আজ থেকে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমরা কখনো সোনার বাংলা গড়তে পারব না। আমাদের কারিগরেরা কখনো নিজ কাজের সম্মান, স্বীকৃতি পায়নি আর পাবেও না। আমাদের কবি, গীতিকার, সুরকার, লেখক সর্বপরি সকল প্রতিভা মূল্যায়িত হয় বিদেশী মাপ কাঠিতে। আমরা আমাদেরকে কখনোই তুলে ধরতে পারি না। কারণ নিজেদের নিয়ে আমরা বড্ড লজ্জিত, শংকিত। আমাদের মাঝে কাঁকড়া মনোবৃত্তি অনেক বেশি। আমরা আমাদেরকেই শুধু নিচে নামাতে পারি।
গত মাসে বাংলা ভাষা আর বাংলা সংস্কৃতি নিয়ে অনেক হৈ হুল্লোড় হয়েছে। প্রতি বছরই হয়, কারণ মাসটা যে ফেব্রুয়া্রী। আমাদের সমস্ত বাঙ্গালিয়ানা ঐ ফেব্রুয়ারী জুড়েই, ঐ ফেব্রুয়ারী ঘিরেই। আমার ভাইয়ের রক্তের কথা আমাদের শুধু ফেব্রুয়ারীর ২১ তারিখেই মনে পড়ে।
এখন চলছে মার্চ মাস! আমাদের স্বাধীন সত্ত্বাটা এই মাসেই জাগ্রত হয়। এই মাসেই আমরা বুক ভরে টেনে নিই মুক্তির বাতাস। বছরের বাকি ১১ মাস আমরা অন্য লড়াইয়ে ব্যস্ত খাকি।
এপ্রিলের ১৪ তারিখ আমাদের পান্তা-ইলিশে জন্মগত পাপের প্রায়শ্চিত্ত দিবস! আপন সত্ত্বার টুটি চেপে ধরি আর চিৎকার করে বলি আমরা বাঙ্গালী!
কিছুক্ষণ আগে শেষ হয়েছে টি-২০'র কনসার্ট। যেখানে দেশী সংস্কৃতীকে শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলি নয়, সাথে আরো কিছু দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের স্বনামে ধন্য বিচিবি! সামনে আসছে ফিফা বিশ্বকাপ। আপনাদের সকলকে আমন্ত্রণ জানাই। একটু চোখ মেলে দেখবেন ব্রাজিল তার নিজ দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে কিভাবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে। একক ভাবে যখন কোন দেশ এধরণের সুযোগ পায় তখন ঠিকই সেই সুযোগটা এভাবেই কাজে লাগায়। আমরা পারলাম না, আমরা কখনোই পারব না। দেশের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে আক্ষেপ জানিয়েছেন, আমি অধম তাই সেই পথে গেলাম না। তবে জাতি হিসাবে আমরা যে পথে চলেছি তার সর্বনাশা পদধ্বনি আমাকে শংকিত করছে। অনেক কষ্টে আজ তাই জানতে ইচ্ছা করছে- আমার সোনার বাংলা আজ শ্মশান হতে আর কত বাকি?