somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুয়েট প্রশাসন সমীপেষূ.....

২০ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কতটুকু বাজে হতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরন দেশের কথিত শ্রেষ্ঠ প্রকৌশল বিদ্যাপীঠ বুয়েট। কথিত বলছি এইজন্য যে, কেবলমাত্র পাবলিক পরিক্ষায় ভাল ফল করা শিক্ষার্থী আর নাম সর্বস্ব শিক্ষক দিয়েই কোন প্রতিষ্ঠানের মান যাচাই করা উচিত নয়; সময়মত ক্লাশ ও পরিক্ষা শুরু এবং শেষ করার যোগ্যতা, মৌলিক গবেষনার যথেষ্ঠ সুযোগ সুবিধা, ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক চরিত্র গঠনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি- এই বিষয়গুলোও Academic Excellence এর মাপকাঠি যার সবকটিতেই সাম্প্রতিককালে বুয়েট কৃতিত্বের(!) সাথে ফেল মেরেছে।
অন্য সকল নামজাদা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নতুন বছরের ক্লাশ বহু আগেই শুরু করতে পেরেছে, এমনকি কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের প্রথম সেমিস্টার পরিক্ষার নিকটবর্তি সেখানে বুয়েট তাদের বার্ষিক পরিকল্পনা প্রকাশ করল মাত্র সেদিন তাতে আবার ক্লাশ শুরুর তারিখ এপ্রিলের মাঝামাঝি!০৯ ব্যাচ এর ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে (১৫-৩০ অক্টবরের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা ও ফল প্রদান)। সেই ব্যাচ ২০১২ সালের চলমান মার্চ মাস পর্যন্ত ৩টি মাত্র সেমিস্টার শেষ করতে পেরেছে। একই ধরনের সেশন জটের শিকার চলমান অন্য সকল ব্যাচের শিক্ষার্থিরাও। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কিভাবে বুয়েটকে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বলা যেতে পারে? বরং একে বলা উচিত-“পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মেধা ধ্বংসকারী প্রতিষ্ঠান।”
আমরা জানি, কেবল প্রসাশনিক দুর্বলতাই পরিক্ষা পেছানো সহ অন্যান্য অনিয়মের একমাত্র কারন নয়; বরং সম্প্রতিককালে ফ্যাকাল্টিভিত্তিক আলাদা পরীক্ষা অনুষ্ঠানের চেষ্টা সহ প্রশাসন বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কতিপয় কুলাঙ্গার এবং ছাত্রনামধারী মাথামোটা দলবাজ ছেলে ছোকরার অন্যায় দাবির মুখে সবকিছু ভেস্তে যায়। সাধারন ছাত্রদের একটা নীরব সমর্থন পুরো প্রক্রিয়াটিতে ছিল; কেননা তারা ভেবেছিল বড় সিলেবাসের পরীক্ষায় কয়েকটা দিন বেশী সময় পেলে ক্ষতি কি?তাদের মন-মস্তিষ্ক অতিত কর্মকাণ্ডে অপচয়কৃত সময়ের একটা ক্ষতিপূরণ দাবী করছিল তাই ভবিষ্যত নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথাই ছিল না। “নগদপ্রাপ্তির চিন্তা মানুষকে ভবিষ্যত সম্পর্কে উদাসীন করে দেয়” – বুয়েটের সাধারন শিক্ষার্থীরাও এর ব্যতিক্রম নয়। পরিক্ষা পেছানোর নাজায়েজ সংস্কৃতিকে লালনের মাধ্যমে যারা বুয়েটকে পঙ্গু করে দিতে চায় এবং বারবার প্রশাসনকে পদানত করে চলেছে তাদেরকে সনাক্ত করে কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তির বিধান করতে হবে যাতে করে তারা সাধারন ছাত্রদের ভাগ্য নিয়ে যাচ্ছেতাই করতে না পারে।
এটা খুবই দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত যে চার বছরের কোর্স শেষ করতে ৬-৭ বছর সময় লেগে যাচ্ছে। বুয়েট এর সুনামের সাথে তা কোনভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেই Reputation এর কারনে BUETian রা ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে সন্মানজনকভাবে কাজ করে পেশাগত সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছেন, প্রশাসনিক দূর্বলতা এবং ছাত্রদের উদাসীনতা এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই এই Reputation ধূলিস্যাত হয়ে যাবে। কেননা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বসে নেই। মেধার ঘাটতি যদি তাদের থাকেও, কর্মোদ্যোগ দিয়ে তারা পুষিয়ে নিচ্ছে। তাই প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে মেধা ও প্রশাসনিক যোগ্যতার সমন্বয় ঘটানোর কোন বিকল্প নেই।
এই সমন্বয় সাধনে বুয়েট প্রশাসনকে নিজেদের মধ্যে নিয়মতান্রিক চর্চা করতে হবে এবং বাস্তবে তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে কোন প্রকার অন্যায্য চাপের কাছে মাথা নত না করে। এক্ষত্রে সাধারন ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যারা মনে প্রাণে চায় পরীক্ষা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হোক কিন্তু রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয় পাওয়া ছাত্রনামধারি সন্ত্রাসিদের চাপে আওয়াজ উঠাতে ভয় পান। আপনাদেরকে সংগঠিত হতে হবে এবং এই অন্যায় দাবিনামার বাহক, দলীয় মোহরযুক্ত কুলাঙ্গার গুলোকে কোনভাবেই প্রশ্রয় বা সমর্থন দেয়া চলবে না। মনে রাখতে হবে আমাদের নিরবতাও এদের প্রতি সমর্থনেরই নামান্তর।
বুয়েট ফিরে পাক তার অতীত গৌরব। আমাদের গবেষনার ক্ষেত্র হোক প্রশস্ত আর আন্তর্জাতিক মানের- এই কামনা করি।
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×