বিকেলে বের হয়েছিলাম লাইব্রেরীতে যাব বলে। গলির মুখে ‘অ’ ভাই’র সাথে দেখা। ভাইয়া কাজ শেষে ঘরে ফিরছেন। আমাকে দূর থেকে দেখে তড়িঘড়ি করে হাত লুকালেন পিছনে। খেয়াল করলাম ওনার হাতে কী যেন। কিন্তু আমাকে দেখে লুকালেন কেনো?... কাছাকাছি হলে সালাম দিলাম।
‘ওয়ালাইকুম সালাম, ইয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে?’
ভাইয়া’র মজার বিষয় হলো ওনি ভাববাচ্যে কথা বলেন।
‘এইতো ভাইয়া, লাইব্রেরীতে। কিন্তু আগে বলেন, আপনি আমাকে দেখে হাত পিছনে লুকালেন কেনো?’
ধরা খেয়ে এইবার দেখি ওনি আমতা আমতা করছেন, ‘কই, নাতো!’ বলতে বলতে হাত আরো পিছনে নিতে চেষ্টা করেন।
আমিও ছাড়ার পাত্র না। চেপে ধরলাম, ‘হাতে কী আছে দেখাতেই হবে, নাহলে আপনার পিছনে পিছনে কিন্তু এখন বাসায় চলে যাবো!’
ধরা খেয়ে ইতস্ততঃ করে হাত সামনে আনলেন, ছোট্ট দুটো গোলাপ, একটা লাল আরেকটা হলুদ। এখনো ভালো করে পাঁপড়ি মেলেনি, দেখতে তাই দারুন লাগছে।
হিহিহি করে হেসে উঠলাম, ‘ভাবীর জন্যে বুঝি!’
ভাইয়া আরো লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি বললেন, ‘আরে না, এই আসার সময় চোখে পড়লো। ভাবলাম নিয়ে নেই’
রাস্তা ছেড়ে দিলাম। ভাইয়া তড়িঘড়ি চলে গেলেন। আনমনে হাসলাম। মানুষের এইসব ছোট ছোট অনুভূতি আমার কাছে বেশ লাগে। আমি জানি, ভাবী এখন একটু আগেই কলেজ থেকে ফিরেছেন। এতক্ষনে চুলোয় রান্নাও চাপিয়ে দিয়েছেন শিউর। ভাইয়া কলিংবেল দিবেন, ভাবী হয়তো হাতে রান্নার ডাল নাড়ার চামচ নিয়ে দরজা খুলবেন। ভাইয়া গোলাপ দু’টো এগিয়ে দিলে ভাবী নিশ্চয়ই ডালের চামচ হাতে থতমত খেয়ে যাবেন!
দৃশ্যটা কল্পনা করে ফিক করে হেসে ফেলি। উপ্স, আশেপাশের মানুষ দেখি অবাক হয়ে আমার দিকে দেখছে! তাড়াতাড়ি হাসিটাকে হজম করে দ্রুত হাঁটা শুরু করি। আমাদের জীবনের এইসব ছোটখাটো অনুভূতিগুলো আসলে চমৎকার!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



