somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিল্লী কা লাড্ডু - পর্ব ১১

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
দিল্লী কা লাড্ডু - পর্ব ১১
--------------------------- রমিত আজাদ



(পূর্ব প্রকাশিতের পর থেকে)

নিজ দেশী প্রেমিকার স্বাদ-ই হয়তো আলাদা। নিজ দেশী এক প্রেমিকা না থাকলে অতৃপ্তি থেকেই যায়। হাসানের প্রবাসী ঘনিষ্ট বন্ধু সোহাগ বহু বিদেশী রমনীর সঙ্গ নিয়েছে, কিন্তু বিয়ে করার জন্য এসেছিলো বাংলাদেশে। তার সিদ্ধান্ত ছিলো, বিদেশিনীকে সে তার বধু বানাবে না। এই নিয়ে হাসানের সাথে একবার সোহাগের বিতর্ক হয়েছিলো। তারা শুনেছিলো যে বার্মার নেত্রী 'অং সান সূচী'-র প্রথম জীবনের প্রেমিক নাকি একজন বাংলাদেশী ছিলেন। ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে-র একঝাক তরুণ যখন তরুণী সূচী-র জন্য উদগ্রীব ছিলো, সূচী তখন বিভোর ছিলো এক বাঙালী তরুণের প্রেমে। তবে সেই তরুণের সাথে শেষমেশ তার বিবাহ বন্ধন হয় নি! সোহাগ বলেছিলো, "স্বাভাবিক! ঐ বাঙালী তরুণটি ভুল কিছু করেনি। বিদেশিনীর সাথে প্রেম করা যায়, তাদেরকে অঙ্কশায়িনীও করা যায়, তবে তাদের বিবাহ না করাই ভালো। বেশীরভাগ উদাহরণ এরকমই।" হাসান বলেছিলো, "কেন বিদেশিনী বিয়ে করা যাবে না? পরিসংখ্যান বাদ দে। আবেগ বলে কি কিছুই নেই? একটা বিদেশী মেয়ের আবেগ কি দেশী মেয়ের চাইতে কোন অংশে কম বা বেশী? বিরহে সকলেই বেদনাতুর হয়! মানুষের মন, মানুষেরই মন!" যাহোক পরবর্তীকালে ব হু বিদেশিনীর সাথে অন্তরঙ্গতা কাটানো সোহাগ নিজ দেশী মেয়েকে বিয়ে করার পর বাসর করার জন্য উদগ্রীব ছিলো!



সুনিতাকে নিয়ে কনাট প্লেসে বেরিয়ে হাসান ভাবতে শুরু করলো, কিভাবে ইন্ডিয়া গেটে যাবে।
হাসান: সুনিতা।
সুনিতা: হাঁ।
হাসান: এখান থেকে ইন্ডিয়া গেট কতদূর?
সুনিতা: কাছেই। খুব দূরে নয়!
হাসান: কিভাবে যাব?
সুনিতা: ইয়োর উইশ।
হাসান: আমি ইউরোপে অনেক মেট্রো দেখেছি। তবে ঢাকায় কোন মেট্রো নাই!
সুনিতা: ঢাকা-মে মেট্রো নেহি হ্যাঁয়?
হাসান: হো যায়গি। কন্সট্রাকশন চলরাহা হ্যাঁয়।
সুনিতা: ন্যাচারাল! দিল্লীর মেট্রো-ও খুব পুরাতন না। ১৯৯৮ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০০২ সালে দিল্লি মেট্রোর প্রথম অংশ রেড লাইন চালু হয়।
হাসান: এনিওয়ে, আমরা কি মেট্রোতে যাবো?
সুনিতা: হামলোগ তো দো হ্যায়। মেট্রোমে যাওগি তো আসি রূপেয়া লাগে গা। অটোমে যাওগি তো ভি আসি রূপেয়া লাগে গা। আভ তুম ফয়সালা করো।
ভারতীয়-রা যে, প্রাকটিকাল লাইফে টাকার পাই পাই হিসাব করে এটা হাসান খুব ভালোভাবেই জানে। আনিতা ধনী পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও এরকম চুলচেরা হিসাব করতো!
হাসান: ঠিক হ্যায়, অটো-মে চলো।



কোন বাহনে চড়বে এটা আসলে হাসানের কাছে ফ্যাক্টর না। সে বরং অটো বা ট্যাক্সিতে চড়তেই বেশী আগ্রহী। তাহলে হিস্টোরিক এই শহরটাকে ভালোভাবে দেখা যাবে। কিন্তু দিল্লী মেট্রোতে সে একবার হলেও চড়তে চায়, জাস্ট দিল্লীর মেট্রো-টা কেমন এটা জানার জন্য। এই ওয়াক্তে তার আশাটা পূর্ণ হলো না!

রাস্তার পাশে কিছু অটো দাঁড়িয়ে আছে। এগুলোকে দেখলে হাসানের মেজাজ খারাপ হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে এই ধান্দাবাজগুলোকে দেখেছে হাসান! এরা যান-বাহন মাফিয়া। কোন এক পার্কিং দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর যাত্রীর সাইকোলজি স্টাডি করে বুঝতে পারে, কাকে দিয়ে কি দাও মারা যাবে। এত ভালো সাইকোলজি ওরা বোঝে কিভাবে? ড্রাইভিং ছেড়ে সাইকোলজিস্ট হিসাবে কাজ করলে বোধহয় নাম করতো! হাসান দিল্লীর বাহন মাফিয়াদের এড়াতে চাইলো। ভাবলো একটু সামনে এগিয়ে রাস্তার পাশ থেকেই একটা অটো ধরবে। কিন্তু হাসান কয়েক পা বাড়াতেই, অটোওয়ালাদের কয়েকজন এগিয়ে এলো। "কাঁহা, যায়েগি? ইন্ডিয়া গেইট? আইয়ে আইয়ে, হামারা অটো মে আইয়ে।" মেজাজ গরম হলো হাসানের! তারপরেও তাদের একজনকে জিজ্ঞাসা করলো, "কিৎনি রূপেয়া লেগা?"
"দু সো, রূপেয়া দিজিয়ে।"
শুধু শুধু কি আর ওদের উপর রাগ করে হাসান! আশি টাকার ভাড়া দুইশত টাকা চায়!
হাসান: নেহি।
অটোওয়ালা: কিৎনি দেগা?
হাসান: আসি রূপেয়া দিউঙ্গা!
এবার অটোওয়ালা তাচ্ছিল্যের ভঙ্গী করলো।
অটোওয়ালা: একসো পচাশ রূপেয়া দেগা, পৌছ দিউঙ্গা ইন্ডিয়া গেট তক। আগার কম দেগা তো গেট তক নেহি, রাস্তে তক যাউঙ্গা।
হাসান: আসি রূপেয়া কা জিয়াদা নেহি দিউঙ্গা। আপ পৌছ দেগা ইন্ডিয়া গেট তক।
অটোওয়ালা: নেহি। কম হ্যায়।
হাসান: ঠিক হ্যায়। ম্যায় মেট্রো মে যাউঙ্গা।
অটোওয়ালা: মেট্রো-মে ভি আসি রূপেয়া পড়েগা।
হাসান: জানতা হু। (উদাসীন ভাব করে বললো হাসান)
অটোওয়ালা: ঠিক হ্যাঁয়। বইঠিয়ে।

হাসান সুনিতাকে নিয়ে উঠে বসলো, অটোরিকশায়।
সুনিতা: তুম বার্গেইন তো আচ্ছা করতা হ্যায়!
হাসান: তুমি হেল্প করলে না কেন?
সুনিতা: ইয়ে মামুলী কাম হ্যায়! তুম খোদ্ কর সকতা!
হাসান: ওকে ডীয়ার!
সুনিতা: বাই দ্যা ওয়ে, ইয়ে লোগ আচ্ছি নেহি হ্যাঁয়!
হাসান: মুঝে মালুম হ্যাঁয়।



দিল্লীর এদিককার রাস্তাগুলো ক্লিয়ার। যানজট নেই। প্রসস্ত ব্যুলভার দিয়ে চলছে অর্ধ-খোলা অটোরিকশা বা স্কুটার। হাসানের পাশে বসা সুনিতার মেঘকালো কেশ বাতাসে পতপত করে উড়ছে! নারীর উড়ন্ত খোলা চুল এক ধরনের বিজয় নিশান। যেই নিশান পুরুষের মনকে জয় করে! তাই যুগে যুগে কবি পুরুষ এই নারীকেশ নিয়ে রচনা করেছে কতশত কবিতা! হাসানের হঠাৎ মনে হলো, এখন এক পশলা বৃষ্টি হলে মন্দ হতো না! রূপসী তরুণী-কে পাশে নিয়ে হাসান এক কল্পজগতে প্রবেশ করলো। যেখানে, আছে হাসান আর আনিতা, উহু হাসান আর সুনিতা। বৃষ্টিতে উচ্ছল হয়ে তারা দুজন ভিজছে 'মঞ্জিল' সিনেমার আমিতাভ বচ্চন আর মৌসুমী চ্যাটার্জীর মত! ভিজে ভিজে তারা দিল্লী-র সবগুলো ল্যান্ডমার্ক পরিদর্শন করছে! একটা কবিতা মনে পড়লো হাসানের,

বৃষ্টি ছিলো, বর্ষা ছিলো,
বজ্র ছিলো খুব!
আমি ছিলাম উচ্ছসিত,
তুমি ছিলে চুপ!

তাও তো তুমি ছিলে পাশে,
মেঘরা ছিলো কাছে।
মেঘবালিকার চুল ভিজেছে,
জল নেচেছে ঘাসে!

স্বপ্ন ভেঙে সুনিতার দিকে তাকালো হাসান। না, কোন বৃষ্টি হয়নি। দিল্লীর শুষ্ক আবহাওয়ায় সুনিতার চুল নামক বিজয় নিশান উড়ছে!
ইন্ডিয়া গেইট পর্যন্ত নিয়ে এলো, অটোওয়ালা। হাসান একটা দুইশত রূপীর নোট এগিয়ে দিলো। হাসানের কাছে একশত রূপীর নোটও ছিলো, তারপরেও দুইশত রূপীর নোট দিলো, কারণ তার ভাংতি দরকার। হাসান মার্ক করেছে যে, বাংলাদেশের মত ইন্ডিয়াতেও ভাংতি টাকার ক্রাইসিস আছে! নোট-টি পকেটে পুরে অটোওয়ালা একটা একশত টাকার নোট এগিয়ে দিলো।
হাসান: আওর বিশ রূপেয়া দিজিয়ে।
অটোওয়ালা: নেহি। মান লিজিয়ে। স রূপেয়া হি ঠিক হ্যায়!
হাসান: হাম তো সমঝোতা কিয়া, আসি রূপেয়া দিউঙ্গা।
অটোওয়ালা: সরকার! স রূপেয়া হি ঠিক হ্যায়। আপ মান লিজিয়ে।

মেজাজ গরম করে নেমে পড়লো, হাসান। মনে মনে বললো, "যা, তোরে ভিক্ষা দিলাম বিশ টাকা!"
সুনিতা, আগেই নেমে পড়েছিলো অটো থেকে। তাই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ঝগড়া শুনেনি সুনিতা।

সুনিতা: কেয়া হুয়া?
হাসান: (মেজাজ খারাপ করে) কুছ নেহি!
সুনিতা: কুছ তো জরুর হুয়া!
কি বলবে বুঝতে পারছিলো না হাসান। ঐ ইন্ডিয়ান অটোওয়ালা বাটপারী করেছে বলে কি এখন ইনোসেন্ট সুনিতার উপর রাগ ঝাড়বে? না, সেটা ঠিক হবে না। তার নিজের দেশেও তো কত বাটপার আছে। তার মানে তো এই না যে, হাসানও একজন বাটপার!

হাসান: চলো।
সুনিতা: মেরা লাগতা হ্যায়, কুছ হুয়া। তুম ছুপানা চাহতা হ্যায়!
হাসান: কুছ নেহি ডীয়ার। চলো গেইট দেখুঙ্গা।
হাসান লক্ষ করলো যে, এই গেইট-কে ঘিরে একটা বিশাল জায়গা খালি। এবং এখানে অনেকগুলো চওড়া সড়ক আছে। এরকম মনুমেন্ট এরিয়া ইউরোপেও দেখেছে হাসান। একটা চওড়া রাস্তা পার হয়ে গেইট এলাকায় ঢুকলো হাসান ও সুনিতা। বেশ গরম লাগছিলো।

হাসান: বেশ গরম লাগছে!
সুনিতা: ঢাকা মে গরমি নেহি হ্যায়?
হাসান: হ্যাঁ, ঢাকাতেও গরম আছে। তবে তাপমাত্রা এখানকার চাইতে কম। কিন্তু ঢাকাতে অন্য সমস্যা। হিউমিডিটি বেশী হওয়ার কারণে প্রচুর সোয়েটিং হয়। যেটা দিল্লীতে হচ্ছে না। এনিওয়ে, আইসক্রীম খাবে?
সুনিতা: চলে গা।
হাসান: কৌন সা আইসক্রীম তুমহারা পসন্দ হ্যায়/
সুনিতা: আইসওয়ালা লাও, লেমন ফ্লেভার কি।

মিটার দশেক দূরে, আইসক্রীম ভ্যানে করে এক বিক্রেতা আইসক্রীম বিক্রী করছিলো। সুনিতাকে দাঁড় করিয়ে রেখে তার দিকে এগিয়ে গেলো হাসান।
হাসান: আইসক্রীম হ্যাঁয়?
আইসক্রীমওয়ালা: জরুর হ্যাঁয়। কৌনসা আইসক্রীম লেগা?
হাসান: উয়ো লেমনওয়ালা আইসক্রীম। দো পিস দিজিয়ে।
আইসক্রীমওয়ালা: লিজিয়ে।
হাসান: কিৎনি রূপেয়া?
এবার আইসক্রীমওয়ালা হাসানের দিকে তাকালো। মনে হলো সে কিছু একটা মাপছে!
আইসক্রীমওয়ালা: বিস রূপেয়া দিজিয়ে।
হাসান: বিস? নেহি, পনরো রূপেয়া দিউঙ্গা।
আইসক্রীমওয়ালা: ঠিক হ্যাঁয়। দিজিয়ে পনরো রূপেয়া।
(পরে হাসান জেনেছিলো যে, আইসক্রীমওয়ালাও হাসান-কে ঠকিয়েছিলো)
আইসক্রীম নিয়ে সুনিতার দিকে এগিয়ে গেলো হাসান।





গেরুয়া রঙের গেট-টির উপরে রোমান হরফে বড় করে লখা 'INDIA'। ইন্ডিয়া গেট ভারতের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি-কে দিল্লির অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ধরা হয় (যদিও দেখার পর হাসানের মনে হয়েছিলো যে, এটা আরেক দিল্লী-কা লাড্ডু, দেখলেও পস্তাবে, না দেখলেও পস্তাবে!)। প্যারিসের আর্ক দে ত্রিম্ফের আদলে ১৯৩১ সালে নির্মিত এই সৌধটির নকশা করেন স্যার এডউইন লুটিয়েনস। উপনিবশিক আমলে এর নাম ছিল "অল ইন্ডিয়া ওয়ার মনুমেন্ট"। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত ৯০,০০০ ভারতীয় সেনা জওয়ানদের স্মৃতিরক্ষার্থে এই স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়। আশ্চর্য্য একটা বিষয় হঠাৎ হাসানের মনে উর্দ্রেক হলো, 'এত হাজার হাজার বঙ্গ-ভারতীয় জওয়ানরা ইংরেজদের যুদ্ধে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছে!' অথচ বেঈমান বৃটিশরা তার প্রতিদান দিয়েছিলো রাওলাট এ্যাক্ট, অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগ ও বাংলাদেশের সলংগা হাট-এর নৃশংস হত্যাকান্ড দিয়ে! ইন্ডিয়া গেইট-টি গ্র্যানাইট পাথরে তৈরি। আগে ইংরেজ রাজা পঞ্চম জর্জের একটি মূর্তি এই স্মৃতিসৌধের ছাউনির নিচে ছিল, এখন ছাউনির তলাটি ফাঁকা। স্বাধীনতার পর সেই মূর্তিটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর ইন্ডিয়া গেটে ভারতীয় সেনাবাহিনীর "অনামা সৈনিকদের সমাধি" হিসেবে পরিচিত "অমর জওয়ান জ্যোতি" স্থাপিত হয়েছে। এরকম কয়েকটি গেইট মস্কোতেও দেখেছে হাসান। তবে মস্কোর গেইটগুলি অনেক বেশী শৈল্পিক!







গেইট-টির চতুর্দিকে প্রচুর ফাঁকা জায়গা, যেখানে গাছপালা লাগিয়ে উদ্যানের রূপ দেয়া হয়েছে। কাঠবিড়ালীরা সেখানে হুটোপুটি খায়। তবে উদ্যানটির ঘাস রক্ষা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জায়গায় জায়গায় ঘাসহীন চত্বরটি ফোকলা দাঁতে হাসছে! পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষন ব্যবস্থাও দুর্বল মনে হলো! চত্বরে সৌন্দর্য্যবর্ধনকারী জলাধার আছে, তবে সেই জলাধারের পানিও বেশ নোংরা! একেবারে গেট-টির নীচে কিছুটা জায়গা লোহার চেইন দিয়ে ঘেরা। সেখানে কমব্যাট ইউনিফর্ম পরিহিত সসস্ত্র সৈন্যরা পাহাড়া দিচ্ছে, ঐ সীমানার ভিতরে ঢোকা নিষেধ। তার ভিতরে তিন সামরিক বাহিনীর পতাকা উড়ছে। গেটের স্তম্ভের নীচে টবে কিছু সবুজ গাছ রাখা আছে। একপাশে জ্বলছে শিখা অনির্বান। ত্রিমাত্রিক গেইট-টির চারদিকে চারটি আর্ক আছে। একটি আর্কের মধ্য দিয়ে সরাসরি 'রাষ্ট্রপতি ভবন'-এর দৃশ্য দেখা যায়।

ইন্ডিয়া গেইট এলাকায় সুনিতাকে নিয়ে বেশ কিছু সময় কাটালো হাসান।

সুনিতা: কেমন জায়গাটা?
হাসান: ভালো-ই। তবে এগুলো সবই তো ইংরেজ আমলে বানানো!
সুনিতা: হাঁ। ইংরেজ আমলে। দিল্লী-কে রাজধানী ঘোষণা করার পর থেকে নির্মিত হয়েছে। ইন্ডিয়া গেইট-টা ছিলো ওয়ার মনুমেন্ট আর ঐ বিশালাকৃতির রাষ্ট্রপতি ভবন-টা ছিলো মূলত ইংরেজ ভাইসরয়-এর বাসভবন।
সুনিতা: কেমন, সুন্দর?
হাসান: (একটু ইতস্তত করে বললো) যদি সত্যি কথা বলি তো 'ইন্ডিয়া গেইট' আমার তেমন পছন্দ হয়নি। আমাদের ঢাকার সাভারের 'স্মৃতিসৌধ' ও তার বাগান চত্বর বেশী সুন্দর!
সুনিতা: (হয়তো একটু মন খারাপ করে) ঢাকা তো যাই নি কখনো। কখনো যদি যাওয়া হয়, তুমি আমাকে তোমাদের 'স্মৃতিসৌধ' দেখিও!





(চলবে)
-----------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সাল
সময়: বিকাল ৪টা ১৪ মিনিট


দিল্লী


ঢাকা


ঢাকা
-----------------------------------------

না, আমি আর কাঁদবো না,
সাগরের জল বাড়িয়ে কি লাভ বলো?
বর্ধিত জলরাশির জলোচ্ছাসে
ঐ মানুষই তো আবার ডুববে!!!

নির্বিকার শূণ্যদৃষ্টি আঁখি থেকে
যদি অলক্ষ্যে গড়িয়ে পড়ে
এক বিন্দু শবনম,
তাই ভালো।
ঐ ঘনীভূত হিমকণাই হোক
কোন মুমূর্ষু পুষ্প গুল্মে
অনন্য এক প্রাণদায়ী অমৃত!

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×