জীবনে বলাকা সিনেমা হলে একটাই সিনেমা দেখিছি আর সেটা ছিল অনন্ত জলিলের সিনেমা। মধুমিতায় প্রথম সিনেমা দেখি ১৯৯৮ সালে যখন তারা টাইটানিক সিনেমা নিয়ে এসছিলো। এরপর ২০০১ এর দিকে বন্ধুদের নিয়ে দেখেছিলাম ডেসপারাডো। সিনেমা হলে গিয়ে যে সিনেমা দেখবো সেটা কখনো চিন্তাই করতাম না। সিনেমা হলগুলোর যে মান কোন্ সিনেমা হলে যাবো, কি সিনেমা দেখবো?
সেই ধারনাটাই পাল্টে দিয়েছিল স্টার সিনেপ্লেক্স। কতো সিনেমা যে দেখিছি তার হিসেব নেই। নতুন নতুন ছবি প্রদর্শনের জন্য সিনেপ্লেক্স ছিল সিনেমা পাগলদের জন্য পছন্দের জায়গা। আর পরিবেশটাও ছিল চমৎকার। হলগুলোর পাশেই ছিল ফুড কোর্ট। সিনেপ্লেক্সের কারণেই কিন্তু খাবারের দোকানগুলোর ব্যবসা ছিল রমরমা। সুতরাং বলা যেতেই পারে যে সিনেপ্লেক্সের সাথে ফুড ব্যবসাগুলোও ছিল অতপ্রতভাবে জড়িত।
আমি যেহেতু সিনেমা পাগল আমার মতো আমার কয়েকজন বন্ধুও রয়েছে যারাও বেশ সিনেমা পাগল। আমারতো এখনো মনে পড়ে যে সিনেমা দেখার পর আমরা বন্ধুরা যেকোনো একটি খাবার দোকানে বসতাম, খাবার খেতাম ও সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতাম। আমরা ফ্রেন্ডরা সিনেমা দেখতাম তারপর সেটার আবার সিনেমা রিভিউ করে ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়তাম। কতো শতশত সিনেমা যে দেখেছি স্টার সিনেপ্লেক্সে তার কোনো হিসেব নেই। এমনও সময় গিয়েছে প্রতি সপ্তাহে একটা করে সিনেমা দেখেছি। আবার দিনে দুইটা করেও সিনেমা দেখেছি। এই স্টার সিনেপ্লেক্সটা আমার বেশ পছন্দের একটা জায়গা ছিল।
আমেরিকায় আসার পরেও এখানকার সিনেমা হলে বেশ কয়েকবার সিনেমা দেখেছি। সত্যি কথা বলতে কি, আমার কাছে আমাদের ঐ স্টার সিনেপ্লেক্সটাই পছন্দের। আমার কাছে এই স্টার সিনেপ্লেক্সের সবচেয়ে বড় স্মৃতি ছিল ২০১৩ সালে পরিবারের সকলকে নিয়ে, অর্থাৎ, আব্বা, আম্মা, বোনরা, বউ, বাচ্চা মিলে Life of Pi সিনেমাটা দেখা।
হাজারো স্মৃতি বিজড়িত এই স্টার সিনেপ্লেক্স শুনলাম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। কিছুই বলার নেই। চোখের সামনে শুধু ভাসবে স্মৃতিগুলো।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৫