somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসঙ্গ শর্ট ড্রেস ও পশ্চিমা চিন্তাভাবনায় আধুনিকতার নামে আদর্শচ্যুতি - পর্ব ১

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
প্রসঙ্গ শর্ট ড্রেস ও পশ্চিমা চিন্তাভাবনায় আধুনিকতার নামে আদর্শচ্যুতি - পর্ব ১
(Short dress fashion and change in US mentality)



----- ড. রমিত আজাদ
১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসের কোন এক দিনে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য পাড়ি জমিয়েছিলাম ইউরোপে। মহাশক্তিধর দেশের দৃষ্টিনন্দন মৃত্তিকা ও পট্টনের অত্যাধুনিকতায় প্রতি মুহূর্তেই ধাঁধিয়ে ধাঁধিয়ে উঠছিলো আমার এই প্রাচ্যদেশীয় রক্ষণশীল পশ্চাদপদ দুটি কনীনিকা। এত এত নান্দনিকতার মধ্যে যে কয়েকটি জিনিস দৃষ্টিকটু লাগছিলো তার মধ্যে দুটি হলো মেয়েদের স্বল্পবসন আর নারী-পুরুষের প্রকাশ্য আলিঙ্গন-চুম্বন দৃশ্য। প্রথম প্রথম এগুলো দেখে নিজের কাছেই নিজে লজ্জা পেয়ে যেতাম, তারপর একসময় চোখ সয়ে এলো। তবে মাঝে মাঝে কয়েকটা প্রশ্ন মনের কোনে উঁকি দিত, "পুরুষরা স্বাভাবিক পোষাকেই চলাফেরা করে, অথচ শুধু মেয়েরাই কেন এত সংক্ষিপ্ত অথবা আটসাঁট পোষাকে চলে?, "এরকম শর্ট ড্রেসের প্রচলন কি তাদের আবহমান কালের ঐতিহ্য, নাকি পরবর্তিতে তার প্রচলন হয়েছে? যদি পরবর্তিতে তা হয়ে থাকে, তবে তা কবে থেকে শুরু হলো? কেন শুরু হলো?"
তখন তো আর ইন্টারনেট-এর মত এত উপকারী বন্ধু ছিলোনা যে ক্লিক করলেই সব তথ্য পেয়ে যাবো। ভরসা ছিলো পত্র-পত্রিকা, সেখানে যা ছাপা হবে তাই জানতে পারবো, যা ছাপা হবেনা তা যদি জানতে চাই তাহলে হয় অপেক্ষা নয়তো গ্রন্থাগারে গিয়ে খাটাখাটুনি করা। তাই দ্রুত প্রশ্ন দুটির উত্তর পাইনি। তবে একটা বিষয় মনের আকাশে মাঝে মাঝে ঝিলিক দিতো। বিটিভির কল্যাণে মার্কিনী যে ফিল্মগুলো পর্দায় দেখতে পেতাম সেখানে তো নারীদের শর্ট ড্রেসে দেখিনাই, বরং খুব লম্বা ও ঢোলা ড্রেস এমনকি জামার হাতাও ছিলো ফুল স্লিভ। তার মানে এই সেদিনও সেখানকার নারীরা শালীন পোষাক পরিধান করতো। তাহলে পোষাক থেকে কাপড়ের পরিমান কমতে থাকে ধীরে ধীরে, সেই সাথে খুব সম্ভবত আরো অনেক কিছুই কমতে থাকে।
১৯৭০ সালে সংঘটিত রিচার্ড নিক্সনের 'ওয়াটারগেট কেলেংকারী' তো একসময় মানুষের মুখে মুখে ফিরতো। চাকুরীপ্রার্থীরা ইন্টারভিউতে প্রা্যশ্ঃই ঐ বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতেন। বেচারা নিক্সনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারটাই ধ্বসে গিয়েছিলো এক ধাক্কায়। তবে মার্কিনীরা এটা প্রমাণ করতে পেরেছিলো যে, নৈতিকতার প্রশ্নে তারা ছাড় দেয়না। একই কথা বলা যায় Gary Warren Hart-এর ক্ষেত্রে, আরেকটু হলেই ১৯৮৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু বেচারা! হঠাৎ মিডিয়ায় চলে এলো Donna Rice-এর সাথে উনার রোমান্টিক এ্যাফেয়ারের গোপন কাহিনী। ব্যাস সেখানেই সমাপ্তি রাষ্ট্রপতি হওয়ার বাসনা। মার্কিনীরা আরো একবার প্রমাণ করলো, নৈতিকতার প্রশ্নে তারা ছাড় দেয়না।
কিন্তু ১৮০ ডিগ্রী উল্টা ঘটনা দেখলাম যখন সুদর্শন রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটন-এর বিরূদ্ধে এক্সট্রামেরিটাল এ্যাফেয়ার থাকার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও ইমপিচমেন্ট আনা সম্ভব হলোনা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগলো, "মার্কিনীরা কি নৈতিকতার প্রশ্নে ছাড় দিতে শুরু করেছে?"

এই উন্নতি/অবনতি তাদের সমাজে ঘটলো কেন? এটা কি প্রাকৃতিক স্বাভাবিকতা? নাকি এক গভীর ষড়যন্ত্র?
আমার সৌভাগ্য, দর্শনের একজন খুব ভালো একজন অধ্যাপক পেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। মার্কিন সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন, ক্লিনটন স্ক্যান্ডাল ও ইমপিচমেন্টের ব্যর্থতার উপর তিনি আমাদের কিছুটা আলো দিয়েছিলেন, তখন বিষয়টি সম্পর্কে আমার ধারনা অনেকটাই স্বচ্ছ হয়ে এসেছিলো।
পরবর্তি পর্বে এই বিষয়ে লিখবো।
(ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর বিজয় আমি কামনা করিনি, তবে তার বিজয়ে মর্মাহত হলেও হতবাক হইনি)

নীচে টেনিস খেলো্যাড়দের সেকাল ও একালের দুটি ছবি দিলাম। ছবিদুটি সেকাল ও একালের কথা বলছে।





সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৯
১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×