বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার এর ভাষ্যমতে মানুষের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন ছাড়া আর কোন উপায় নেই।তিনি মনে করেন দেশের মানুষ চায় বিএনপি সর্বাত্মক আন্দোলন করুক। আর যেহেতু তিনি বা তার দল মানুষকে আশাহত করতে পারেন না তাই তারাও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। (তথ্য সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ২০/১১/২০১০,http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-11-20/news/109705)।
মানুষের আশার প্রতি সম্মান দেখাবার সুযোগ বা সামর্থ্য বিরোধী দলে থেকে এম কে আনোয়ারদের আজ যতটা আছে তার চেয়ে ঢেড় বেশি সুযোগ বা সামর্থ্য ছিল যখন তারা সরাকরি দলে ছিলেন। প্রশ্ন করতে দ্বিধা নেই তখন তারা জনগণের কোন আশাটিকে বাস্তবায়িত করেছিলেন। নাকি সরকারে থাকলে তারা বধির হয়ে যান? জনগণের আশার কথা তখন তারা শুনতে পান না? আজ যে যে কারনে বাংলাদেশের জনমনে হতাশা, ক্ষোভ বিরাজ করছে তার কোন কারনটি তাদের সরকারের সময়ে ছিল না? মানুষের আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্যহীনতা তাদের শেষবারের সরকারের সময়েই প্রথমবারের মতো প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে এবং তা এখন পর্যন্ত বলবৎ আছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দায় থেকে গেলবারের বিনপি’র সরকার মুক্তি পায় কি করে? বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড তারাই শুরু করেছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কোনঠাসা করে রাখার যাবতীয় রকমের কুকর্ম তারা প্রকাশ্যে অথবা কৌশলে করেছেন। ভুলে গেলে চলবে না ক্ষমতাকে আকড়ে থাকার হীন মানষিকতার কারনেই অনাকাঙ্খিত এক/এগারো এসেছিল। এবং বাংলাদেশের মানুষ এক/এগারোর মতো অন্যায়কেও প্রবল উচ্ছ্বাসে স্বাগতম জানিয়েছিল। কি যে এক অস্থির আর গুমোট পরিবেশ তারা তৈরি করেছিল তা (বোধ করি) বাংলাদেশের মানুষ পুরোপুরি ভুলে যায়নি।
তবে আজ কেন বিরোধী দলে থেকে জনগণকে আশাহত না করার রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার কথা বলছেন? কারন এই ছুতায় তারা সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে পারবেন। এই সরকারকে হঠিয়ে নিজেরা ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবেন। জনগণের টাকা লুটপাট করতে পারবেন। গত ৪ বছর ধরে তাদের আয় রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে আছে। আর কত সহ্য করবেন তারা! তাই এখন তারা অন্তর্যামি বনে গেছেন, জনগণের আশার কথা আপনা থেকেই বুঝতে পারেন। তাদের যে এখনি ক্ষমতায় বসতে হবে, বন্ধ হয়ে যাওয়া আয় রোজগার সচল করতে হবে।
সরকার আসবে সরকার যাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হবে না। যখন যে সরকারে থেকেছে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, যখন যে বিরোধী দলে থেকেছে মানুষের অধিকার আদায়ের নামে মানুষকে ব্যবহার করে ক্ষমতা করায়ত্ত্ব করেছে। তাই এম.কে আনোয়ার যখন জনগণের অধিকার রক্ষায় আন্দলোনের কথা বলেন তখন স্বভাবতই মনে শঙ্কা জাগে আরেকবার আমজনতার সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটেপুটে খাবার পায়তারা করছেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে আমাদের ধারনা হয়েছে বিএনপি সরকার হটাবার জন্য ‘অল-আউট’ আন্দোলনের নামে হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে। এইভাবে জনগণের অধিকার রক্ষা হয় নাকি ব্যহত হয়? জনগণের অধিকার স্বাধীনভাবে তার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড করতে পারার মধ্যে নিহিত আছে। হরতালে জান-মালের সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা থাকে বলে মানুষ ঘর থেকেই বের হতে চায় না। আর যারা নিতান্তই জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হতে বাধ্য হয় তাদেরকেও প্রতি নিয়ত পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়; এমনকি অনেকসময় প্রাণ পর্যন্ত দিতে হয়। এতে করে জনগণের অধিকার রক্ষা হতে পারে না, হতে পারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি আর এই বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের নীল নকশা।
পরিশেষে এম কে আনোয়ার সাহেব এবং তার মাধ্যমে তার দলের কাছে আবেদন থাকবে জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য জনজীবন বিপন্ন হয় এমন কোন কর্মসূচী দিবেন না। জনগণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার জন্য শান্তিপূর্ণ কার্যকরী পদক্ষেপ নিবেন – এইটাই আমাদের চাওয়া।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




