শাহেদ বারডেম হাসপাতালের ক্যান্টিনে সকালের নাস্তা করে। হাসপাতালের ক্যান্টিনের খাবার কখনই ভালো হয় না। তবে আদ্ব-দীন হাসপাতালের ক্যান্টিনের খাবার ভালো।
আজকাল শাহেদ জামালকে পরীবাগ ওভার ব্রীজে দেখা যায়।
সে ইদানিং রমনা পার্কে যাচ্ছে না। তার ঘটনা কি? এত জায়গা থাকতে শাহেদ ওভার ব্রীজের উপর কি করে? ড্রোন ক্যামেরাটা কিছুটা নিচে নামালেই দেখা গেলো- শাহেদ জামাল একা নয়। তার সাথে একটা মেয়ে আছে। মেয়ের বয়স একুশ এর বেশি হবেই না। সুন্দর একটা নীল সাদা শাড়ি পরা। মেয়েটা খুব হাত নেড়ে কথা বলছে। মেয়েটার সাথে কি শাহেদ জামালের প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক? অবশ্য শাহেদ জামাল এখন একা। তিন বছর আগে তার প্রেমিকা নীলার বিয়ে হয়ে গেছে। নীলার দোষ নেই। দোষ শাহেদ জামালের। সে যখন নীলার সাথে প্রেম করছিলো, তখনও সে ভাঙ্গা কূলা ছিলো, আজও ঠিক তাই আছে। বেকার থাকলে কিছুই টিকে না। প্রেম ভালোবাসা, এমনকি সংসারও। এই জন্যই তো আজকাল এই তালাক হচ্ছে।
শাহেদ জামাল যদি একটা প্রেম করে, করুক না। সমস্যা কি!
বরং তার প্রেম করাটা জায়েজ। নাকি সে বেকার বলে প্রেম ভালোবাসা করতে পারবে না? বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও লেখা আছে, বেকার থাকলে প্রেম করা যাবে না। আমাদের নবীজি বলেছেন, বিয়ের বয়স হইলে বিয়ে করে ফেলো। টাকা পয়সা থাক বা না থাক। বিয়ের পর হয়তো আল্লাহ তোমার দিকে তাকাবে। তখন তোমার ভাগ্য ফিরে যাবে। সুবাহানাল্লাহ বললেন না? চিলাইয়া বলেন সুবাহানাল্লাহ। যাইহোক, আমিও মনে প্রানে চাই শাহেদ জামালের একটা প্রেম হোক। অবিবাহিত ছেলেমেয়েরা প্রেম ভালোবাসা না করলে কেমন শুকিয়ে যায়। তাদের চেহারা কেমন মলিন হয়ে যায়। প্রেম ভালোবাসা সুন্দর। প্রেম ভালোবাসা মানুষকে মহৎ করে। মানবিক করে। করে হৃদয়বান। সব মানুষের প্রেম ভালোবাসার মধ্যে থাকা উচিত।
পরীবাগ ওভার ব্রীজের বাম দিকে নামতেই একটা চা সিগারেটের দোকান আছে।
দোকানের মালিক সালাউদ্দিন ভাই। সালাউদ্দিন ভাইয়ের সাথে আমার বেশ সুসম্পর্ক। সালাউদ্দিন ভাইয়ের কাছে আমার বাকির খাতা আছে। গত সপ্তাহে সালাউদ্দিন ভাইয়ের চায়ের দোকানে বসে আছি। চা খাচ্ছি। নির্বাচন নিয়ে গল্প করছি। আমার অতি সস্তা কথাও সালাউদ্দিন ভাই খুব মন দিয়ে শুনেন। যাইহোক, এমন সময় নিজ চোখে দেখলাম, আমার বন্ধু শাহেদ জামাল পরীবাগ ওভার ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার পাশে সুন্দর মতো একটা মেয়ে। আমি দৌড়ে গেলাম তাদের কাছে। শাহেদ মেয়েটার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো। মেয়েটার নাম- পারুল। পারুল নামটা আজকাল কেউ রাখে না। পুরোন আমলের নাম। অবশ্য নাম কোনো বিষয় না। মানুষের আসল পরিচয় কর্মে। যার করম সুন্দর, তার সাত খুন মাফ।
সালাউদ্দিন ভাইয়ের চায়ের দোকানের পাশেই এক লোক পিজা বানায়।
সন্ধ্যার পর অনেক লোক এখানে পিজা খেতে আসে। পিজা বানায় রফিক ভাই। রফিকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। পিজা আমি পছন্দ করি না। কিন্তু রফিক আমাকে জোর করে পিজা খাওয়াবেই। যাইহোক, আমি পারুল ও শাহেদকে নিয়ে ব্রীজ থেকে নিচে নামলাম। রফিককের দোকানে গেলাম। রফিককে বললাম, আমার গেস্ট আছে। ভালো করে পিজা বানাও। আর কাউকে দিয়ে কোক আনাও। ঠান্ডা কোক। কোক ছাড়া পিজা ভালো লাগবে না। আমার বেশ খুশি খুশি লাগছে। শাহেদ আমার আশেপাশে থাকলেই আমার খুশি খুশি লাগে। শাহেদ একটা চমৎকার ছেলে। আমি সুরভিকে ফোন দিয়ে বললাম, ভালো কিছু রান্না করো। দুজন গেস্ট নিয়ে আসছি। অনেকদিন পর শাহেদে সাথে দেখা। অনেক গল্প জমা হয়ে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



