বাংলাদেশের জন্য মরণ ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের কাজ অচিরেই পুরোদমে শুরু করতে পারে ভারত। বাংলাদেশের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর মূল নদী বরাকের টিপাইমুখে এই বাঁধ নির্মাণের প্রশাসনিক সব প্রক্রিয়া ভারত সম্পন্ন করেছে। এই বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে এতদিন ভারত সরকার পরিবেশগত অনাপত্তিপত্র বা ছাড়পত্র প্রদানে কিছুটা সময়ক্ষেপণ করেছিল। অবশেষে সেই ছাড়পত্রও হাতে পেয়েছে টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিপকো কোম্পানী। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে বাংলাদেশে আন্দোলনরত সংগঠন "অঙ্গীকার বাংলাদেশ" সূত্র জানায়, পরিবেশগত ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ায় টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ এখন অনেকটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এতদিন এই ছাড়পত্রের জন্য কাজ কিছুটা আটকে ছিল।
বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশে বড় রকম আর্থিক ও পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতে পারে। কারণ এই বাঁধ নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম দুটি প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার মূল নদী বরাকের টিপাইমুখ নামক স্থানে। এই বাঁধের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করবে ভারত। ফলে এই দুই নদীর মিলিত স্রোতধারা মেঘনা নদীর অববাহিকার অন্ততঃ আটটি জেলা- সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রত্যক্ষভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে। এতে সুরমা, কুশিয়ারা ও মেঘনা নদীতে শীতকালে পানির আকাল এবং বর্ষায় প্রবল ঢল নামার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কৃষি উৎপাদনে ধসসহ নানারকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
আমার প্রশ্ন হল নদী তো কোন ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। যদি কোন নদী একটি দেশে উৎপত্তি হয়ে ঐ দেশের মধ্য দিয়ে সাগরে পড়ে তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু যে নদী বেশ কয়েকটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তা কেন একটি দেশ বাঁধ দিয়ে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করবে যা অন্য দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে? এ কোন বন্ধু সুলভ আচরণ? আমাদের কি কিছু কারার নেই? আসুন আমরা সোচ্চার হই এর বিরুদ্ধে। এখনি যদি আমরা কিছু করতে না পারি তাহলে এর খেসারত দিতে হবে আগত দিনগুলিতে।
তথ্য সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক : ০১/১১/২০০৮ ইং।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




