somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউনূস বিতর্কের নেপথ্যে

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নোবেলজয়ী ইউনূসকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। নিন্দার ভাষায় সংযম হারিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নিন্দাবাদে শরিক হয়েছেন। তদন্তের আগে রায় দেয়ার মতো এমন আচরণ পৃথিবীতে নজিরবিহীন। কোনো মানুষ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। নোবেলজয়ী হলেই মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যান না। আলোচনা-সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু একজন সম্মানিত মানুষকে অসম্মান করার আগে সাতপাঁচ ভাবব না কেন? শব্দ চয়নেই বা সতর্ক থাকব না কেন?নোবেলজয়ী ইউনূস, নোবেল কমিটি, নোবেলদাতা, অতীতের নোবেলপ্রাপ্তরা কেউ আলোচনা-সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকবেন সেটাও আমাদের বক্তব্য নয়। গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র্য বিমোচনে কী ভূমিকা পালন করছে সে নিয়ে বিতর্ক পুরনো। দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। আমরা চেয়েছি প্রায়োগিক ও একাডেমিক আলোচনা হোক। যারা আমাদের নীতিগত আলোচনাকে ‘পশ্চাৎপদ চিন্তা’ বলেছিলেন, তারাই এখন তুখোড় সমালোচক সেজেছেন। আমরা মনে করি, এখনো সেটি আলোচনার বিষয় হতে পারে। কেউ দারিদ্র্য নিয়ে ব্যবসায় মেতেছেন কি না সেটাও আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত। কিন্তু যে অস্বচ্ছ ও অসুস্খ আলোচনা চলছে তাতে পুরো বিষয়টি সংযমের মাত্রা ও সীমা অতিক্রম করেছে বলেই মনে হয়। গ্রামীণ ব্যাংক, ইউনূস এবং তার কোনো উদ্যোগকেই সমালোচনার বাইরে রাখার কথা বলছি না। বলছি সমালোচনা ও নিন্দাবাদের ভাষা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় দেশের একজন কৃতী সন্তানকে নিয়ে বিদ্রূপ করলেন তাতে আমাদের সম্মান রইল কোথায়? বিশ্ববাসীর কাছে মুখ দেখানোর মতো অবস্খা আছে কি? ভাবখানা এমন নোবেল কমিটি ইউনূসকে নোবেল দিয়ে ভুলই করল, নোবেলটা দেয়ার দরকার ছিল অন্য কোনো ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকে। ছাত্রলীগের বক্তব্য ও মিছিল দেখে আমাদের অন্তত তা-ই মনে হয়েছে।বাংলাদেশের একজন কৃতী সন্তান নোবেল পেয়েছেন। এর সাথে দেশ-জাতির মান ইজ্জত জড়িয়ে গেছে। এখন একটি গোষ্ঠী যেভাবে ওপরের দিকে থুথু ছিটাচ্ছে এবং নোবেল প্রত্যাহার করে নেয়ার যে আবদার ধরেছে, তাতে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের মতো কাণ্ডই ঘটছে। এমনিতেই আমাদের দেউলে ভাব, অপশাসন, দু:শাসন, দুর্নীতির পাপ মোচন হচ্ছে না। বিদেশীদের কাছে ভাবমর্যাদা বারবার নষ্ট হচ্ছে। তার ওপর ইউনূসকে নিয়ে যেভাবে নষ্টামি শুরু করা হয়েছে তাতে দেশে-বিদেশে আমাদের চোখ তুলে তাকানোর সুযোগ থাকছে কই!ইউনূসকে আগলে রাখার কথা ওঠেনি, তাকে মাথায় তুলে নাচার প্রশ্নও নয়; কিন্তু তাকে ডোবানোর সাথে নিজেদের মানইজ্জত নষ্টের এই অতি উৎসাহ অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ডক্টর ইউনূস কি বর্তমান মহাজোট সরকারের ইমেজ ফুটো করে দেয়ার মতো কোনো কাজ করেছেন বা ইউনূসের ‘বন্ধু’ মার্কিন লবি কি কোনো কারণে সরকারের ওপর বিগড়ে আছে, যার জন্য অভদ্র ভাষায় ইউনূসকে দায়ী করা হচ্ছে, না ইউনূসের কারণে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর বাড়া ভাতে ছাই পড়েছে? এমনো কি হতে পারে ইউনূস যে ‘সামাজিক ব্যবসা’ করছেন তার শেয়ার চাচ্ছেন কোনো জাঁদরেল লোক, না ব্যবসাটা হাতিয়ে নেয়ার মতো কোনো বদ নিয়ত কাজ করছে পুরো পরশ্রীকাতরতার এ ইস্যুটিতে।বাঙালি মুসলমান জাগুক এটা অনেকেই চায় না। সম্মান পাক এটা অনেকের সহ্য হয় না। এ ধরনের কোনো বাতিক যদি ইউনূস বিদ্বেষের সাথে সক্রিয় থাকে তাহলে জাতিকে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। ইউনূস নিয়ে আলোচনার একটা বাতাবরণ লক্ষ করেছি গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। সেটাই কি তার কাল হলো? না বাংলাদেশে কেউ কাউকে ডিঙিয়ে যেতে দিতে নারাজ হওয়ার যে প্রবাদ-প্রবচন চালু আছে তার শিকার হলেন ডক্টর ইউনূস।পুরো বিষয়টির মধ্যে বাড়াবাড়ি, অতি উৎসাহ, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা ওযুক্তিহীন নিন্দাবাদের গìধ পাচ্ছি। এর ভেতর ঔচিত্যবোধেরও অভাব লক্ষণীয়। অর্থমন্ত্রী একটা আপসরফার বক্তব্য দেয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে জাতি শুধু বিব্রত হয়নি, বিচলিতও।

মূল লেখকঃ মাসুদ মজুমদার।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×