ইয়াংওয়ান কর্পোরেশন ঢাকা-চট্টগ্রাম ইপিজেডে তাদের সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। শ্রমিক বিক্ষোভ-ভাংচুর-হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার পর এ ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
কারখানা বন্ধের বিষয়টি শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে জানান ইয়াংওয়ানের পরিচালক (অপারেশন) সিকদার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, "আমরা এ ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি।"
নতুন মজুরি কাঠামোতে শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতনে বৈষম্যের অভিযোগ এনে শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (ইপিজেড) সংরক্ষিত এলাকার ২ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কে অবস্থিত ইয়ংওয়ান স্পোর্টস সু লিমিটেডে (ওয়াইএসএসএল) বিক্ষোভ করে।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
বিক্ষোভ-সংঘর্ষ-হামলায় প্রতিষ্ঠানের চার কর্মকর্তা, পুলিশ, শ্রমিকসহ কমপক্ষে ২০ আহত হয়। এছাড়া সড়ক অবরোধকারী শ্রমিকরা বাস-ট্রাকসহ ৩০-৩৫টি যানবাহন ভাঙচুর করেছে বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার তানভীর আরাফাত।
তিনি জানান, এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলা করা হবে।
শ্রমিকরা ওয়াইএসএসএল কারখানার বিভিন্ন তলায় ভাংচুর এবং আশপাশের ইয়াংওয়ানের আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। তারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে নগরীর বিমানবন্দর সড়কের ইপিজেড মোড় অবরোধ করে রাখে।
এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা কারখানাটির বিভিন্ন তলায় ভাংচুর করে মালামাল ও মেশিন তছনছ করে। এরপর তারা একই গ্রুপের আরো তিন প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান স্পোর্টস ওয়্যার (ওয়াইএসএল), কর্ণফুলী স্পোর্টস ওয়্যার (কেএসএল) ও ইয়াংওয়ান সিইপিজেড লিমিটেডের (ওয়াইসিএল) কাচ ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভাংচুর করে।
"রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পুলিশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়" জানিয়ে সহকারী কমিশনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।"
চট্টগ্রাম ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শ্রমিকরা বেতন বৈষম্যের অভিযোগে বিকালে ওয়াইএসএসএল'র সামনে বিক্ষোভ করে। বেপজা ও মালিকপক্ষের লোকজন আলোচনার চেষ্টা করলেও ততে সুরাহা না হওয়ায় শ্র্রমিকরা আবার বিক্ষুব্ধ হয়ে ভাংচুর করে।
এতে ইয়াংওয়ানের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরাও অংশ নেয় বলে তিনি জানান।
ইয়াংওয়ান কর্পোরশেনর পরিচালক (অপারেশন) মেসবাহ উদ্দিন জানান, ভাংচুরের পর রাতে এক বৈঠকে ইয়াংওয়ানের ঢাকা-চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকার ২০টি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে বেপজা'র মহাব্যবস্থাপক, ইয়াংওয়ানের নির্বাহী পরিচালক, জনসম্পদ বিভাগ, বিক্রয়, প্রশাসন, উৎপাদন বিভাগের মহাব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন।
ইয়াংওয়ানের ২০টি কারখানার ১৬টি চট্টগ্রামে।
"তিনজন শ্রমিককে হত্যা করে গুম করার গুজব ছড়িয়ে হামলা চালানো হয়," জানিয়ে মেসবাহ উদ্দিন বলেন, "ইয়াংওয়ানের শ্রমিকরাই কর্মকর্তাদের হামলা থেকে বাঁচিয়েছে।"
ওয়াইএসএসএল'র পাশের ইয়াংওয়ানের আরেক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিকাল ৪টার দিকে ইপিজেড'র ২ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেলে বেতন বৈষম্য কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং এক পর্যায়ে কাজ বন্ধ করে বের হয়ে আসে। এরপর শ্রমিক-কর্মচারীরা কারখানাটির বাইরে অবস্থান নেয় এবং মূল ফটকে ভাংচুর করে।
এ প্রসঙ্গে ওয়াইএসএসএল'র মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল হক মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুরনো ও নতুন শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনের পার্থক্য রয়েছে।
শ্রমিকদের সঙ্গে বাইরের কিছু লোক যুক্ত হয়ে এ হামলা করেছে বলেছে দাবি করেন তিনি।
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





