
গতকাল রাতে ঠিক দুটায় বিছানায় গিয়েছি।
শীতের রাত। ঘরে আরামদায়ক উষ্ণতা। নরম কম্বলের নিচে ঢুকে গেলাম। স্ত্রী, কন্যা ঘুম সেই বারোটা থেকে। আমিও মুহুর্তের মধ্যে ঘুমিয়ে গেলাম। খাপছাড়া কিছু স্বপ্ন দেখলাম। রক্ত, ছুরি, মরুভূমি, চায়নিজ কুড়াল হাতে একলোক আমাকে তাড়া করেছে। তার মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। আমি সমানে দৌড়াচ্ছি। দৌড়ে আমি ছোটবেলা থেকেই ভালো। দৌড় প্রতিযোগিতায় স্কুলে অনেক প্রাইজ জিতেছি। অবশ্য ছোটবেলায় স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় জয়ী হলে চায়ের কাপ, পিরিচ অথবা ভাতের প্লেট দিতো। যাইহোক, খতরনাক স্বপ্ন দেখে আমি বিক্ষিপ্ত। ঘুম স্বপ্ন এবং জাগরনের মধ্যে কেটে গেলো রাত। ফযরের আযানের আগে একটা স্বপ্ন দেখলাম। ভীষন ভয় পেলাম। ঘুম পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলো।
এক গ্লাস পানি খেলাম। পানি অনেক ঠান্ডা।
তখন মসজিদে আযান হচ্ছে। ফযজরের আযানটাই সবচেয়ে সুন্দর। আযান শেষ। কি করবো বুঝতে পারছি না। আবার ঘুমাবো, না জেগে থাকবো। আবার বিছানায় গেলাম। সূরা ইউনূস পড়লাম। এবং ঘুমিয়ে গেলাম। বেশ শান্তির ঘুম। বহুদিন পর সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখলাম। বহুদিন পর আব্বাকে স্বপ্নে দেখলাম। স্বপ্নটা এই রকমঃ আমি বিছানায় শুয়ে ভাত খাচ্ছি আর টিভিতে ফুটবল খেলা দেখছি। এমন সময় আব্বা বাইরে থেকে ঘরে আসলো। আব্বা একটা লাল গেঞ্জি পড়েছে। নতুন গেঞ্জি। আমাকে বলল, তুমি শুয়ে শুয়ে ভাত খাচ্ছো কেন? আমি বললাম, সবাই বসে বসে খায়। তাই আমি শুয়ে শুয়ে খাছি। এমন সময় মা এসে হাজির। মা আব্বাকে দেখেই রেগে গেলো। বলল, তোমার বয়সী কেউ লাল গেঞ্জি পরে?
আব্বারর লাল গেঞ্জি মা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
মা যত চিল্লাচিল্লি করে আব্বা তত রাগ করে। এদিকে আমি তাদের চিল্লাচিল্লিতে ফুটবল খেলা দেখতে পারছি না আরাম করে। তাদের চিল্লাচিল্লি কিছুতেই থামছে না। অবশ্য তাদের চিল্লাচিল্লিতে আমি অভ্যস্ত ছোটবেলা থেকেই। ঝগড়া না করলে তাদের পেটের ভাত হজম হয় না। স্বপ্নের এই পর্যায়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল সাতটা। তারপর মনটা খুশি খুশি লাগছে। অনেকদিন পর আব্বাকে স্বপ্নে দেখলাম। স্বপ্ন যা দেখলাম, ঠিক এরকম একটা ঘটনা ঘটেছিলো। সেই ঘটনাটাই স্বপ্ন আকারে কি করে ঘটলো কে জানে! সুরভি, ফারাজা গভীর ঘুমে। সুরভি উঠবে নয় টায়। ফারাজা উঠবে ১১ টায়।
আট টায় বাসা থেকে বের হলাম।
সুন্দর সকাল। শীতের সকাল। বাংলা মাঘ মাসের কত তারিখ আজ? মনে হয় ৩ বা ৪ তারিখ হবে। বড় রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে আছি। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। তখন মনে পড়লো আজ শুক্রবার। আজ ছুটির দিন। এখন কি করবো? বাসায় ফিরে যাবো? না, বাসা থেকে বের যখন হয়েছি, অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যাই। ধানমণ্ডি চলে গেলাম। সকালবেলা ধানমণ্ডি বেশ জমজমাট এলাকা হয়ে যায়। আমি অবস্থান করছি- কলা বাগান মাঠের পেছনে। এখানে আমার একটা প্রিয় চায়ের দোকান আছে। প্রচুর লোকজন সকালবেলা হাঁটতে বের হয়েছে। ভ্যান গাড়িতে করে টাটকা সবজি বিক্রি হচ্ছে। মাঠা বিক্রি হচ্ছে। প্রেসার মাপা হচ্ছে। ডায়বেটিকস টেস্ট। এক মহিলা গরম গরম ভাপা পিঠা বানাচ্ছেন। রাস্তার ধারেই সব রকম ব্যবস্থা আছে।
ক'দিন ধরে আমার খিচুড়ি খেতে ইচ্ছা করছে।
খিচুড়িতে ডালের পরিমান বেশী থাকবে। দুই রকমের ডাল দিয়ে খিচুড়ি। মুশরি ও খেসারির ডাল। গরম গরম ধোয়া ওঠা খিচুড়ী। শীতকালে ঠান্ডা খাবার ভালো লাগে না। খিচুড়ির সাথে গরুর মাংস ভূনা। গরুর মাংসের দাম কমে যাওয়ায় ছয় কেজি গরুর মাংস কিনে রেখেছিলাম। ধানমণ্ডি থেকে বাসায় গেলাম। সুরভি উঠেছে কিন্তু ছোট কন্যা উঠে নাই। সে জমিদারের কন্যা। ১১টায় আগে উঠবে না। একসময় আমি ১১ টায় ঘুম থেকে উঠতাম। তখন আমার আব্বা বেচে ছিলো। আমাদের পরিবারে একজন নতুন সদস্যের আগমন হয়েছে। তার নাম রাখা হবে সম্ভবত- মোহাম্মদ। ২/১ দিনের মধ্যেই মোহাম্মদ বাসায় আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



