somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এফিলিয়েট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল – এফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠান সমূহ

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর বিষয়ে গুগলে সার্চ দিয়ে বাংলায় অনেকগুলো আর্টিকেল পেলাম। মনোযোগ দিয়ে সবগুলোই পড়ার চেষ্টা করেছি। খুবই আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করলাম, এই আর্টিকেল গুলো থেকে সত্যিকার অর্থে কিছুই শেখার উপায় নেই, দুয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া। খুবই ভাসাভাসা ভাবে তথ্য দেয়া এই আর্টিকেল গুলো পড়ে এই স্বিদ্ধান্তই নিতে হল, আমার এই সাইটটি আর যাই হোক, এরকম আর্টিকেল দিয়ে ভরা হবে না। সুতরাং, খুব আন্তরিকতার সাথেই বলছি, যারা সিরিয়াসলি এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চান, তারা সাথে থাকুন, খুবই উপকারী কিছু শিখতে যাচ্ছেন আপনারা।

এই পোস্টটি পড়ার আগে আমার আগের পোস্টটি একবার ঘুরে আসুন।

আগের আর্টিকেলে আমি বলেছিলাম যে পরের আর্টিকেল-এ আমরা ভালো এফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম কোম্পানিগুলো নিয়ে আলোচনা করব। ঠিক তাই, আজ আমরা আলোচনা করব কোন কোন কোম্পানীগুলোর সাথে কাজ করা যাবে এবং তা কিভাবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ধাপ গুলো হলোঃ

১. এমন একটি কোম্পানী খুজে বের করা -
ক. যার এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে
খ. যারা বাংলাদেশ থেকে এফিলিয়েট মার্কেটার নেয়
গ. যারা এফিলিয়েটদের ঠিকঠাক মত টাকা দেয়
ঘ. যেখান থেকে উপার্জিত টাকা আপনি সহজে পেতে পারবেন।
২. তারপর সেই কোম্পানীতে সাইন আপ করে এফিলিয়েট হওয়া।
৩. খুব সতর্কতার সাথে কোন প্রোডাক্টের প্রমোশন করবেন তা নির্ধারন করা।

এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে চলুন প্রথম আর্টিকেলের কিছু অংশ আবার একটু পড়া যাক।

““ ---- এখন বাস্তব উদাহরনে আসি।

এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর সবচেয়ে বড় উদাহরন আমাজন.কম, ইবে.কম কিংবা ক্লিকব্যাংক.কম। হাজার হাজার ভেন্ডর কোম্পানী এই সাইটগুলোতে তাদের পন্য বা প্রোডাক্ট জমা দেয় বিক্রির জন্য। ইবে কিংবা আমাজন এই প্রোডাক্টগুলো নিজেরা বিক্রি করার পাশাপাশি এফিলিয়েট মার্কেটারদের সাহায্য নেয়। ক্লিকব্যাংকের মতো সাইটগুলো পুরোটাই বিক্রি করে আমাদের মতো এফিলিয়েট মার্কেটারদের মাধ্যমে। উপরের মতো, বিক্রির টাকার ৩%-৫% পায় ইবে, আমাজন বা ক্লিকব্যাংক।

এফিলিয়েট মার্কেটাররাও পায় কমিশন। কত, সেটা নির্ভর করে প্রোডাক্টটি কি, তার উপর।

প্রোডাক্টটি যদি ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট হয়, যেমন, ওষুধ, ফুল, বই, ফার্নিচার, মোবাইল ফোন, চশমা, অলংকার, কাপড় ইত্যাদি, তাহলে কমিশন হয় ৩% থেকে ২০% এর মতো। কিন্তু যদি হয় কোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট, যেমন, সফটওয়্যার, গেমস, ইবুক, কোনো ওয়েবসাইটের মেম্বারশিপ, তবে কমিশন হতে পারে ৫০% থেকে ১০০% পর্যন্ত।

কি বিক্রি করা যায়না এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে? সবই যায়। হিরের গহনা থেকে শুরু করে ব্যাংক লোন বা ক্রেডিট কার্ড পর্য়ন্ত সবই বিক্রি হয়। বাংলাদেশে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে, টিভিপ্রসেসিং.কম নামের একটি সাইটের মাধ্যমে আমরা একটি সফটওয়্যার বিক্রি করতাম, যেটা দিয়ে খেলা লাইভ দেখা যেত। সফটওয়্যারটি কিনতে লাগতো প্রায় ৫০ ডলার, আমাদের কমিশন থাকতো ৩০ ডলারের মত। মনে আছে, রাজশাহীর একটা ছেলে (নামটা না হয় গোপনই থাক) ফুটবল বিশ্বকাপের সময় ইএসএ-র একটি খেলার দিন একরাতে কাজ করে ৭১৪ কপি সফটওয়্যার বিক্রি করেছিল, বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার উপরে। ভাবা যায়? ----- ””

সুতরাং আমরা দেখলাম, আমাজন.কম, ইবে.কম কিংবা ক্লিকব্যাংক.কম ভালো কোম্পানী, যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং সাপোর্ট করে, অর্থাৎ যাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। এছাড়াও আছে প্লাইমাস, এফিব্যাংক, সিজে (কমিশন জাংশন), ক্লিক২সেল, ক্লিকসিওর ইত্যাদি।

বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার কোম্পানী আছে যাদের নিজস্ব এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। কেউ কেউ আছে যারা প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ এসব কোম্পানীর মাধ্যমে অন্য কোম্পানী তাদের পণ্য বিক্রি করে, যেমন আমাজন, ইবে, ক্লিকব্যাংক, সিজে।

আবার অনেক কোম্পানী এফিরিয়েটদের দিয়ে শুধু নিজের পন্য বিক্রি করে। যেমন, ফরেক্স ট্রেডার কিংবা অনলাইন ক্যাসিনোগুলো।

অনেক কোম্পানী দুটোই করে। অর্থাৎ, নিজেদের এফিলিয়েট প্রোগ্রামও আছে, আবার প্লাটফর্ম গুলোর সাহায্যও নেয়।

এখন কথা হল ভালো এফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম হিসেবে আমরা কোন কোম্পানীর সাথে কাজ করব?

এদের মধ্যে ভালো কোনগুলো? ভালো এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে এমন কোম্পানী আমরা তাদেরকেই বলবো যাদেরঃ

১. বিক্রি করার মতো প্রচুর পণ্য আছে
২. যাদের ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ২ ধরনের পণ্যই আছে
৩. স্বচ্ছ সেলস ও এফিলিয়েট রিপোর্টিং সিস্টেম আছে
৪. যারা এফিলিয়েটদের ঠিকমত ও সময়মত টাকা দেয়, ঠকায়না।

এসব কিছু চিন্তা করলে আমি আমাজন.কম, ইবে.কম, ক্লিকব্যাংক.কম, প্লাইমাস, এফিব্যাংক, সিজে (কমিশন জাংশন)-দের বলব বেস্ট। আর ক্লিকব্যাংক হলো সবার সেরা।

তাহলে কি এদের সাথে কাজ করা যাবে?

না। অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার, কিন্তু বাংলাদেশের এফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য এটাই সত্যি।

কেন? কারনঃ

প্রথমতঃ এই সব কোম্পানীর বেশীর ভাগই বাংলাদেশ থেকে এফিলিয়েট নেয় না।

দ্বিতীয়তঃ এরা বেশীর ভাগ সময় টাকা দেয় পে-প্যালের মাধ্যমে। পে-প্যাল হল আমাদের বিকাশ-এর মত টাকা লেনদেন-এর একটি পদ্ধতি, শুধু পার্থক্য হল এটি মোবাইল নম্বরের বদলে ইমেইল একাউন্ট ব্যবহার করে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পে-প্যাল-এর একাউন্ট করা যায়না।

তৃতীয়তঃ এরা আপনার ভিসা বা মাস্টারকার্ড ক্রেডিটকার্ডেও টাকা পাঠাতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে সেটা সম্ভব নয়।

চতুর্থতঃ এরা আপনার ব্যাংক একাউন্টে ডিরেক্ট টাকা পাঠিয়ে দেবে, কিন্তু বাংলাদেশে সম্ভব না। ওদের সিস্টেমে বাংলাদেশ অপশনই নাই।

প্রথম দিকে আমরা ভূয়া ঠিকানা দিয়ে (অন্য দেশের) ক্লিকব্যাংকের একাউন্ট খুলতাম। পে-প্যাল-এও একই কাজ করা যায়। কিন্তু এগুলোতে খুব একটা লাভ হয়না।

তাহলে? এফিলিয়েট যদি না হতে পারা যায়, কিংবা উপার্জন করেও যদি টাকা না আসে, তবে উপায় কি?

বাংলাদেশে বসবাসকারী এফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য একটাই করনীয়।

আবার বলি।

১. এমন একটি কোম্পানী খুজে বের করা -
ক. যার এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে
খ. যারা বাংলাদেশ থেকে এফিলিয়েট মার্কেটার নেয়
গ. যারা এফিলিয়েটদের ঠিকঠাক মত টাকা দেয়
ঘ. যেখান থেকে উপার্জিত টাকা আপনি সহজে পেতে পারবেন।
২. তারপর সেই কোম্পানীতে সাইন আপ করে এফিলিয়েট হওয়া।
৩. খুব সতর্কতার সাথে কোন প্রোডাক্টের প্রমোশন করবেন তা নির্ধারন করা।

আজকে এই পর্যন্তই। আগামী পর্বে আমরা এমন কিছু কোম্পানী নিয়ে আলোচনা করবো যারা উপরের সব শর্তই পালন করে, এবং বাংলাদেশের এফিলিয়েট মার্কেটাররা যাদের হয়ে খুব সহজেই কাজ করতে পারে।

এসব কোম্পানীর সাইটে এফিলিয়েট হিসেবে সাইন আপ বা রেজিস্টার করার এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জিত টাকা আনার পদ্ধতিও আমরা আগামী পর্বে জানবো।

আমার এই লেখাটি যদি আপনার ভালো লাগে, বা একটু হলেও উপকারে আসে, তবে শেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ। সাথে থাকতে পারেন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ -এর মাধ্যমেও।

যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, যদি কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়, কিংবা শুধুই যদি কোনো কিছু বলার থাকে, কমেন্ট করুন। অবশ্যই উত্তর পাবেন।

** এই পোস্টটি আমার সাইট http://www.bd-online.net -এ প্রকাশিত হয়েছে।

সবাইকে ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×