
পদ্মজা উপন্যাসের প্রচ্ছদটা বেশ।
প্রচ্ছদে একটা ইগলের ছবি। উপন্যাসটি লিখেছেন, ইলমা বেহরোজ। রকমারিতে বইটি ৬০০ শ' টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যাইহোক, উপন্যাস পড়তে শুরু করলে প্রথম দিকে আপনার মনে হবে সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসের মাঝামাঝি এসে আপনার মনে হবে, থ্রিলার উপন্যাস। এবং শেষের দিকে মনে হবে, এডভেঞ্চার উপন্যাস। অথবা উপন্যাসটি পড়ে আপনি বিরক্ত হবেন। আমি নিজেও বিরক্ত হয়েছি। উপন্যাসে নতুন কিছু নেই। বাংলা সাহিত্যে এরকম উপন্যাসের অভাব নেই। সেই একই থিম, সেই একই প্লট।
পদ্মজা উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্ব আসবে বা এসে গেছে।
আমি সঠিক জানি না। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পদ্মজা। সে নরম স্বভাবের এবং ধার্মিক। পদ্মজা গ্রামে থাকে। তার বাবা একজন কৃষক। পদ্মজার মামা একদিন এসে হাজির হয়। মামার মাম হানিফ। হানিফ খুন হয়। এদিকে এক অভিনেতা পদ্মজার গ্রামে আসে শুটিং করতে। অভিনেতার নাম লিখন শাহ। লিখন শাহ পদ্মজাকে ভালোবেসে ফেলে। লেখিকা ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক দূর গেছেন। টুইস্ট ছিলো কিছুটা। যারা সত্যিকারের পাঠক, এবং যারা পৃথিবীর সেরা বই গুলো পড়েছেন, তারা পদ্মজা পড়ে আরাম পাবেন না।
পদ্মজা দারুণ সাহসী মেয়ে। পদ্মজা পড়াশোনা করতে চায়।
কিন্তু তার বাবা চায় না সে লেখাপড়া করুক। বাবা চায় মেয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার করুক। কিন্তু পদ্মজা লেখাপড়া চালিয়ে যায়। স্কুল পাশ করে শহরে গিয়ে কলেজে ভরতি হয়। এদিকে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে, এবং মারা যায়। যদিও পদ্মজা বাবার চিকিৎসার জন্য টাকার ব্যবস্থা করেছিলো। বাবার মৃত্যুর পর পদ্মজা ছোট ভাইবোনদের দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নেয়। এবং নিজের লেখাপড়া চালিয়ে নেয়। একদম সংগ্রামী মেয়ে পদ্মজা। আমার এক কাজিন আছে, সে নিজে অনেক পরিশ্রম করে ছোট ভাইবোনদের পড়িয়েছে। ছোট ভাই বোন আজ সবাই প্রতিষ্ঠিত। সাক্ষী আমি নিজে।
সুনীলের 'সাত কাহন' বইটা নিশ্চয়ই পড়েছেন।
সাত কাহনের প্রধান চরিত্র দীপা। এই বইটি পড়ার পর লেখিকা হয়তো সিদ্ধান্ত নেয়, পদ্মজা লিখবেন। যাইহোক, পদ্মজা নানান সামাজিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে যায়। উপন্যাসের মুল বিষয় একটাই। মেয়েরা চাইলে সমাজের বাধা বিপত্তি পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারে। উপন্যাসে পদ্মজার স্বামী দারুণ এক চরিত্র। চরিত্রটা আমার পছন্দ হইছে। উপন্যাসে সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে, নারীর ক্ষমতা, সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যা গুলো, শিক্ষার গুরুত্ব আর ভালোবাসার ক্ষমতা। আমি মনে প্রানে চাই নারীরা এগিয়ে যাক। নারীরা এগিয়ে গেলেই বিশ্ব এগিয়ে যাবে। আফগানিস্তানে নারীরা ভালো নেই। ধর্ম নারীদের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের নারীরা অনেক ভালো আছে।
পদ্মজা উপন্যাসটির লেখকের বয়স মাত্র ২৩।
লেখিকার জন্ম নেত্রকোনা। যদিও লেখিকা বেড়ে উঠেছেন সিলেট। পদ্মজা লেখিকার দ্বিতীয় বই। লেখিকার আরেকটি বইয়ের নাম, অর্থাৎ প্রথম বই 'মায়ামৃগ'। ব্যাক্তিগত ভাবে উপন্যাসটি আমার ভালো লাগেনি। আমি ইমদাদুল হক মিলনের নুরজাহান পড়েছি। বিশাল উপন্যাস।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



