ভারত বাংলাদেশ ঘিরে রাখা একটি বৃহৎ রাষ্ট্র। দেশের একতা ধরে রাখতে তার দেশীয় ও পররাষ্ট্র নীতি প্রশংসা পাওয়ার মত। চিন,রাশিয়া ও আমেরিকার মত তারাও চাই তাদের পার্শবর্তী দেশের উপর ডোমিনেট করুক,একজন ভারতীয় হলে আমিও এই পররাষ্ট্র নীতিটা পছন্দ করতাম । কারণ ভারতের বৃহৎ একটি অংশ ( আসাম,মিজোরাম,অরুনাচল প্রদেশসমূহ) অবহেলিত ,অনুন্নত ও মাওবাদী বিদ্রোহী দ্বারা আক্রান্ত।এই প্রদেশগুলো যেকোন সময় স্বাধীনতা নিয়ে নিতেও পারে। তার অন্যতম কারণ ইহুদী ও খ্রিষ্ট্রান মিশনারীর মিশন "কনভার্টেড রিলেজিয়ন"।যার অনেকটায় সফল।মিজোরামে প্রায় কনভার্টেড ।কতিপয় অঞ্চলগুলি মূল ভূখন্ড থেকে অনেক দূরে হওয়ায় তথাকথিত সমস্যা সমাধানের ভারতের একমাত্র উপায় বাংলাদেশ দখল কিংবা তাঁর যথেচ্ছ ব্যবহার । এজন্য ভারত তাদের পররাষ্ট্র নীতির উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়।
দেশ দখলের প্রথম স্টেজ সংস্কৃতি আগ্রাশন , যাকে ডিমরালাইজডও বলা হয়। আকাশ সংস্কৃতির ভারতীয় সিনেমা ও সিরিয়াল পুশ, সিনেমা হলে ভারতীয় সিনেমার দ্বার উন্মুক্তকরণ, ভারতীয় অনেক কোম্পানীর বাংলাদেশীকরণ ইত্যাদি অনেক বাংলাদেশীর মনে সফট একটি অংশ নিয়ে নিয়েছে।যাদের অনেকেই ভারতের বাংলাদেশ দখলে আপত্তি নাই।
আমার পরিচিত এক আপু বলেই ফেলেছেঃ "আমরা যদি ভারতে থাকতাম তবে কতই না মজা হত,সালমান খানকে কাছে থেকে দেখতাম,আমরা হিন্দীতে কথা বলতাম......."এমনকি অনেক বাচ্ছা কার্টুন ও টিভি সিরিয়াল দেখে ভালো বাংলা থেকেও ভালো হিন্দী বলতে পারে।সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় ভিক্টিমড হল মহিলা ও বাচ্ছারা। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা যদি বাংলাদেশীজমে বর্তমান প্রজন্মকে(ভিক্টিমড) উদ্ভুদ্ধ করতে না পারে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তা দেশের স্বাধীনতাকে ভোগাবে। এজন্য রাষ্ট্রের ভূমিকা অতীব প্রয়োজনীয় ।
ভারত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বারবার। যার ধরুণ বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে সদ্ভাব বজায় নাও রাখতে পারে। আর আমরাও ভারত থেকে যে আহামরী সুবিধা পাবো তার নিশ্চ্য়তা ক্ষীণ। তিস্তার পানি নিতে পারাটা যেখানে বছরের পর বছর পা ধরতে হচ্ছে সেখানে অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার আশায় গুঁড়েবালি। আর ভারত কেন্দ্রিকতা অন্যান্য দেশের থেকে সাহায্যের পথটাকে সংকুচিত করা ছাড়া আর কিছুই নয়। একজন বাংলাদেশী হিসেবে যা কেউ মেনে নিতে পারে না। আমি পারি না।
যুদ্ধবিহীন রাষ্ট্র দখলে " বিভক্ত জাতি সৃষ্টি " অন্যতম অংশ,যা বাংলাদেশে চলমান। আর রাষ্ট্রের উপর যেকোন আঘাতে আমাদের এক হতে না দেয়াটা যদি উদ্দেশ্য হয়,তবে বিভক্তটা ভাঙ্গা উচিত। কে নিবে এ দায়িত্ব ,কে হবে বাঙ্গালীর মাহাথির ?(মাহাথির মালেয়েশিয়াকে চাইনিজ,ইন্ডিয়ান,মালয় বিভক্তি থেকে এক করেছিলেন মালেয়শিয়ান জাতীয়তায় এক করে।)আর আমাদের এক হতে হবে বাংলাদেশী হিসেবে।ভিন্ন অনেক দেশের বাঙ্গালী থাকার শর্তে , আমরা "বাংলাদেশীজম"টা বাংলাদেশ অক্ষুন্ন রাখার শ্রেষ্ট উপায়। বাঙালীজম আমাদের সংস্কৃতির রুট কিন্তু বাংলাদেশীজম আমাদের জাতীয়তা ।
১৯৭১ সালের পাকিস্থান থেকে স্বাধীনতাটা এতদ বছর পর ভারতের কাছে সপে দেয়ার জন্য অর্জন করি নি। ১১৪ বছর পর পরাধীনতার শিখল ভেঙেছি নিজ ইচ্ছায় পরাধীন হতে নয়। যুদ্ধটা ৯ মাস না হয়ে ৯ বছর হওয়ার দরকার ছিলো। তবেই বুঝতাম স্বাধীনতাটা কী জিনিস।