somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রমজানে ডায়বেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী রোজাদারকে শেষরাত হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা কোনো প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। সন্ধ্যা হতে শেষরাতের মাঝে ইফতারি, রাতের খাবার ও সেহরি গ্রহণ করতে হয়। এতে অনেক ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে না। রাত্রিকালে কম সময়ের মধ্যে বেশি খাবার গ্রহণের ফলে রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং দিনের ভাগে বিশেষ করে বিকেলে ইফতারি গ্রহণের আগে রক্তের গ্লুকোজ কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো মারাত্নক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্যই রোজার সময় কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে রোজার আগে থেকেই সে বিষয়গুলো রোগীদের জানা প্রয়োজন।

রোজা পালনে ঝুঁকি আছে যাদের

টাইপ ১ ডায়াবেটিক রোগী, ডায়াবেটিক গর্ভবতী ও দিনে তিন বা চারবার ইনসুলিন গ্রহণকারী। এ ছাড়া যাদের গত তিন মাসের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়া) এবং ডায়াবেটিস কোমায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের ঝুঁকি থেকেই যায়। যাঁদের বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার ইতিহাস আছে, যাঁরা হাইপোগ্লাইসেমিয়া-অসচেতন রোগী, যাঁদের রক্তে সুগার একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত, যাঁরা যকৃত, কিডনি, হূদ্যন্ত্র ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত, ডায়ালাইসিস করছেন, এমন রোগী, অত্যধিক বয়স্ক রোগী ;; ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় আরো পড়েন ইনসুলিন ও সালফোনিলইউরিয়া ওষুধ ব্যবহারকারীরা।
রমজানের দুই থেকে তিন মাস আগে একটি সম্পূর্ণ চেকআপ করিয়ে নিন। এ সময় রক্তের সুগার, সুগারের গড় মাত্রা বা এইচবিএওয়ানসি, কিডনি ও লিভার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। এসব পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে আসন্ন রোজা পালনের পরিকল্পনা নিন।

রমজানের খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম

একজন ডায়াবেটিসের রোগী রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করতেন, রমজান মাসেও তার হেরফের হবে না, কেবল এর সময়সূচি ও উপাদান পরিবর্তিত হতে পারে। ইফতারির সময় ও পরে হঠাৎ করে বেশি পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ না করা, চিনি, মিষ্টি ও ভাজাপোড়া খাবার থেকে বিরত থাকা এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাসের মাধ্যমে এ সময় অনেকটাই সুস্থ থাকা যায়। রক্তে দ্রুত সুগার বাড়ায় না, এমন খাবারকে লো গ্লাইসেমিক ফুড বলা হয়ে থাকে। এর মধ্যে পড়ে লাল আটা, লাল চালের ভাত, গোটা শস্য, শস্যবীজ ইত্যাদি। রোজার মাসে এসব খাবারের পরিমিত গ্রহণ রক্তে সুগারের মাত্রা দীর্ঘক্ষণ ধরে সুষম রাখতে সাহায্য করবে। হাই ক্যালরি ও হাই গ্লাইসেমিক ফুড যত সুস্বাদু ও মুখরোচকই হোক না কেন, যেমন জিলাপি, লাড্ডু, শরবত, হালুয়া, কেক, আলুনি, সফট ড্রিংক ইত্যাদি থেকে বিরত থাকুন। বেশি পরিমাণে তেল আছে এমন খাবার, যেমন—কাবাব, বেগুনি, পেঁয়াজু বা ভাজাপোড়ায় কেবল ওজনই বাড়াবে না, রক্তে চর্বি বাড়িয়ে দেবে, পেটে বদহজম ও গ্যাস সৃষ্টি করবে। রোজা রাখলে সূর্যাস্তের পর অন্তত তিনবার খাদ্য গ্রহণ করুন। ইফতারির সময় সুষম ও পুষ্টিকর পরিমিত আহার, রাত ১০টার দিকে রুটি বা হালকা ডিনার এবং অবশ্যই শেষ রাতে ভাত বা রুটিসহযোগে যথেষ্ট পরিমাণে আমিষ ও তরল খাদ্য গ্রহণ করুন। সেহিরি না খেয়ে কোনো অবস্থাতেই রোজা রাখা উচিত নয়। রোজা রেখে দিনের বেলা অতিরিক্ত পরিশ্রম ও ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে রক্তে সুগার হঠাৎ কমে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। সন্ধ্যার পর হালকা ব্যায়াম বা আধা ঘণ্টা হাঁটা যেতে পারে। যাঁরা নিয়মিত দীর্ঘ ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়ে থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটিই ব্যায়ামের বিকল্প, আলাদা করে ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই।

ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা ও সময়

রমজান মাসে ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা ও সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়। সোজা নিয়মে সকালের ডোজটি দেওয়া হয় ইফতারির সময় এবং রাতের ডোজটি অর্ধেক করে শেষ রাতে দেওয়া হয়।
ওষুধের মাত্রার এই পরিবর্তন অনেকটাই রক্তে শর্করার পরিমাণ উঠা-নামার ওপর নির্ভর করবে। তাই রক্তে শর্করা পরিমাপ করুন ও চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২২
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×