সারাজীবন হাজারটা পাপ করার পরও একবার কলেমা তা'য়েবা খাশ দিলে খাঁটি ঈমানের সাথে পাঠ করতে পারলেই বেহেস্তের চাবি পাওয়া যাবে - এমন বিশ্বাসীদের অভাব এই বাংলাদেশে নেই। তাই দেখা যায় যৌবনের বেশির ভাগ সময় মাদকাসক্ত থাকার পর এবং আরো হাজার হাজার যুবক, যুবতীর সোনালি সময় নষ্ট করে পাক্কা ধার্মিক বনে যেতে। তেমনি একজন মেকগাইভার।
এই মাদক ব্যবসায়ী ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কতটুকু জ্ঞান রাখে সে প্রশ্ন নিরর্থক। অথচ না বুঝে না শুনে সে ধর্ম পালন করে যাচ্ছে। কি করে? আলতু ফালতু পোষ্ট করে, ভিন্ন মতাবলম্বীদের সেসব পোষ্টে ব্লক করে, ইচ্ছেমতো কমেন্ট ডিলিট করে এবং সুবিধাজনক কমেন্ট রেখে তথ্যবিকৃতির মাধ্যমে দুই জাহানের অশেষ নেকি করাত্ত্ব করে নিচ্ছে।
পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির প্রতি গভীর অনুরাগের প্রমানবাহক নিক (মেকগাইভার) নিয়ে ইসলাম রক্ষার জন্য তার এই আত্মনিবেদন তার বিশ্বাসের দুর্বলতাই আরেকবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। কোরআনে যেখানে স্পষ্ট করে বলা আছে, আল্লাহ স্বয়ং কোরআনকে রক্ষা করবে সেখানে "ইসলাম গেলো, ইসলাম গেলো" এই ধরনের অহেতুক ভয় থেকে এই নিম্নমানের ডিজিটাল যুদ্ধে লিপ্ত হবার হেতু কি? খোঁজ নিলে জানা যাবে এই লোক ঠিকমতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে না; এমনকি বিশুদ্ধ উপায়ে নামাজ আদায় করবার কায়দা-কানুনও জানে না।
ইসলামে যেখানে মাদক সেবন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ সেখানে এই রকম এক মাদকসেবীর পোষ্টে যারা এই লোককে সমর্থন করে পোষ্ট দেয় তাদের ইসলাম জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। মানবিকতার জায়গাতো সুদূরপরাহত।
মেকগাইভারের পোষ্টখানা পড়লে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ভাব প্রকাশের দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এই ধরনের কম শিক্ষিত, নীতিভ্রষ্ট ও বিকলাঙ্গ মানসিকতার মানুষ কোন কালেই কারো জন্য ভাল হতে পারে না। তার পোষ্টখানা এবং তার মতোই আরো কিছু তথাকথিত ধর্মপরায়ণের কমেন্ট পড়ে আমি কিছু কমেন্ট করি। আমার সেই কমেন্ট থেকে কিছু কিছু কমেন্ট মুছে ফেলা হয়েছে এবং আমাকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছ। আমাকে ব্লক করা এবং আমার কমেন্ট মুছে ফেলাতে আমি অবাক হইনি, দুঃখও পাইনি। এইরকম স্বল্প শিক্ষিত বখে যাওয়া কুলাঙ্গারের কাছে থেকে এর চেয়ে ভাল কিছু আশাও করতে পারি না। কিন্তু কিছু কমেন্ট রেখে কিছু মুছে এবং আমাকে নিয়ে অন্যরা যে কমেন্ট করেছে সেগুলো রেখে তথ্যবিকৃতির যে অপচেষ্টা সেটা আমাকে ক্ষুব্ধ করেছে। আমি এই ধরনের অসভ্য আত্মস্বীকৃত সামাজিক অপরাধীদের ব্লগিং করার নৈতিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছি।
কতবড় অশিক্ষিত হলে তার পোষ্টের শিরনাম হতে পারে ‘এই ব্লগের নাস্তিকরা আসলে হিন্দু’।
নাস্তিকতো নাস্তিকই। তার আবার ধর্ম কি। প্রচলিত কোন ধর্ম এবং সেই সাথে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস নাই দেখেই তো একজন নাস্তিক হয়। এই নূন্যতম জ্ঞানটি যার মধ্যে নাই তার পোষ্টে যারা গিয়ে বাহবা দেয় তাদের অর্জিত জ্ঞান নিয়েও সন্দেহ জাগে।
এই ধরনের মানুষদের ধারণা আস্তিক মানেই হচ্ছে মুসলমান। অন্যকথায় ইসলামের অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেই প্রশ্নকারি নাস্তিক বনে যাবেন। যে কারনে “নাস্তিক” আর “হিন্দু” এই ধরনের অল্প শিক্ষিত মানুষদের কাছে সমার্থক মনে হচ্ছে। ব্যক্তির পরিচয়টা মূখ্য করে না দেখে, ইসলাম ধর্মের যে অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে অথবা ধর্মের ভিত্তি নিয়ে যে কথাগুলো উঠে আসছে সেগুলোকে খন্ডন করলেই তো হয়। দেখার বিষয় হচ্ছে যে প্রশ্নগুলো আসছে সেগুলো যুক্তিযুক্ত এবং বস্তুনিষ্ঠ কিনা। আরেকটা কথা, আস্তিক হওয়ার জন্য ধার্মিক হওয় কি জরুরী?
এইখানে গেলে ফালতু সেই পোষ্টটি পাবেন আর আমার মুছে ফেলা কমেন্টগুলো থেকে একটা কমেন্ট আপনাদের বিবেচনায় উল্লেখ করলাম (বাকিগুলো আমি সংরক্ষণ করি নাই),
আমাদের ইয়াহু বলেছেন: "এই ভাবে অগো কিছু না কইতে কইতে একদিন অন্যান্ন ধর্মের মত ইসলামও হারাইয়া যাবে। "
ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে এই ধরনের কথা আপনার মনে আসে কি করে? যে ধর্ম আল্লাহ স্বয়ং হেফাজত করছে সে ধর্ম হারাবার ভয় আপনার মনে আসলো কি করে। আসলে বেশির ভাগ বিশ্বাসীই উত্তরাধীকার সূত্রে বিশ্বাসী। কোন কিছু না পড়ে, না জেনে বাপ-দাদার লিগ্যাছি টেনে নিয়ে যায়।
আমাদের ইয়াহুর মতো এই পোষ্টের লেখকও অনেক কম পড়া বিপথগামী মানুষ যিনি আত্মস্বীকৃত মাদক ব্যবসায়ী। নাস্তিকরা যেখানে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলছে সেখানে নাম দেখে কেন অযথা ধর্ম পরিচয় বের করতে চাচ্ছেন। একটা নাস্তিকের নাম মোহাম্মদ হলেই কি, রাম হলেই কি অথবা যীশু হলেই কি - সে নাস্তিক এইটাই বড় কথা। অথচ আপনার মতো আরেকজন সেই নাম নিয়েই কমেন্ট করে বসলেন।
ক্র্যাক প্লাটুন বলেছেন: "প্রথম দিকে আমিও কনফিউজড হইছিলাম। আবার দেখি সব নাস্তিকের ব্লগ নাম গুলা মুসলিম !!!!
নাস্তিক হলে তো নাম চেন্জ করার কথা সবচেয়ে আগে। তাও আবার ব্লগ করতে আসলে অন্তত মুসলিম নাম টা ইউজ আর ইউজ করার কথা না।"
ক্র্যাক প্লাটুন নামের মধ্যে ধর্ম পরিচয় যদি খুঁজতে চান তবে আপনাকে জানতে হবে আব্দুল্লাহ, মুহাম্মদ, খাদিজা, আলী, উমর, উসমান ইত্যাদি নামগুলো ইসলামের আবিস্কার অথবা রেজিস্ট্রি করা নাম নয়। ইসলাম প্রচারের অনেক আগেই এই নামগুলো ছিল এবং তারা নতুন ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করার পরও নাম পরিবর্তন করে নাই। তবে প্রশঙ্গক্রমে বলতে পারি (যদিও অফ টপিক), নাম দিয়ে ধর্ম পরিচয় বের করার চেয়ে ভৌগলিক অবস্থান বের করার ব্যাপরটি বেশি পরিধাণযোগ্য। আমাদের বাঙালীদের জাত্তাভিমান কম থাকায় বাঙালী মুসলমানরা আরবের নাম আর বাঙালী খ্রীস্টানরা পাশ্চাত্যের নামগুলো মূর্খ্যের মতো গ্রহণ করেছিলাম। তবে এখন অনেক শিক্ষিত বাঙালীরা তাদের সন্তানের বাঙলা নাম রাখছে। এইটা আশাব্যঞ্জক।
পোষ্টে অবধারিত মাইনাস।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




