বিশ্ব দৃষ্টি দিবস - প্রতি বছরের মত আজ সারা পৃথিবীজুড়ে পালিত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ দিবস হিসেবে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার সাড়ম্বরে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। যার মূল উদ্দেশ্য হলো- যে সমস্ত “অন্ধত্ব ও দৃষ্টি সমস্যা” প্রতিরোধ কিংবা চিকিৎসার মাধ্যমে নিরসনযোগ্য, সে সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করা।
অন্ধত্ব বা অন্ধত্বের কাছাকাছি সমস্যায় ভুগছে এমন মানুষদের সংখ্যা পৃথিবীতে প্রায় ২৯ কোটি। যার মধ্যে প্রায় ৪ কোটি মানুষ সম্পূর্ন অন্ধ ও প্রায় ২৫ কোটি মানুষ মারাত্মক দৃষ্টি সমস্যার কারনে ভুগছে। এদের মধ্যে আবার শতকরা সত্তর ভাগ যারা পঞ্চাশোর্ধ। সমস্ত অন্ধত্বের প্রায় ৯০ ভাগই বাস করে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে। এসবের মধ্যে আশি ভাগ মানুষকেই অন্ধত্বজনিত রোগ থেকে প্রতিরোধ বা চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব। অর্থাৎ নিরসনযোগ্য। এ সম্পর্কে আমরা মোটেও সচেতন নই। বয়স হলেই কম দেখবে এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। একজন বয়স্ক বৃদ্ধ মানুষও যে একজন সুস্থ স্বাভাবিক যুবক-যুবতীর মতই দেখতে পারে, এটা আমরা কেউই বিশ্বাস করতে চাই না । আর তাই ঘরে বসে নিজের বয়সটাকে দায়ী মনে করে অবস্থাটা মেনে নেই অথবা কিছু ক্ষেত্রে বয়সকে অভিশাপ দিয়ে থাকি। অথচ আজ চক্ষু বিজ্ঞানের অগ্রসরতা প্রমান করে ছেড়েছে একজন বয়স্ক মানুষও সুস্থ সুন্দর সবল চোখের মাধ্যমে বৃদ্ধকালীন জীবনকেও কি রকম দৈনন্দিন সক্ষম ও সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন। পড়তে, লিখতে এবং সমস্ত কাজ করতে পারেন আর দশটা যেকোন স্বাভাবিক মানুষের মতই। কোন পার্থক্য নেই।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ অন্ধত্বে ভুগছে । যার মধ্যে ছানিজনিত অন্ধত্বের পুরানো রোগী রয়েছে প্রায় সাড়ে সাত লাখ। এর সংগে প্রতি বছর আরো ১৫ হাজার রোগী যোগ হচ্ছে। শিশু অন্ধত্বের সংখ্যাও বর্তমানে প্রায় চল্লিশ হাজার। তাছাড়া বিশ্বে প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে একজন অন্ধত্বের কবলে পতিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বয়স্ক অন্ধত্বের প্রধানকারন সমূহ হচ্ছে- ছানি, গ্লুকোমা, পাওয়ার জনিত দৃষ্টি সমস্যা, কর্ণিয়ার অস্বচ্ছতা ইত্যাদি। তাছাড়া ডায়াবেটিস, ব্লাড-প্রেশার ও বয়সজনিত কারনে চোখের অন্তঃ পর্দার (রেটিনা) জটিল পরিবর্তনও উল্লেখযোগ্য ভাবে দায়ী।
২০২০ সালের মধ্যে এসব নিরসনযোগ্য অন্ধত্বকে উচ্ছেদ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিয়েছে ব্যাপক কর্মসূচী। যা বাংলাদেশেও পরিচালিত হচ্ছে বেশ জোরেশোরে। তাই আমাদের সবার উচিত হবে সহযোগীতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজ থেকে এ সমস্যা দূরীকরন। যার প্রত্যক্ষ সুফল পাবে এ সমাজেরই গরীব-বড়লোক সবাই, একটি কর্মদক্ষ সুন্দর জীবন-যাপন উপভোগ করার মাধ্যমে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


