somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধুর পাছায় অগ্নিয়াগিরি বিস্ফোরণ, লাভার উদগিরণ অতপর অপারেশন

১৭ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৯৯ সাল । মাত্র কয় মাস আগেই বাপজান হলে রাইক্খা গেল। এরমইধ্যেই হোস্টেলের পোলাপানের লগে ভালৈ খাতির জামাইয়্যা হালাইছিলাম। শয়তানি বেশী না কর্লেও এক্কারে কম করতাম তাও না (মিনমিনন্না যারে কয়) । আমরা একলগে ৭ জন একরুমে থাকতাম, রুম না গনরুম কইতে পারেন। আমার খাট আছিল সবচেয়ে উত্তর কোনায় আর দোস্ত মাসুমের খাট আছিল দক্ষিন কোনায়। মাঝখানে আছিলো মোবারক , জনি , আরিফ, মামুন আর সাইফুল। হলরুমের মতো লম্বা রুমে থাকতাম । ঐডাই আছিলো থাকার রুম , ঐডাই আবার পাও নাইলে স্ট্যাম দিয়া ক্রিকেট খেলার মাঠ, ঐডাই আছিলো বালতির মইধ্যে মুড়ি বানাইয়া খাওনের রুম , ঐডাই আছিলো ক্যাম্পাসের চুরি করা ডাব আমের গোডাউন, ঐডাই আবার ঘন্টার পর ঘন্টা তামাম দুনিয়ার গল্প মারার আড্ডাখানা, আবার ঐডাই স্যারের বিচারের আদালত আর মাইর খাওয়ার চেম্বার।

ক্লাস সেভেনে পড়ি মাত্র। মাসুমের বাপের মোটামুটি ভালৈ টাকা পয়সার মালিক আছিলো। মাঝে মইদ্যে টিফিনকিরি ভইর্রা খাওন দাওন দিয়া যাইত আর হগলে মিইল্লা খাইতাম। হগলের খাডের লগে একখান কইর্রা টেবিল আছিল চেয়ার আছিলো না কিন্তু মাসুমের বাপে মাসুমরে একখান ফোম গদিওয়ালা চেয়ার কিইন্না দিয়া গেছিলো । হেইডা দেইক্খা আমাগো আপসুসের শ্যাষ আছিলো না। আহারে যদি চেয়ারে বইয়া পড়তে পারতাম?



বেশী না বইলেও মাঝে মইদ্যে বইয়া পাছায় আরাম দিতাম। পরথম পরথম দেখতাম মাসুম কি খুশি, গদিওলা চেয়ারে বইয়া ভাব লয়, ভাবের ঠেলায় মাঝে মইধ্যে কবিতাও বাইর হইয়া যায় আবার মাঝে মইধ্যে দোলও খায়। কিন্তু পোলাপানের বদদোয়া লাগুক আর না লাগুক আল্লায় অর সুখ সইলো না ।
পরথম পরথম দেখতাম পড়তে পড়তে মাসুম মাঝে মইদ্যে পাছা চুলকায়। তহন বুঝি নাই কিন্তু বুচছি কয়দিন পরই। নুতন চেয়ার পাইয়া পড়ালেহা করুক আর না করুক হারাদিন বইয়্যা থাকতো। বইয়া থাকতে থাকতে মাসুমের পাছা যাইতো গরম হইয়া মাঝে মইদ্যে দাড়াইয়া থাকতে দেখতাম, আবার বইতো। কিন্তু কয়দিন ধইররা মাসুম আর ঠিকমতো চেয়ারে বয় না।
কিরে মাসুম চেয়ারে বছ না ক্যা?
পরথম পরথম কইতো না , কইতো আরে ব্যাডা এমনেই বই না ।
কয়দিন পর ঠিকই বুঝছিলাম যহন অর পাছার পরিস্থিতি খারাপ, গদির চেয়ারের বইয়া বইয়া পাছা গরম ঘামাইয়্যা গিয়া ফোড়া উটছিলো ,হেই ফোড়া এহন বড় অইছে । তহন শুরু করলাম চেতাইন্না।
কিরে ব্যাডা , পাছার অগ্নিয়গিরির কি অবস্থা?
কেউ কইতো, কি রে মাসুম অগ্নিয়গিরিতে বিস্ফোরণ হইছে?
কেউ কইতো, এ ব্যাডা, অগ্নিয়গিরিডা এট্টু ধইররা দেকমু? অয় তো চিক্কুর মারতো .... সর সর হাত দিবি না , ব্যাতা করে ।
এরমদ্যে পরীক্ষার দিন আইয়া গেছিলো। অয় তো না পারতেছে বইতে, না পারতেছে ঘুমাইতে, না পারতেছে পড়তে।

হগলের থেইক্কা মোবারক আছিল সবচেয়ে পোংটা , আবার সাহসী তয় মেধাবী। এমন কোনো কাম আছিল না যা অয় না করছে। সব কাজের কাজী আছিলো অয়। আমার ট্রাংকের স্ক্রু খুইল্লা হরলিকস আর খেজুর খাওনের কারিগরও আছিল অয়। আর এইবার হইয়া গেল হাতুইড়্ড়া ডাক্তার।
মাসুসের পাছার তহন চরম খারাপ অবস্থা। ব্যাতায় পোলাডার অবস্থা কাহিল। কি করবে বুঝতেছে না , বাড়ীও যাইতে পারতেছে না দুইদিন পরই পরীক্ষার লইগ্যা।
মাসুমের কষ্ট দেইকখা পোলাপানে হাসতামই বেশী । ঐদিন রাইতে ১০ টার দিকে মাসুম গেছিলো বাথরুমে। বাথরুমডা আছিলো আমাগো গনরুমের পাশেই। মাসুম বাথরুমের দরজা চাপাইয়া বেছিনের সামনে খাড়াইয়া আরেকটা আয়না লইয়া অগ্নিয়াগিরি দেহার চেষ্টা করতেছিলো । এরমইদ্যে জনি বাথরুমে গিয়া দেখলো মাসুম বাথরুমে খাড়াইয়া খাড়াইয়া অগ্নিয়াগিরি মানে ফোঁড়া দেহার চেষ্টা করতাছে। বাথরুম , গোসলখানা আর বেসিন নিয়া বাথরুমডা ভালই বড় আছিলো। জনিরে দেইক্কা লজ্জা মাসুম লজ্জা পাইলো । আর জনি হাসতে হাসতে রুমে আইয়া কইয়া দিলো পোলাপানের কাছে । পোলাপান সবগুলা গেলাম বাথরুমে।
একজন কইলো দেরি না কইরা অগ্নিয়াগিরি গালাইয়া হালাইলেই ভাল হইবে। কিন্তু মাসুম তো পাছা হাতাইতে পারে পাছাতো আর দ্যাহে না অয় কেমনে গালাইবে ? গালাইতে হইলে অন্য কেউ গালাইতে অইবে।
সাহস কইররা মোবারক কইল আমি গালামু। লগে জনি তুই থাকবি।

মোবারক আর জনিরে মাসুমের লগে বাথরুমে রাইককা সব পোলাপানরে বাইর অইয়া আইল। অগ্নিয়গিরির অপারেশনের লইগগা টয়লেট পেপার , তুলা আর স্যাভলন লইয়া কাম শুরু করলো অরা। বাথরুমে অপারেশন শুরু করলো আর দরজায় খাড়াইয়া খাইয়া অপারেশন থিয়েটারের দরজা পাহারা দিতেছিল আরিফ । আর বাকী পোলাপান কেউ দরজায় কেউ রুমে গিয়া আড্ডা মারতেছিলো।

মোবারক শুরু করলো অপারেশন। মাসুমরে পরথমে বেসিনের সামনে খাড়া কড়াইয়া কেচি দিয়া লুঙ্গিতে পাছায় অগ্নিয়গিরির জায়গাডা বড় কইররা কাটলো। জনি মাসুমরে খাড়া কইররা ধইররা রাখছিলো আর মোবারক তুলা , টয়লেট পেপার স্যাভলন লইয়া রেডি হইয়া শুরু করলো অপারেশনের আসল কাম।
পাছার কাছে খাড়াইয়া অগ্নিয়াগিরির দুই পাশে ধইররা দিলো জোরে চাপ । এমন চাপ দিলো যে মাসুমের চিক্কুর রুমে বইয়া শুনতে পাইছিলাম।
লগে লগে গলগল কইর্রা বাইর অইয়া আইলো লাভা। লাল লাভা বাথরুমের অনেকখানি ছড়াইয়া পড়ছিলো। লাল লাভা থেকে বাচোনের লইল্গা তুলা আর লুঙ্গি দিয়া চাইপ্পা ধরলো। গরম গরম লাভায় লুঙ্গি ভিইজ্জা গেছিলো লগে কিচু লাভা মোবারকের হাতেও লাগছিলো। মোবারক চাইপ্পা আরো লাল লাভা বাইর কইররা শেষ করলো। তুলা আর স্যাভলন দিয়া ভালো কইরা পরিস্কার কইরা দিয়া নুতন লুঙ্গি পড়তে দিলো।

অপারেশন শেষ কইররা বাথরুম অপারেশন থিয়েটায় গিয়ে দেখলাম লাল লাভায় বাথরুমের মেঝেতে ছড়াইয়া আছে। আর মাসুমের চেহারায় বিরাট ধকল আর পরিশ্রমের চিহ্ন দেখালেও মুখ থেকে শান্তির হাসি দেকছিলাম।
সরাসারি না কইলেও বুঝাছিলাম ,,,,,,,,, আহ কি শান্তি!!!!!!!!!!!
অরে ধইররা নিয়া আইলাম আর বিছনায় শোয়াইয়া দিলাম। এরপর অয় সুস্থ।
এইসব দোস্তগো লগে খুব কমই দেহা হয়। বিশেষ কইররা মাসুমের লগে দেহা হইলে এই অগ্নিয়াগিরির কথা এহনো বইল্লা হাসাহাসি করি।

পুশ্চনঃ অগ্নিয়াগিরি মানে ফোড়া আরও দেখছি। নিজেরও ফোড়া হইছিলো রক্তও বাইর করছি নিজে নিজে । ফোড়ার জন্য অসুস্থ হয়ে গেছিলাম। কিন্তু এতো বড় আর এতো বেশী রক্ত অন্য কারো দেহি নাই। । এটাই যেহেতু পরথম অগ্নিয়াগিরি বিস্ফোরন দেখা তাই স্পস্ট মনে আছে।

সেই সকল ছোট বেলার বন্ধুদের জন্য রইল বুকভরা ভালবাসা। বন্ধুরা ভুলে যেও না।

এই বাস্তব গল্পের উৎসাহ দানকারী লিঙ্কনহুসাইন ভাইর জন্যও রইল ভালবাসা।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৯:১৬
৩১টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×