দাদা (সনেট কবি) কে উৎসর্গ করলাম
আল্লাহ তা’আলা “আশরাফুল মাখলুকাত” তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আমাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- “আমি জ্বীন এবং মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদতের জন্য” (সূরা যারিয়াত, আয়াত-৫৬)।
মানব জাতি বলতে সকল আদম সন্তানদের বোঝায়। আর এই আদম সন্তানদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধর্মভেদ। যেমন ইহুদী- খ্রীষ্টান, হিন্দু- মুসলমান সহ আরো অনেকেই। প্রশ্ন হতে পারে সকল ধর্মই কি আল্লাহর নিকট মনোনীত ? উত্তরে আমরা পাব ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য ধর্ম আল্লাহর নিকট মনোনীত নয়; কারণ অন্যান্য ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থ মূল অবস্থায় রক্ষিত নেই।
যেমন কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে-“নিশ্চই আল্লাহর নিকট মনোনীত ধর্ম হল ইসলাম” (সূরা আল ইমরান, আয়াত-১৯)।
এতে বোঝা যায় বর্তমানে যত ধর্মই থাকুক ইসলাম ব্যতীত কোন ধর্ম আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় নয়। অতএব আমরা বলতে পারি, আমদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, সংস্কৃতিক, ধর্মীয়সহ সকল দিক হতে হবে ইসলামের মাপকাঠি অনুযায়ী। যার মধ্যে তাওহীদ হবে ভিত্তি, রেসালত হবে আদর্শ, খেলাফত হবে মডেল, সুন্নীয়ত হবে দর্শন সর্বোপরি ইহকালীন ও পরকালীন শান্তি হবে কাম্য। আর এরূপ সংগঠনকে বলা হয় ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআত।
রাসূল করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “বনী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত ছিল, কিন্তু আমার উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে; তন্মধ্যে একটি মাত্র দল জান্নাতে যাবে। আর বাকীরা যাবে জাহান্নামে। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে একটি দল কোনটি ? রাসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- যে দলে আমি এবং আমার সাহাবাগণ আছেন”। উক্ত হদিসের ব্যাখ্যায় মিরকাত শরহে মেশকাত প্রণেতা মোল্লা আলী ক্বারী (রহ) বলেন “সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে, এই দলটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত”।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের একটি বৈশিষ্ট্য হল- তাঁরা নিরোক্ত চার শ্রেণীর প্রকৃত অনুসারী, পবিত্র কুরআনের ভাষায়-“যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করবে তারা ঐ সব ব্যক্তির সাথে থাকবেন যাদের প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন। আর তারা হলেন নবীগণ, সিদ্দিকীন (সাহাবী), শহীদান ও সালেহীন (অলি-বুজর্গগণ); তারা অতি উত্তম সঙ্গী” (সূরা আন নিসা, আয়াত-৬৯)।
খারেজী,শিয়া, রাফেজী সহ যত বাতিল ফিরকা রয়েছে তারা উপরোক্ত চার শ্রেণীর কোন না কোনটার মাহান মর্যাদায় আঘাত হেনেছে অত্যন্ত সুকৌশলে।
শিয়াদের আক্বিদা-তারা কলেমা পাঠ করে এরূপ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলাল্লাহ ওয়া আলীউন খলীফাতুলাল্লাহ। এছাড়া তারা হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা অনহু, হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা অনহু এবং হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে খলিফা মানে না যা ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত।এ থেকে বুঝা যায় যে তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত তথা সঠিক মুসলমান দাবী করলেও তারা নামে মাত্র ইসলামী, বস্তুত তারা ইসলামের শত্রু মুসলমানের শত্রু।
তাহলে আমরা কুরআন ও হদীসের আলোকে সঠিক দল বলবো তাদেরকে-“যারা আল্লাহ্ প্রদত্ত রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসল্লাম কর্তৃক প্রদর্শিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনের প্রতিটি দিকের আদর্শকে মনে-প্রাণে ও বাস্তবে গ্রহণ করেন। এছাড়া যারা খোলাফায়ে রাশেদা, সাহাবায়ে কেরাম ও আহলে বায়তের প্রতি অকুন্ঠ নিষ্ঠা রাখেন; এবং ইমাম-অলিগণের প্রতি অনাবীল শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন”।
ইদানিং কতেক লোককে বলতে শোনি, রাজনীতির মধ্যে ধর্মকে ব্যবহার করা ঠিক না কিংবা ধর্মীয় রাজনীতি উচিত না। আমি তাদেরকে বলতে চাই, ধর্মহীন রাজনীতি আল্লাহর কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য না। কেননা আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-“যারা ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছুকে জীবন বিধান হিসেবে গ্রহণ করবে, তা তাদের থেকে আল্লাহ্ কর্তৃক অবশ্যই গ্রহণ করা হবেনা” (সূরা আল ইমরান, আয়াত ৮৫)।
ইসলাম যেহেতু পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান সেহেতু সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনের প্রতিটি বিষয় ইসলাম অনুসারে হতে হবে। ইসলাম ব্যতীত যারা কল্পনা করে তারাও মূলত ভ্রান্ত।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৮ রাত ৯:৪৮